দুর্নীতি ইস্যুতে বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে সরকার মুক্তি পাবে, তা নিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য সরকার। একটা অভিযোগ শেষ হতে না-হতেই ধেয়ে আসছে আরেক দুর্নীতির অভিযোগ। কিন্তু, এই অবস্থা থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব রাজ্য সরকারের। সেই জন্য নির্দিষ্ট পন্থা বা রাস্তা সরকারের নেওয়া জরুরি।
Advertisment
প্রশ্ন হচ্ছে কী সেই নীতি? সেই নীতিতে রাজ্য সরকারকে প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে, রাজা বা সরকার যদি কোনও মূর্খকে কাজে নিযুক্ত করেন, তবে অখ্যাতি, আর্থিক ক্ষতি সরকারকে ভুগতেই হবে। কারণ, যে কাজে যে ব্যক্তি উপযুক্ত, তাঁকে সেই দায়িত্বই দেওয়া উচিত। অযোগ্য কাউকে দায়িত্ব দিলে সেই দায়িত্ব কোনওমতেই সঠিকভাবে পালিত হতে পারে না।
বিষয়টি অনেকদিন আগেই বলে গিয়েছেন কৌটিল্য চাণক্য। তাঁর ব্যাপারে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্তকে প্রায় পথের ধুলো থেকে কুড়িয়ে এনে এই ব্রাহ্মণ পণ্ডিত শিক্ষা দিয়েছিলেন। বসিয়েছিলেন সিংহাসনে। ভারতবর্ষকে উপহার দিয়েছিলেন এক শক্তিশালী সাম্রাজ্য। যাকে ইতিহাস মৌর্য সাম্রাজ্য নামে জানে।
এরাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয় পরিস্থিতির কথা চিন্তা করেই চাণক্য তাঁর নীতিশাস্ত্রে বলে গিয়েছেন, রাজার কাজ হল রাজ্য পালন করা। প্রজাপালনের জন্য রাজাকে বিভিন্ন দফতরে উপযুক্ত ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে স্বজনপোষণ, দুর্নীতি বা অন্য কোনও রাস্তা গ্রহণের উপায় নেই। সেটা যদি করা হয়, তবে সেই রাজার রাজ্য ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাবে। প্রথম তা বোঝা না-গেলেও, ধীরে ধীরে তা মালুম হবে।
এই ব্যাপারে চাণক্যের খোলাখুলি কথা যে, অদক্ষ ব্যক্তি কখনও রাজা বা সরকারের আশা পূরণ করতে পারে না। বর্তমান রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতির চেষ্টা করেছে। কিন্তু, সেই সব কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব যাদের দিয়েছেন, তাঁরা কি ওই সব কাজের যোগ্য? আর, এই বিষয়টাই যেন চাণক্য তাঁর নীতিকথায় বারবার প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।