ইন্ডিগো, লেটার, মুখোশ, কলমকারি প্রিন্ট বর্তমানে বেশ কমন। সঙ্গে ব্লক প্রিণ্টও চলছে সমান দরে। আর সেই বল্ক প্রিন্টে এবার নতুন ট্রেন্ড নিয়ে হাজির ডালিয়া মিত্র। ট্রেন্ডিং এর মোড় ঘোরাতে এবারে তালিকায় আনলেন ‘শব্দছক’। বলাই যায় এতদিন খাতায় কলমে শব্দছককে জব্দ করেছেন বাঙালি, তবে এবার সেই শব্দছকের নকশাকে পোশাকে এনে ফ্যাশন ওয়ার্ল্ডকে জব্দ করতে চেয়েছেন ডালিয়া ।
বাঙালির মহাপুজো দুগ্গাপুজো। সাজ সাজ রবে কলকাতা সহ গোটা রাজ্য। অনাবিল আনন্দে মাতছে বাঙালি। এই সময় মাথার চুল থেকে পায়ের নখ সবাই মুড়ে ফেলতে চান ট্রেন্ডিং ফ্যাশনে। আনন্দ উৎসবে নিজেকে একটু আলাদা দেখাতে চান? তাহলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা সন্ধান দিল নয়া ফ্যাশন ট্রেন্ড ও তার আস্তানার।
শব্দছক সাধারণত আমরা সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনের পাশাপাশি অ্যাপেও আজকাল দেখে থাকি। কিন্তু এবার সেই শব্দছক পাওয়া যাবে শাড়ি, কুর্তি, স্যালোয়ার সহ ছেলেদের পোশাকেও। ডালিয়া মিত্র স্পষ্টই জানিয়েছেন যে তাঁর এই নামকরণের পিছনে কোনো "ফ্যাশন ডিজাইনারের তকমা নেই", বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে সেখানকার শিল্পীদের হাতেই বুনিয়ে এনেছেন শাড়ির নতুন কালেকশন। তাঁর সংগৃহীত শাড়ি সম্প্রতি জি বাংলা চ্যানেলের অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী সুদীপা এবং অপরাজিতা আঢ্যর পরনে দেখা যায়।
শব্দছক এবার শাড়ির নকশায় pic.twitter.com/dCftUecKIC
— IE Bangla (@ieBangla) October 5, 2018
ডিজিটাল গেমিং আর ওয়েব সিরিজের জামানায় বাক্সবন্দী হয়েছে শব্দছক। ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেলেও এতে পারদর্শী বাঙালি, বলছেন শব্দছক প্রস্তুতকারক শুভজ্যোতি রায়। কয়েকদিন আগেই ‘ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে’ নিজের নাম তুলেছেন। তারপরই ভাবনা জেগেছিল ডালিয়া মিত্রের। শুভজ্যোতির সঙ্গে আলোচনা করে, সেই শব্দছককে আবার মনে করিয়ে দিতে ও পছন্দের বিষয় করে তুলতে ব্লক প্রিন্টের আদলে নিয়ে আসছেন তিনি। যা সম্পূর্ণ এবারের পুজোয় আপনার কাছে হতে পারে নিউ কালেকশন।
— IE Bangla (@ieBangla) October 5, 2018
তিন মাস সময় লেগেছে শব্দছকের ব্লক তৈরি করতে। ব্লক তৈরি শিল্পীদের প্রশংসা ফুটে উঠেছে ডালিয়ার কথায়। তিনি জানান, "প্রায় চার ফুট বাই চার ফুটের ঘরে তিন মাস অবিরাম খেটেছেন শিল্পীরা।" ভাগলপুরের মান্দার পাহাড়ের বাসিন্দা শামশাদ ও রফি অক্লান্ত পরিশ্রম করে তৈরি করেছেন বাঙালির শারদিয়ার কালেকশন।
ফুল, ফল, চেকসের বাইরে গিয়ে নতুন নকশা নিয়ে এসেছেন বলে দাবি ডালিয়ার। তিনি বলেন, "ছত্তিশগড়, ভাগলপুরের মন্দার পাহাড়, বাংলাদেশের আড়াই হাজারি, সব জায়গায় ঘুরে দেখেছি, আমার ভাবনা দিলে সেখানকার শিল্পীরা বাস্তবায়িত করতে পারবেন সেই নকশাকে, তাই তাঁদের দিয়েই তৈরি এই নয়া কালেকশন।" তিনি আরও জানান, "প্রযুক্তিগত দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছেন ওই শিল্পীরা। এদিকে আমারও বারবার যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই তাঁদের শেখাতে হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের মত মেসেজিং অ্যাপের ব্যবহার। যাতে নকশা তৈরি করে তার ছবি পাঠাতে পারেন তাঁরা।"
তাঁর শেষ কথা, "ভাবনা কখনও ডিগ্রি বা কোর্সের বেড়াজালে আটকে থাকে না। পড়াশোনাই যে সবকিছুর মাপকাঠি, সেই পরিচিত ছকই ভাঙতে চেয়েছি আমি।"