Chaitra Navratri 2024 in Bengali: গুপ্ত নবরাত্রিকে হিসেবে ধরলে বর্তমানে বছরের চতুর্থ নবরাত্রি চলছে। বুধবার ১০ এপ্রিল, চতুর্থ নবরাত্রির দ্বিতীয় দিন। এই দিনে দেবী ব্রহ্মচারিণীর পূজা করা হয়। এই রূপে দেবী মহামায়া দেবী সরস্বতী বা সর্ববিদ্যার দেবী রূপে অধিষ্ঠিতা। মহাবিশ্বের স্রষ্টা প্রজাপিতা ব্রহ্মা। তাঁর শক্তির রূপ হলেন ব্রহ্মচারিণী। তিনি ব্রহ্মাণ্ডের জন্মদাত্রী।
জগৎ সৃষ্টির দেবী
পুরাণ অনুযায়ী, প্রজাপিতা ব্রহ্মা জগৎ সৃষ্টি করার পরও তার বিস্তার ঘটাতে পারছিলেন না। সেই সময় তিনি মহাদেবকে প্রশ্ন করেছিলেন, কেন এমন হচ্ছে? জবাবে মহাদেব জানিয়েছিলেন, দেবীর শক্তি ছাড়া সৃষ্টির বিস্তার অসম্ভব। তারপরই প্রজাপিতা ব্রহ্মা দেবীর শরণ নেন। আর, দেবী সৃষ্টিকে প্রসারিত করেন। সেই হিসেবে তিনি হলেন জগন্মাতা। শাস্ত্র অনুযায়ী, প্রতিটি শিশু তার মা-বাবার থেকে ৪২টি গুণ পায়। যার মধ্যে ৩৬টি গুণকে মায়ের থেকে পাওয়া বলে মনে করা হয়।
দেবী ব্রহ্মচারিণীর রূপ
ব্রহ্মা মানেই তপস্যা। আর, চারিণী হলেন মাতা। অর্থাৎ যিনি তপস্যা করেন। এই রূপে দেবী সংযত এবং তপস্যার তাপে নিমজ্জিত। তাঁর মুখের ওপর বিরাজিত তপস্যার আভা। দেবী ব্রহ্মচারিণীর ডান হাতে তপস্যার মালা। বাম হাতে কমণ্ডলু। দেবীর অন্যান্য নাম হল- তাপসচারিণী, অপর্ণা ও উমা। সাধক দেবীর এই রূপকে স্বাধিষ্ঠান চক্রে দর্শন করে থাকে। শাস্ত্র অনুযায়ী, সাধক তপস্যায় সফল হলে দেবী ব্রহ্মচারিণীর কৃপালাভ করেন। আর, দেবীর দান হিসেবে ভক্তিলাভ করে থাকেন।
Maa Brahmacharini Katha: অন্য পুরাণ মতে, হিমালয়-কন্যা উমার ব্রহ্মচারিণী হয়ে ওঠা
পর্বতরাজ হিমালয় ও তাঁর পত্নী মৈনা বা মেনকার কন্যা উমা। দেবর্ষি নারদের কথায়, উমা ভগবান শংকরকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য কঠোর তপস্যা করেছিলেন। সেই তপস্যায় তুষ্ট হয়ে ভগবান ব্রহ্মা তাঁকে মহাদেবের স্ত্রী হওয়ার বর দান করেছিলেন। এই রূপে দেবী আধ্যাত্মিক কামনা পূরণ করেন। দেবীর আরাধনা করলে সিদ্ধিলাভ হয়। ব্যক্তির ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্ৰিত হয়। সাধক মোক্ষলাভ করেন। অন্ততপক্ষে পঞ্চোপচারে এই দেবীর বিগ্রহে পূজা করতে হয়। সাধনা সফল হয় সাধকের কুন্ডলিনী শক্তি জাগ্রত হয়। এই পূজায় সফল হলে সাধক সুখে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেন। তিনি সুস্বাস্থ্য লাভ করেন। তিনি সুখী হন। তাঁর, কোনও ভয় থাকে না।
আরও পড়ুন- চৈত্র নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে পূজিতা হন দেবী ব্রহ্মচারিণী, জানুন তাঁর মাহাত্ম্য কথা
Maa Brahmacharini Puja Vidhi: পূজা পদ্ধতি
দেবী ব্রহ্মচারিণীর পূজার নিয়ম হল, প্রথমে সব দেবী, গণ ও যোগিনীদেরকে ঘটের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানাতে হয়। সঙ্গে শিবেরও পূজা করতে হয়। তারপর পূজাপদ্ধতির নিয়ম অনুযায়ী- নবগ্রহ, দশদিকপালদের পূজা করতে হয়। দেবীর পূজা করার সময় ফুল হাতে নিয়ে প্রার্থনা করতে হয়- 'দধন কার্পদ্মভ্যামক্ষমালাকমণ্ডলু, দেবী প্রসিদাতু ময়ি ব্রহ্মচারিণ্যনুত্তমা।'
Maa Brahmacharini Bhog: দেবীর ভোগ
দেবীকে ফুল, ধূপ, দীপ, চন্দন, দুধ, দই, চিনি, ঘি, মধু, পান, সুপারি ইত্যাদি দিয়ে পঞ্চোপচারে পূজা করতে হয়।
Maa Brahmacharini Mantra: দেবী ব্রহ্মচারিণী মন্ত্র
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা ব্রহ্মচারিণী রূপেন সংস্থিতা।
নমো নমো নমো নমো নমো নমো:।।
দধাননা কর পদ্মভ্যাম অক্ষমালা কমন্ডালু।
দেবী প্রসিদাতু মে ব্রহ্মচারিনিয়ানুত্তমা।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা ব্রহ্মচারিণী রূপেন সংস্থিতা।
নমোস্তস্যৈ নমোস্তস্যৈ নমোস্তস্যৈ নমো নমঃ।।