/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/12/game-759.jpg)
খো-খো, গিল্লিডান্ডা, কানামাছি ভোঁ ভোঁ খেলবে শহরের খুদেরা। ছবি সৌজন্যে, অর্গোভব হিউম্যানিটি ডেভেলপমেন্ট।
বড়দিনের আগে এ যেন ওদের জন্য আস্ত পিকনিক। খাওয়া দাওয়া, খেলাধুলো, একেবারে হইহই ব্যাপার। সান্তা আসছে বলে কথা, হুল্লোর তো করবেই ওরা। তবে এবারের ক্রিসমাসের ছুটিতে ওদের নতুন খেলা শেখাবে ‘সান্তাদাদু’। এতদিন খেলা বলতে ওদের ভরসা ছিল ভিডিও গেম। মোবাইল বা কম্পিউটারে গেমের পোকারা এবার খেলবে ওদের বাবা-মা, দাদু-ঠাকুমাদের ছোটবেলার খেলা। খো-খো, গিল্লিডান্ডা, কানামাছি, মার্বেল খেলা , যাদের আজকের বাবলস, টেম্পেল রান, ক্যান্ডি ক্রাশ, সাবওয়ে সার্ফার, অ্যাংগ্রি বার্ডস খেলার ভিড়ে কার্যত অবলুপ্তি ঘটেছে। সেই পুরনো দিনের খেলাই আজকের কচিকাঁচাদের শেখাবে ‘অর্গোভব হিউম্যানিটি ডেভেলপমেন্ট’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যে সংস্থা ওই কচিকাঁচাদের কাছে ‘সান্টাক্লজ’ই বটে।
শহরের বিভিন্ন অনাথ আশ্রমের খুদের দল, ফুটপাথের কচিমুখ ও বেশ কয়েকজন অন্ধ শিশুদের নিয়ে বড়দিনের আগেই ‘বড়দিন’ পালন করবে ওই সংস্থা। তবে নিছক আনন্দ উদযাপন নয়। আনন্দ-হুল্লোরের মাঝে পুরনো দিনের খেলার পুনর্জন্ম ঘটাতে এহেন উদ্যোগ ওই সংস্থার। এ প্রসঙ্গে অন্যতম উদ্যোক্তা রেশমী আগরওয়াল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বললেন, ‘‘যে খেলাগুলো হারিয়ে গিয়েছে। আমরা যেসব খেলা খেলেছিলাম সেটা আজকের বাচ্চারা জানে না। ওরা সব কম্পিউটারে গেম খেলে। খো-খো, মার্বেল খেলা, এসব তো ওরা খেলেনি। তাই ওরা যাতে এসব খেলা সম্পর্কে জানে ও খেলে, তা থেকেই এমন ভাবনা।’’
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/12/240_F_92525981_35QfndeXvmNfzCE7yyS9Bd0W1dUOuU1o.jpg)
রেশমীদেবীর কথায়, ‘‘আমরা ওদের ওসব খেলাধুলো করার সুযোগ করে দেব। যেহেতু ওরা ওসব খেলা জানে না, তাই কীভাবে ওসব খেলা খেলতে হয় তা শেখানোর জন্য আমাদের কর্মীরা থাকবেন।’’
আরও পড়ুন, এনআরএসে বেড়ে উঠছে ‘নীলরতন সরকারের নাতি’
তবে পুরনো দিনের খেলার কামব্যাক ঘটানোই মূল উদ্দেশ্য নয় রেশমীদেবীদের। কেন এধরনের খেলার এত গুরুত্ব, তা বোঝাতে থাকছেন চিকিৎসকও। এ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, ‘‘চিকিৎসকরাও থাকবেন সেদিন। কারণ বাচ্চাদের সঙ্গে চিকিৎসকরা কথা বলবেন। খেলার পর ওদের মনে কতটা প্রভাব পড়ছে, তা জানতেই চিকিৎসকরা থাকবেন।’’
পুরনো দিনের ওই খেলাগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম বলেই মনে করেন শিশু চিকিৎসক সৌমিত্র দত্ত। তিনি বললেন, ‘‘আজকের দিনে বাচ্চারা মোবাইল, কম্পিউটার গেম খেলে। কিন্তু এতে শারীরিক পরিশ্রম হয় না। খেলাধুলো করলে শারীরিক ব্যায়াম করা হয়। অনলাইন গেমে সেই শারীরিক কসরত হয় না। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। পুরনো দিনের খেলাগুলোর মধ্যে অনেক বৈচিত্র রয়েছে। ফলে একঘেঁয়েমি আসে না। তাছাড়া ওইসব খেলায় একে অপরের সঙ্গে পারষ্পরিক সম্পর্ক তৈরি হয়। অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে মেশা, মিলেমেশা খেলা, এই মানসিকতার বিকাশ ঘটে না অনলাইন গেমে। এখন বাচ্চারা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। কারণ অনলাইন গেমে শিশুদের মানসিক বিকাশ ঘটে না।’’
রবিবার সল্টলেক সেক্টর ওয়ানে হরিয়ানা বিদ্যামন্দির স্কুলের কাছে বিএ সিএ ফেন্সিং গ্রাউন্ডে এই খেলার আসর বসছে। যেখানে কচিকাঁচাদের সঙ্গে বড়দিনের প্রাক সেলিব্রেশনের পাশাপাশি পুরনো দিনের খেলাধুলো করা হবে। বাচ্চাদের মনের কথা জানতে থাকবেন চিকিৎসক সৌমিত্রবাবু ও তাঁর দলবল।