করোনা আতঙ্কের জন্য বিশ্বজুড়ে শুরু হওয়া লকডাউনে প্রবল সমস্যার মধ্যে রয়েছে মেদবহুল শিশু ও কিশোরকিশোরীরা। সমীক্ষকদের মতে, এই সব স্কুলপড়ুয়াদের স্বাভাবিক রুটিন সম্পূর্ণ তছনছ হয়ে গিয়েছে৷ এর ফলে তাদের স্বাস্থ্যে অত্যন্ত খারাপ প্রভাব পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর কুপ্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।
সম্প্রতি বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ওবেসিটি বা স্থূলত্বের সমস্যা রয়েছে, এমন শিশুদের উপর লকডাউনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। এই গবেষণা থেকে যে ছবি উঠে এসেছে তা দেখে রীতিমতো আতঙ্কিত চিকিৎসকদের একাংশ। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ মেদবহুল শিশু এবং কিশোরকিশোরীরা আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে খাবার খাচৃছে লকডাউনে, তাদের ঘুমের সময়ও বেড়ে গিয়েছে, অথচ পাল্লা দিয়ে কমেছে শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ।
কোভিড-১৯ সংক্রমণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির অন্যতম ইটালি৷ সেখানে লকডাউন শুরুও হয়েছে অনেক আগে। গবেষকেরা মার্চ ও এপ্রিল মাস জুড়ে ইটালির মেদবহুল শিশু ও কিশোরকিশোরীদের খাওয়া, ঘুম, শারীরিক পরিশ্রম এবং স্ক্রিনে চোখ রাখার সময় নিয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছেন৷ তারপর সেই তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছেন এক বছর আগে ওই শিশু ও কিশোরীদের খাওয়া, ঘুম, পরিশ্রম এবং মোবাইল, কম্পিউটারে সময় কাটানোর পরিমাণ। দেখা যাচ্ছে, মেদবহুল শিশুরা লকডাউনে স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত একটি মিল বেশি খাচ্ছে প্রতিদিন, ঘুমোচ্ছে আধ ঘন্টা বেশি। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ ঘন্টা তারা টিভি, মোবাইল বা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রাখছে। অন্যদিকে, উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে সপ্তাহে স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত দু'ঘন্টা কম শারীরিক পরিশ্রম করছে তারা।
বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বেগে শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 'সায়েন্স ডেইলি' পত্রিকায় 'চাইল্ডহুড ওবেসিটি এক্সপার্ট' মাইলেস ফেইথ বলেছেন, "মেদের সমস্যা রয়েছে এমন শিশু-কিশোরদের জন্য লকডাউন অত্যন্ত সমস্যাজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ঘরবন্দি অবস্থায় তারা খুবই অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করছে। ঘরে আটকে থাকায় স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় শর্তগুলি পূরণ করা বাবামায়েদের জন্যও মুশকিল হয়ে উঠছে।"