Advertisment

সন্তানরা দূরে, সান্তা সেজে শহরে বড়দিন উদযাপন ‘বুড়ো’দের

‘‘বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের সংসারেই উপেক্ষিত। ছেলে-বউমারা তাঁদের সম্মান করেন না। কারও আবার ছেলে বাইরে থাকেন। ফলে তাঁরা ভীষণ একাকিত্বে ভোগেন। তাই ওঁদের মুখে হাসি ফোটাতেই এমন ভাবনা।’’

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
christmas, বড়দিন

শ্যামবাজার এলাকার ১৫ জনের মতো বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এবার ‘সান্তাক্লজ’ সাজাচ্ছে ‘সংবেদন’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্রতীকী ছবি: পিক্সাবে।

ওঁদের মন ভাল নেই। ওঁদের মুখের সেই হাসি সময়ের চোরাস্রোতে কবে যেন মিলিয়ে গিয়েছে। ওঁদের কাউকে রোজ ছেলে-বউয়ের গঞ্জনা শুনতে হয়। কারও আবার ‘সাত রাজার ধন এক মানিক’ তাঁদের একলা রেখেই বিদেশ বিভুঁইয়ে গিয়ে সংসার পেতেছেন। কেউ আবার ওঁদের সংসারের একরকম ‘বোঝা’। ওঁদের কারও কারও মন একাকিত্ব গ্রাস করেছে। কেউ আবার একলা পথে চলতে গিয়ে নাতি-নাতনির অভাব বোধ করছেন। শহরের সেই ‘একা’ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মুখের মিলিয়ে যাওয়া হাসি, এবার ফিরছে বড়দিনে। ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাই এবার এ শহরের ‘সান্তাক্লজ’।

Advertisment

উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার এলাকার ১৫ জনের মতো বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এবার ‘সান্তাক্লজ’ সাজাচ্ছে ‘সংবেদন’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ‘সিনিয়র সিটিজেন’-এর তকমা লাগলেই যে তাঁরা সমাজে উপেক্ষিত নন, জেন ওয়াইয়ের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দিতেই এমন অভিনব উদ্যোগ ওই সংস্থার। এ প্রসঙ্গে সংস্থার অন্যতম উদ্যোক্তা সমিত সাহা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের সংসারেই উপেক্ষিত। ছেলে-বউমারা তাঁদের সম্মান করেন না। কারও আবার ছেলে বাইরে থাকেন। ফলে তাঁরা ভীষণ একাকিত্বে ভোগেন। তাই ওঁদের মুখে হাসি ফোটাতেই এমন ভাবনা।’’

christmas, বড়দিন সংবেদনের দফতরে গতবছরের বড়দিনের সেলিব্রেশন। ছবি সৌজন্যে, সংবেদন।

আরও পড়ুন, বড়দিনের আগে খো-খো, কানামাছি ভোঁ ভোঁ খেলবে শহরের খুদেরা

সমিত আরও বললেন, ‘‘বড়দিনে ছোটদের নিয়েই প্রধানত মাতামাতি করা হয়। কিন্তু সমাজের ওই সব উপেক্ষিত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিয়ে কেউ মাতামাতি করেন না। আজকাল সন্তানের হাতে বৃদ্ধ বাবাকে প্রহৃত হওয়ার ঘটনা সামনে আসে। প্রবীণ-নবীন-শিশুর আত্মিক যোগ গড়ে ওঠে না। আমরা চাই, বয়স্করা সসম্মানে বাঁচুক। তাই ওঁদেরকে আনন্দ দিতেই এমন উদ্যোগ নিলাম।’’

বড়দিনের শহরে এই দাদু-ঠাকুমাদের সঙ্গে হইচই করবে ওই সংস্থার স্পেশাল চাইল্ডরাও। ৫০ জনের মতো কচিকাঁচারা, তাদের নতুন দাদু-ঠাকুমাকে ঘিরে থাকবে। আর চোখের সামনে এত নাতি-নাতনিকে একসঙ্গে দেখে আনন্দে ভাসবেন ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। এ প্রসঙ্গে ওই উদ্যোক্তা বললেন, ‘‘বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সান্তাক্লজ সাজানো হবে। আমাদের সংস্থার স্পেশাল চাইল্ডরাও থাকবে। তাছাড়া কয়েকজন কলেজ পড়ুয়াও থাকবেন। গানবাজনা, খেলাধুলো, খাওয়া-দাওয়া, সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটাব আমরা।’’ আগামী ২৫ ডিসেম্বর শ্যামবাজারে ‘সংবেদনে’র অফিসেই এমন অভিনব বড়দিন পালন করা হবে।

kolkata news Christmas
Advertisment