আমরা অনেক সময়ই দেখে থাকি যে রূপ নিয়ে ঘনিষ্ঠরাই কটাক্ষ করেন। তা সে আত্মীয়-স্বজনই হোক। অথবা পাড়া প্রতিবেশী। কিন্তু, রূপ তো সবার সমান হয় না। আর, তা চিরকাল স্থিরও থাকে না। তারপরও এই ধরনের কটাক্ষ কিন্তু হয়। আর, সেই সত্যিটা কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না।
হয়তো অনেকে পরামর্শ দেবেন, এই ধরনের কটাক্ষকে উপেক্ষা করতে। কিন্তু, উপেক্ষা সবকিছুর জবাব হতে পারে না। তাই যাকে যেমন জবাব দেওয়ার, তাকে সেভাবেই জবাব দিন। আর, সেই রাস্তা কী হতে পারে, তা শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছেন চাণক্য।
তিনি তাঁর শ্লোকের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন যে রূপ নিয়ে এই ধরনের কটাক্ষের প্রকৃত জবাব কী হতে পারে। আর, সেই কারণে চাণক্য তাঁর শ্লোকে জানিয়েছেন, 'কোকিলানাং স্বরো রূপং, নারী রূপং পতিব্রতম। বিদ্যা রুপং কুরূপানাং, ক্ষমা রূপং তপস্বীনাম।'
যার বঙ্গানুবাদ করলে হয়, কোকিলের কণ্ঠস্বরই হল তার রূপ। নারীর রূপ হল পতিব্রতা হওয়া। কুরূপ ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিদ্যাই হল রূপ। আর, তপস্বীর ক্ষেত্রে রূপ হল ক্ষমা। যার অর্থ সবার রূপ এক নয়। গোটা বিশ্ব শুধু দেহসর্বস্ব নয়। অথবা দেহরূপ সর্বস্ব নয়।
আরও পড়ুন- নারীর ভূষণ কী, স্পষ্ট জানিয়ে গিয়েছেন চাণক্য
রূপের অর্থ বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে বদলে যায়। যার যেটা গুণ, তার ক্ষেত্রে সেটাই রূপ। দেহরূপের পাশাপাশি, সেই রূপকেও কোনওমতে অস্বীকার করা যায় না। চাণক্য নিজেও দেখতে খুব একটা ভালো ছিলেন না। সেই কারণে, নন্দ বংশের সম্রাট ধন নন্দ তাঁকে অপমান করেছিলেন। যার জেরে প্রতিশোধ নিতে, নিজের প্রকৃত রূপ দেখাতে চাণক্য তৈরি করেছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে।
সেই কারণে, রূপের প্রতি কটাক্ষ সম্পর্কে সেই যুগেও চাণক্য যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। তিনি সর্বদা তাঁর নীতিবাক্যে বাহ্যিক রূপের চেয়ে অভ্যন্তরীণ রূপকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আর, সেই রূপের মধ্যে বিদ্যাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন কৌটিল্য চাণক্য।