Advertisment

ভক্তরা বলেন মিনি কেদারনাথ, ১,২০০ ফুট উঁচুতে চন্দ্রনাথ মন্দির হিন্দুদের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র

বিভিন্ন দেশ থেকে এখানে পুণ্যার্থীরা আসেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Chandranath Temple

কেউ বলেন মিনি কেদারনাথ। কেউ আবার বলেন শক্তিপীঠ। শৈব ও শাক্তদের মধ্যে এনিয়ে দড়ি টানাটানি থাকলেও বাংলাদেশের সীতাকুণ্ড উপজেলার চন্দ্রনাথ পাহাড় সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এই পাহাড়ের মাথায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,২০০ ফুট উঁচুতে রয়েছে হিন্দুতীর্থ চন্দ্রনাথ মন্দির। চন্দ্রনাথ মানেই যে শিবের মন্দির, তা অনেকেই জানেন। পাশাপাশি, বাঙালি হিন্দুদের বিশ্বাস, এখানে দেবী সতীর ডানহাতের ওপরের অংশ পড়েছিল।

Advertisment

ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, নব্যপ্রস্তর যুগেও খানে মানুষজন বসবাস করত। কথিত আছে, গৌড়ের রাজা আদিসুর বংশীয় বিশম্ভর, সমুদ্রপথে চন্দ্রনাথ মন্দিরে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছিলেন। আবার শোনা যায়, ত্রিপুরার শাসক ধনমাণিক্য চন্দ্রনাথ মন্দিরের শিবমূর্তি ত্রিপুরায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে, দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম অঞ্চল আরাকান রাজ্যের অধীনে ছিল। পাল বংশের রাজা ধর্মপাল আরাকান রাজাদের থেকে চট্টগ্রাম ও সীতাকুণ্ড ছিনিয়ে নিয়েছিলেন।

পরবর্তীতে সোনারগাঁওয়ের সুলতান ফকরুদ্দিন মোবারক শাহ এই অঞ্চল দখল করেন। কিন্তু, শের শাহের কাছে বাংলার সুলতানি বংশের শেষ সুলতান গিয়াসউদ্দিন মুহম্মদ শাহ পরাজিত হন। সেই সময় সুযোগ বুঝে আরাকান রাজারা আবার সীতাকুণ্ড-সহ চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে নেন। এর মধ্যে পর্তুগিজরাও চট্টগ্রাম বন্দরের সুবাদে এই অঞ্চলে ডেরা বাধে। তারা আরাকান রাজাদের উপেক্ষা করে নিজেদের মত এই এলাকার একাংশ শাসন করতে শুরু করে। তারপরও আরাকান রাজারা পর্তুগিজদের ঘাঁটায়নি। শেষ পর্যন্ত মোগলরা পর্তুগিজ ও আরাকানিদের হঠিয়ে এই অঞ্চল দখল করে নেয়।

আরও পড়ুন- জাগ্রত বিশালাক্ষী, আজও ভক্তদের খোঁজ নিতে তাঁদের দুয়ারে হাজির হন দেবী

প্রতিবছর শিবরাত্রি বা শিবচতুর্দশীতে চন্দ্রনাথ মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। এখানে শিবের নাম বিরুপাক্ষ। তাই এই মন্দিরকে বিরুপাক্ষ মন্দিরও বলা হয়। শিবচতুর্দশী উপলক্ষে এখানে বিরাট মেলার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল তো বটেই, অন্যান্য দেশ থেকেও হিন্দুরা প্রতিবছর এই মেলায় যোগ দিতে আসেন। দোলপূর্ণিমা পর্যন্ত মেলা চলে। প্রায় ১২ লক্ষ পুণ্যার্থী প্রতিবার এই মেলায় যোগ দেন।

এবছর শুক্রবার থেকেই মেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে সীতাকুণ্ডে সাতটি এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। অনেতে শিবচতুর্দর্শী উপলক্ষে এখানে স্নান-তর্পণ এবং পিণ্ডদানও করেন। সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৫০টি মঠ-মন্দির রয়েছে। চন্দ্রনাথ মন্দিরে আসা পুণ্যার্থীদের অনেকে সেই সব মঠ মন্দিরও ঘুরে দেখেন।

Lord Shiva pujo Temple
Advertisment