কালীতীর্থ কলকাতা। যেখানে সতীপীঠ কালীঘাট মন্দিরই শুধু না। দৈবশক্তি আরাধনার আরও বহু স্থান রয়েছে। মনস্কামনা পূরণের জন্য এই সব মন্দিরে ছুটে আসেন দূর-দূরান্তের ভক্তরা। কেউ নিজে আসেন। কেউ বা আসেন পরিবার নিয়ে। আবার, অনেকেই আছেন যাঁরা ফল পাওয়ার পর আসেন পরিবার নিয়ে দেবীকে প্রণাম জানাতে।
এমনই এক মন্দির হল উত্তর কলকাতার কাশীপুর রোডের বামনদাস মুখোপাধ্যায় কালী বাড়ি। ভক্তদের কাছে যা কৃপাময়ী কালী মন্দির নামে পরিচিত। কাশীপুর উদ্যান বাটির কাছে এই মন্দির। ঠিকানা- ৮৭বি, কাশীপুর রোড। ১৯০৪ সালের মাঘী পূর্ণিমার দিন এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বামনদাস মুখোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও কয়লাখনির মালিক। ইতালি থেকে শ্বেতপাথর ও মায়ানমার থেকে সেগুনকাছ এনে তিনি মন্দিরের দরজা, জানালা বানিয়েছিলেন।
উঁচু বেদির ওপর স্থাপিত এই মন্দির। গর্ভগৃহে রয়েছেন দেবী কৃপাময়ী কালী। কষ্টিপাথরে তৈরি হয়েছে এখানকার দেবীমূর্তি। অধিষ্ঠাত্রী দেবী ছাড়াও এই মন্দিরে রয়েছে কষ্টিপাথরের দুর্গেশ্বর ও ক্ষেত্রেশ্বর নামে দুটি শিবলিঙ্গ ও রঘুনাথ নারায়ণ শিলা। বছরভর এখানে নিত্যপুজো চলে। বিশ্বকর্মা ও কার্তিক পুজো ছাড়াও যাবতীয় পুজো-পার্বণ আয়োজিত হয়।
আরও পড়ুন- দেবী অত্যন্ত জাগ্রত, প্রসন্নময়ী কালীকে দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা
এমনকী দুর্গা পুজোও পর্যন্ত হয়ে থাকে। মন্দিরে বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। তাই বলিদান নিষিদ্ধ। দেবীকে দেওয়া হয় নিরামিষ ভোগ। আগে কালী পুজোর সময় এখানে খুব ধুমধাম করে উৎসব হত। তুবড়ি প্রতিযোগিতা হত। কয়েকদিন ধরে যাত্রা চলত। নরনারায়ণ সেবা হত। বহু লোককে খাওয়ানোও হত। এখন, কালের নিয়মে সেই জাঁক-জমক উধাও।
ভক্তদের জন্য সারাবছর এই মন্দির খোলা থাকে। তবে, সেটা নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী। সকাল ৮টায় মন্দির খোলা হয়। বন্ধ হয় সকাল ১০টায়। আবার, বিকেল ৫টায় ফের মন্দির খোলা হয়। বন্ধ হয় সন্ধে ৭টায়। এই মন্দিরকে কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটি ঐতিহ্যময় স্থান বলে ঘোষণা করেছে। কারণ, ১৯৩৯ সালে সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর এখানেই তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল।