ভক্তদের রোগব্যাধি দূর করা। বিভিন্ন মনস্কামনা পূরণ। সংস্কারে শান্তি ফেরানো। - এমন হাজারো সমস্যায় এই মন্দির বড় ভরসাস্থল। সেই কারণে, দূর-দূরান্ত থেকে সংসার পরিত্যক্ত মহিলারা এখানে ভিড় করেন। ভগবানের কাছে হত্যে দেন। তাতে নাকি কাজও হয় বলেই দাবি ভক্তদের। এখানে যে ঈশ্বরের আরাধনা হয়, তাঁর দর্শন যিনি প্রথম পেয়েছিলেন, তিনিও ছিলেন পরিবার পরিত্যক্তা। কথিত আছে, দেবতা তাঁকে এই স্থানে দর্শন দিয়েছিলেন। যার ফলে তিনি পরিবারের সঙ্গে শান্তিতে সংসার করতে পেরেছেন ঈশ্বর দর্শনের পর।
কথা হচ্ছে ওড়িশার চন্দনেশ্বর মন্দিরের ব্যাপারে। এটি অত্যন্ত জাগ্রত শিবমন্দির। পাতাল ফুঁড়ে উঠে আসায় এখানে শিব স্বয়ম্ভূ। বর্গী আমলের এই মন্দিরের বয়স প্রায় তিনশো বছরের কাছাকাছি। আগে এখানে ছিল হোগলা বনের জঙ্গল আর কাজুর গাছ। সেখানেই লক্ষ্মী নামে এক মহিলা শিবলিঙ্গটির দর্শন পান। তিনি গোরু চরাতে বের হতেন। কিন্তু, সেই গোরু ঠিকমতো দুধ না-দেওয়ায় পরিবারের লোকজন লক্ষ্মীকেই বাড়িছাড়া করেছিল। সেই সময়ই লক্ষ্মী নিজের গোরুর পিছু নিয়ে দেখতে পান, গোরুটি এক চম্পক গাছের তলায় শিবলিঙ্গের ওপর নিজে থেকেই দুধ দিচ্ছে। আর, ওই শিবলিঙ্গে কোথা থেকে যেন ফুল-বেলপাতা নিজে থেকেই পড়ছে। আর, পুজো শেষে মাটির তলায় চলে যাচ্ছে ওই শিবলিঙ্গ।
আরও পড়ুন- অতিজাগ্রত কালীমন্দির, যেখানকার বিগ্রহের পুজো করতেন ইতিহাস প্রসিদ্ধ এক সাধক
এই মন্দিরে একটি পুকুর আছে। সেখানে চড়কের সময় তিনটি কাঠ পাওয়া যায়। চড়কের প্রধান সন্ন্যাসী তিনটি কাঠের মধ্যে একটিকে সিঁদুর দিয়ে পুজো করেন। তারপর ওই কাঠ নিজে থেকেই অদৃশ্য হয়ে যায়। এমনটা প্রতিবছর ঘটছে। এই মন্দিরে পুজো দিতে হলে কমিটির কাছে নাম লেখাতে হয়। এখানে রয়েছে কল্পনাবৃক্ষ। সেখানেই মনস্কামনা পূরণের জন্য সুতো বাঁধেন ভক্তরা। প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল এখানে বড় করে মেলা বসে। ভক্তদের একাংশ ইচ্ছাপূরণের জন্য সেদিন থেকে টানা কয়েকদিন উপবাসও করে থাকেন। মেলা চলে টানা ১৩ দিন। সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৫টা পর্যন্ত প্রতিদিন মন্দির খোলা থাকে।