বাঙালির উৎসবের মরশুম শেষ হয়ে আসছে। চারপাশে বিষণ্ণতা। এর মাঝেই শেষ গানের রেশ নিয়ে চলে এল ছট পুজো। ছট পুজো মূলত বিহারিরা শুরু করেছিলেন বহু বছর আগে। ছট মানে ছট মাইয়া। সূর্যের আরেক নাম। সূর্যকেই পুজো করা হয় ছট পুজোয়। কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার পর ষষ্ঠীতে এই পুজো হয়।
পুজোর নিয়ম মেনে প্রথম দিন মহিলারা একবার কুমড়োর সবজি দিয়ে ভাত খেয়ে ১২ ঘণ্টা উপবাসে থাকবে। তারপর খাবার খেয়ে ২৪ ঘণ্টা উপবাসে থাকবে, তারপর আবার খাবার খেয়ে ৩৬ ঘণ্টা উপবাসে থেকে জলাশয় অথবা নদীতে গিয়ে আবক্ষ জলে দাঁড়িয়ে সূর্য দেবতার কাছে নিজের মনের চাহিদা জানাতে হবে। ছট পুজোর কোনও মন্ত্র নেই। যার যে ভাষায় সূর্যের কাছে মনবাসনা জানানোর ইচ্ছে, তিনি সে ভাষাতেই বলবেন মনে মনে।
রামায়ণ এবং মহাভারত দুয়েতেই ছট পুজোর উল্লেখ রয়েছে। সূর্য বংশের সন্তান হওয়ার কারণে শ্রীরামচন্দ্র নিয়মিত ছট পুজো করতেন। বনবাস কাটিয়ে অযোধ্যা ফেরার সময় রাম ও সীতা সূর্য দেবের উদ্দেশ্যে পুজো ও উপবাস করেন। সেই থেকেই ছট পুজোর সূচনা বলে মনে করা হয়। আবার মহাভারত অনুযায়ী সূর্যদেব ও কুন্তীর পুত্র কর্ণ। কথিত, কর্ণ এই সময় সূর্যের আলোয় আবক্ষ জলে দাঁড়িয়ে দরিদ্রদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করেছিলেন। আবার নিজেদের রাজ্য ফিরে পাওয়ার জন্য দ্রৌপদী ও পাণ্ডবরাও এই পুজো করেছিলেন বলেও কথিত রয়েছে।
এখন কিন্তু ছট পুজো উদযাপন শুধু বিহারি সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সারা দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং ধর্মের মানুষ এখন এই উৎসবকে আপন করে নিয়েছেন।