যা করেছিলেন মহারাজা হরিং সিং
কাশ্মীর নিয়ে ব্রিটিশরা অন্যান্য দেশীয় রাজ্যের মত কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজা হরি সিং-কেও প্রস্তাব দিয়েছিল। তিনি কোন পক্ষে থাকবে তা জানতে চেয়েছিল। কিন্তু, মহারাজা সেই প্রস্তাব নিয়ে টালবাহানা করেছিলেন। তিনি স্বাধীন থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, পরে পাকিস্তানের হানাদারদের মুখে কার্যত ধনেপ্রাণে সর্বসান্ত হয়ে তবে, ভারতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মহারাজা হরি সিং। তিনি ব্রিটিশদের মাধ্যমেই শর্তসাপেক্ষে ভারতে যোগ দিলে, জল এতদূর গড়াত না।
আরও পড়ুন- জম্মু-কাশ্মীরের প্রকৃত বাসিন্দা কারা? ৩৭০ নিয়ে বিতর্ক খুঁচিয়ে তুলল আসল সত্য
যা করেছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু
তিনি সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কাশ্মীরে মহারাজার অনুরোধের পরও পরিস্থিতি দেখেও কার্যত হাত গুটিয়ে ছিলেন। কাশ্মীরে সেই সময় যে ধ্বংস হয়েছিল, তা আগেই রোধ করা যেত ভারতীয় সেনা পাঠালে। মহারাজা হরি সিং বাধ্য হয়ে নেহরুর কাছে সেই অনুরোধও করেছিলেন। কিন্তু, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী চুক্তি ছাড়া মহারাজার রাজ্যে সেনা পাঠাতে প্রথমে অস্বীকার করেছিলেন। তিনি মহারাজার অনুরোধ শুনে পরিস্থিতি বুঝে কাশ্মীরে সেনা পাঠালে, পাকিস্তান কিছুতেই কাশ্মীরের বিরাট অংশ দখল করে রাখতে পারত না।
আরও পড়ুন- মতাদর্শের লড়াইয়ে ফের জয় বিজেপির, এবার কী?
শেখ আবদুল্লা
কাশ্মীরে যখন হানাদাররা আক্রমণ করছে, সেই সময় শেখ আবদুল্লা কাশ্মীরের মোটামুটিভাবে স্বীকৃত নেতা হয়ে উঠেছেন। কিন্তু, প্রথমদিকে হানাদারদের বিরুদ্ধে মহারাজার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়াইয়ের বদলে তিনি ও তাঁর লোকজন কার্যত হানাদারদেরই পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। যার জেরে কাশ্মীরে পরবর্তী সময়ে বিভাজন সহজ হয়েছে। না-হলে, কাশ্মীর অভিন্ন থাকত।
আরও পড়ুন- ‘ভয় কেটেছে’: সুপ্রিমে ৩৭০ রায়ের পরই জম্মুর বাল্মীকি কলোনিতে শুরু জয় উদযাপন
যা বলেছিলেন চাণক্য
চাণক্য তাঁর নীতিশাস্ত্রে বলেছেন- 'যো ধ্রুবাণি পরিত্যজ্য হ্যধ্রুবাণি নিষেবতে, ধ্রুবাণি তস্য নশ্যন্তি চাধ্রুবং নষ্টমেব চ।' যার অর্থ, কোনও ব্যক্তি যদি নিশ্চিত কিছুকে পরিত্যাগ করে অনিশ্চয়তাকে গ্রহণ করেন, তবে তাঁর নিশ্চিত বিষয় নষ্ট তো হয়ই। পাশাপাশি, যা অনিশ্চিত সেই সম্ভাবনাও নষ্ট হয়ে যায়। কাশ্মীরের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, মহারাজা নিশ্চিতভাবে ভারতে যোগ দেওয়ার সুযোগ হারিয়েছিলেন। জওহরলাল নেহরু সময় থাকতে সুযোগ পেয়েও সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নষ্ট করেছিলেন। শেখ আবদুল্লারাও প্রথম হানাদারদের সঙ্গে অনিশ্চিত জীবনের দিকে ঝুঁকেছিলেন। পরে সংশোধিত হলেও তখন পরিস্থিতি হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল।