এ আবার নতুন এক উদঘাটন! যেন সাসপেন্স আর শেষ হচ্ছে না! সঙ্কোচ থাকলে শুধু টেস্ট করলেই হল না দিনের সঠিক সময় না হলে নাকি আবার গরমিল আসতে পারে রিপোর্টে। এমনটাই জানান দিচ্ছে গবেষণা। দিনের সঙ্গে সঙ্গে শারীরবৃত্তীয় হাবভাবে অনেক সময়ই নানান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় এবং নির্দিষ্ট সেই সময়েই মানসিক তথা দৈহিক ভারসাম্যে অনেক রকম এদিক ওদিক থাকে। কিন্তু আসলেই কী বলছে গবেষণা?
জার্নাল অফ বায়োলজিকাল রিদমস এর তথ্য অন্তত সেই কথায় বলছে। যদি সঠিক রেজাল্ট কেউ পেতে চায় তবে কিন্তু দিনের বেলাতেই টেস্ট করানো এক্কেবারে সঠিক তাহলেই নাকি আদতে সঠিক তথ্য আসবে। রাতের বেলায় এর ক্ষেত্রে ভুল ত্রুটি হতে পারে। এবং এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে শরীরের কর্মসময় এবং বিশ্রামের সাময়িক আপেক্ষিকতা কে। চিকিৎসা শাস্ত্রে একে 'সার্কাদিয়ান রিদম' ( Circadian Rhythm ) বলেই উল্লেখ করা হয়।
এর অর্থ হল, শরীরের স্বাভাবিক এবং অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া যা ঘুম-জাগরণ চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং মোটামুটিভাবে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় পুনরাবৃত্ত হয়। কোভিড-১৯ ভাইরাস তখনই স্বরূপে আসে যখন সংক্রামিত কোষগুলি রক্ত এবং শ্লেষ্মায় ভাইরাসের কণা ছেড়ে দেয়। শারীরবৃত্তীয় ঘড়ি দ্বারা ইমিউন সিস্টেমের মডুলেশনের কারণে দিনের মাঝামাঝি সময়ে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সেই সময়েই টেস্ট করলে রিপোর্ট একেবারেই সঠিক আসে। এমনকি যারা সংক্রমিত অথচ বেশি মাত্রায় লক্ষণ নেই সহজ ভাষায় সিম্পটম হীন তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই সময়টি আসল তথ্যের অনুসন্ধান দেবে।
তবে রাতের ক্ষেত্রে সমস্যা কী? গবেষকদের মতামত অনুযায়ী, রাত আটটার পর শরীরে ভাইরাসের লোড কম হয় এবং এই সময় থেকেই শরীর আস্তে ধীরে বিশ্রামের খোঁজ করতে থাকে, ফলেই কোষগুলি ধীরে ধীরে নিস্তেজ হতে থাকে। লোকেরা যদি সেই সময়ে পরীক্ষা করা বেছে নেয় তবে ভুল ফলাফলের উচ্চ সম্ভাবনা থাকতে পারে। এমনকি রাতের দিকে শরীরের অন্যান্য ভাইরাস তথা সাধারণ জ্বর কিংবা ভাইরাল ফ্লু এর সঙ্গেই মিশ্রিত হয়েই এটি কিন্তু নিজেকে আড়ালে ফেলতে পারে।
গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে SARS-CoV-2 এর প্রকৃতি দিনের বেলা সক্রিয় থাকা কিন্তু এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। পরীক্ষামূলকভাবে রোগীদের মধ্যে যারা কোভিড ১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিরা সারা দিন ভিন্নভাবে ভাইরাস ছড়ায় কিনা তা দেখতে হবে, ফলেই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে এটি জনস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। গবেষকদের মতামত অনুযায়ী, টেস্টের মাত্রা উন্নত করতে অনেক ধরনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন এবং আদৌ সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন হচ্ছে কিনা সেইদিকেও নজর দিতে হবে। এমনকি ভ্যাকসিনের প্রভাব বিবেচনা করতেও কিন্তু এই কার্যকারিতা গুলি নিয়ে ভাবা যেতে পারে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন