Advertisment

১০৯ দিন যমে-মানুষে টানাটানি, মৃত্যুকে হারিয়ে বেঁচে ফিরলেন প্রৌঢ়

চিকিৎসকদের হাতযশে প্রাণে বাঁচলেন রোগী

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রতীকী ছবি

একমো-তে ছিলেন প্রায় ১০৯ দিন। ছাপান্ন বছর বয়সি মুদিজ্জা একপ্রকার লড়াই করে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন সদ্যই। চেন্নাই য়ের এই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই ভুগছিলেন নানান শারীরিক সমস্যায়। ফলস্বরূপ দেখা দেয় ফুসফুসের জটিলতা এবং অবনতি ঘটতে থাকে শরীরের। ভেন্টিলেটর এবং একমো-তে কাটিয়েছেন প্রায় ১০৯ দিন। আশা কোনওরকম ছিল না বললেই চলে, তারপরে একেবারে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি।

Advertisment

হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, এরকম মিরাকল খুবই কম দেখেছেন তাঁরা! জনৈক ব্যক্তির ফুসফুসের অবস্থা এতই খারাপ ছিল সমস্যায় পড়েছিলেন চিকিৎসকরাও! তাঁদের কথায়, একমো (ইসিএমও) সহায়তায় ৯ সপ্তাহ পরে ফুসফুস প্রতিস্থাপন ছাড়া আর কোনও মানুষ এর আগে সুস্থ হয়নি। তবে হাসপাতালের যত্ন এবং চিকিৎসার সুব্যবস্থা বহাল থাকার কারণে তাঁর ফুসফুস প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়নি। একমো-তে প্রায় ৫০ দিন পর, ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই মুদিজ্জার ধীরে ধীরে উন্নতি হয়। ডাক্তাররা পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ট্রান্সপ্ল্যান্ট ছাড়াই। 

এপ্রিলের শেষের দিকে মুদিজ্জা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই ফুসফুসের সমস্যায় ভুগতে থাকেন। তাকে হাসপাতালে রেফার করার সময় থেকে অবনতি হতে থাকে ক্রমশই। পরবর্তীতে তা নিউমোনিয়ার রূপ নেয় বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সময় তার অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাত্রা ছিল ৯২ শতাংশ, তার শারীরিক অবস্থার অবনতিতে প্রতি মিনিটে ১০ লিটার অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছিল। পরে, ফুসফুসের প্রতিস্থাপন সার্জন, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সি আরুমুগামের নেতৃত্বে হার্ট এবং ফুসফুসের চিকিৎসকরা তাকে একমো-তে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। 

আরও পড়ুন কোভিডের পর হতে পারে হার্টের সমস্যা! জেনে নিন চিকিৎসকদের পরামর্শ

ফুসফুস প্রতিস্থাপনের আগে অবধি একমোওযথেষ্ট কার্যকরী। পরবর্তীতে শারীরিক অবনতি হলেই চিকিৎসকরা সিদ্ধান্তে আসেন ফুসফুস প্রতিস্থাপন করবেন কিনা এই বিষয়ে। এটি গুরুতর রোগীদের বেঁচে থাকার এবং তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আরও ভাল সুযোগ। ডা. আরুমুগাম বলেন, একমো সাপোর্টে ৫৪তম দিন থেকেই শারীরিক উন্নতির লক্ষণ দেখা দেয় মুদিজ্জার এবং তারপর থেকেই এর প্রভাব ক্রমশ কম করতে থাকেন চিকিৎসকরা। এরপরে আরও দুই সপ্তাহ ট্র্যাকিওটমির সাহায্যে ন্যূনতম ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয় মুদিজ্জাকে। শীঘ্রই, রোগীকে বসতে এবং হাঁটতে এবং নিয়মিত স্বাভাবিক খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মুদিজ্জা দেশের প্রথম রোগী যিনি, এই ফুসফুসের অবনতি সত্বেও সুস্থ হয়েছেন। 

এমজিএম হেলথ কেয়ার চেন্নাইয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ৩২ বছর বয়সিও এক ব্যক্তি এরকম একমো সাপোর্টে সুস্থ হয়েছেন। ৭২ দিন ধরে লড়াই চালানোর পর দেশের দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসাবে প্রতিস্থাপন ছাড়া সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর তিনি অন্যান্য একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন যার মধ্যে রয়েছে ইএনটি, রক্তপাত, ছড়িয়ে পড়া ইন্ট্রাভাসকুলার জমাট বাঁধা এবং খিঁচুনি। এমনকি এই সময়ে রোগী হৃদরোগেও ভুগছিলেন। জুনের প্রথম সপ্তাহে রোগীকে একমো-তে রাখা হয়েছিল এবং তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল করতে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে ট্র্যাকিওস্টোমি করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন করোনা পরবর্তীকালে বাড়তে পারে স্ট্রোক-হার্ট অ্যাটাক! ল্যানসেটের রিপোর্ট ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগ

এরম অলৌকিক ঘটনার ক্ষেত্রে যথেষ্টই অবাক হয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তবে চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতি এবং শারীরিক ও মানসিক জোর যে বেশ কার্যকরী তার প্রভাব সম্পর্কে নিদারুণ ধারণা মিলেছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Chennai Lungs Diseas health COVID-19
Advertisment