বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ সাধারণত অপরের মিষ্টি কথায় গলে যান। সবাই না-হলেও, এই সংখ্যাটা নেহাত কম না। এতে বহু মানুষের বিস্তর ক্ষতি হয়। এই ব্যাপারে তাই তাঁর নীতিশাস্ত্রে পইপই করে সাবধান করে দিয়ে গিয়েছেন কৌটিল্য চাণক্য। তিনি বলেছেন, 'দুর্জনঃ প্রিয়বাদী চ নৈতদ্ বিশ্বাসকারণম্। মধু তিষ্ঠতি জিহ্বাগ্রে হৃদয়ে তু হলাহলম।।'
যার অর্থ, সমাজে ভালো আর মন্দ- দুই ধরনেরই মানুষ আছেন। এর মধ্যে ভালো মানুষরা অত্যন্ত সুন্দর। তাঁর স্বাভাবিক ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে থাকেন। তাঁদের মধ্যে চাতুরি বা ছল করে কারও ক্ষতি করার মানসিকতা থাকে না। কিন্তু, সবাই এমনটা না। তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকে। তারা কিন্তু, অতিরিক্ত মিষ্টি কথা বলে মানুষকে বশ করে। নিজেদের বাহ্যিক ব্যবহার দিয়ে মানুষের মন জয় করে। পরে কিন্তু, এই সব মানুষরা সাধারণ মানুষদের প্রতারিত করে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ গুলিয়ে ফেলেন, কারা সত্যিই ভালো। আর কারা দুর্জন! আর, এসব কথা মাথায় রেখেই কৌটিল্য চাণক্য পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন, কেউ ভালো কথা বললেই তাঁকে বিশ্বাস করাটা ঠিক নয়। কোটিল্য জানিয়েছেন, কেউ ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করলে সব মানুষেরই আগে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে সতর্ক হওয়া উচিত। ওই ব্যক্তিকে কখনও নিজের দুর্বলতা জানতে দেওয়া উচিত নয়। কারণ, পরে সেই ব্যক্তিও দুর্জনের রূপ ধরতে পারেন।
আরও পড়ুন- ভিনরাজ্য-বিদেশ মানেই দুর্দান্ত জায়গা না, কোথায় রোজগার বাড়বে আগে বুঝুন, বলেছেন চাণক্য
তাই সবার আগে উচিত কোনও ব্যক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া। তারপরই তাঁকে বিশ্বাস করা উচিত। তাহলে, দুর্জনের কাছে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা কমবে। একইসঙ্গে চাণক্য পরামর্শ দিয়েছেন যে, কোনও ব্যক্তি দুর্জন বলে জানার পর মিষ্টি কথা শুনলেও তাঁকে বিশ্বাস করাটা উচিত হবে না। কারণ, দুর্জনের জিভের ডগাতেই কেবল মধু থাকে। অন্তরে কিন্তু, শুধু বিষই থাকে। তবে দুর্জনের ব্যাপারে সতর্ক থাকলেও, ভালো মানুষদের মনে যাতে আঘাত না-লাগে, সেই ব্যাপারেও সচেতন থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন কৌটিল্য।