Chaitra Navratri 2024 in Bengali: চৈত্র এবং আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে নবরাত্রির তৃতীয় দিনে দেবী পার্বতীর চন্দ্রঘণ্টা রূপের আরাধনা করা হয়। দেবী পার্বতীর নবদুর্গা রূপের মধ্যে তৃতীয় রূপ হলেন, দেবী চন্দ্রঘণ্টা। এই রূপে শিবের সঙ্গে দেবী পার্বতী বিয়ে করেছিলেন। পুরাণ অনুযায়ী, ভগবান শিবের ছাইমাখা ভয়ংকর রূপ দেখে দেবী মেনকা মূর্চ্ছিত হয়ে পড়েন। এরপর মেনকা ভয়ংকররূপ ধারণকারী শিবের সঙ্গে নিজের মেয়ে পার্বতীর বিয়ে দিতে অস্বীকার করেন। তারপরই দেবতাদের অনুরোধে ভগবান শিব এক পরমসুন্দর রূপ ধারণ করেন। যা দেখে, মেনকা আনন্দিত হয়ে শিবের সঙ্গে পার্বতীর বিয়েতে সম্মতি দেন।
Maa Chandraghanta Katha: দেবী চন্দ্রঘণ্টার কাহিনি
এই শিবরূপের সঙ্গে বিয়ের সময় দেবী পার্বতী চন্দ্রঘণ্টা রূপে সজ্জিত হয়ে সামনে এসেছিলেন। সেই কারণে দেবীর নাম চন্দ্রঘণ্টা। এই রূপে দেবী পার্বতী তেজস্বিনী, পরম শক্তিময়ী এবং অসুরদলনী। তাঁর কপালের তৃতীয় নেত্র সর্বদা খোলা থাকে। দেবী, রণচণ্ডী নামেও খ্যাত। দেবী চন্দ্রঘণ্টা সিংহবাহিনী। তিনি দশভুজা। দশপ্রহরণধারিণী। তাঁর দেহের রং সোনার মত উজ্জ্বল। পরনে লালরঙের শাড়ি। দেবী নানা অলংকারে সজ্জিতা। দেবী চন্দ্রঘণ্টা শুক্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তিনি অশুভের বিনাশকারিণী, তেজস্বরূপা, পরমাশক্তি, করুণা, ন্যায় এবং পরমার্থের শান্তিদায়িনী। এই রূপে দেবীকে আরাধনা করলে সমস্ত অশুভ শক্তির প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভবপর হয়।
কাশীর লক্ষ্মী চৌতারার চন্দুনাউয়ের গলিতে দেবী চন্দ্রঘণ্টার মন্দির আছে। মন্দিরটিও বেশি বড় নয়। দেবী বিগ্রহের উচ্চতা একহাত। দেবীর বিগ্রহের কাছে আছে একটি বড় মাপের ঘণ্টা। এই মন্দিরে দেবী চন্দ্রঘণ্টাকে পিছন থেকে ঘিরে আছে নবদুর্গার অন্য দেবীরূপের আটটি ছোট বিগ্রহ। দেবীর মস্তকে ঘণ্টার আকারবিশিষ্ট একটি অর্ধ্বচন্দ্র শোভা পায়। দেবী ‘চন্দ্রঘণ্টা’র পাশাপাশি ‘চণ্ডঘণ্টা’ বা ‘চিত্রঘণ্টা’ নামেও পরিচিতা। দেবী চন্দ্রঘণ্টা সিংহবাহিনী হলেও কাশীর মন্দিরে তিনি ব্যাঘ্রবাহিনী। কাশীর প্রচলিত প্রবাদ অনুযায়ী, দেবী চণ্ডঘণ্টার পূজা করে তাঁকে প্রসন্ন করতে পারলে যমঘণ্টার (যমের বাহন মহিষের গলায় বাঁধা ঘণ্টা) ধ্বনি সাধককে আর ভয় দেখাতে পারে না। দেবীর কৃপায় মহাপাতকীও পাপ থেকে উদ্ধার পান।
Maa Chandraghanta Bhog: দেবী চন্দ্রঘণ্টার ভোগ
দেবী চন্দ্রঘণ্টার উপাসনা করলে ভক্তরা দীর্ঘজীবন, আরোগ্য, সুখী জীবন যাপন করার আশীর্বাদ পান। দেবী ভগবতীর অভয়ে জীবনের সমস্ত দুঃখ-যন্ত্রণা দূর হয়ে পরমআনন্দ এবং শান্তি লাভ হয়। নবরাত্রির তৃতীয় দিন দেবীকে বিশুদ্ধ চিত্তে স্মরণ করে কুলকুণ্ডলিনীর মনিপুর চক্রে মনোনিবেশ করতে হয়। দেবীকে জবার মালা অর্পণ করে রক্তচন্দন, বেলপাতা, লাল ফুল দিয়ে অর্চনা করা হয়। নৈবেদ্য হিসেবে দেবীকে দুধ, মিষ্টি ও ক্ষীর অর্পণ করতে হয়।
Maa Chandraghanta Mantra: দেবী চন্দ্রঘণ্টার মন্ত্র
পিণ্ডজাপ্রবরারূঢ়া চন্দ্রকৌপাস্ত্রকৈরুতাম্
প্রসাদাং তনুতে মহা চন্দ্রঘণ্টেতি বিস্রুতাম্।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা চন্দ্রঘণ্টা রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমোঃ।।
আরও পড়ুন- দূর হয় যাবতীয় দুঃষ্টকষ্ট, লেখাপড়ার বাধা, কীভাবে তুষ্ট করা যায় দেবী ব্রহ্মচারিণীকে?