প্রার্থনা করলে দেবী কথা শোনেন। ভক্তরা তাই দূর-দূরান্ত থেকে এই মন্দিরে ছুটে আসেন। দেবী নাকি এখানে এতই জাগ্রত যে ভক্তদের খালি হাতে ফেরান না। অসময়ে কাতর ভক্ত তাড়নার কারণে এসে পড়লে পুরোহিতের ঘুম পর্যন্ত ভাঙিয়ে দেন। এমন নানা অলৌকিক কাহিনি ছড়িয়ে আছে এই মন্দিরের আনাচকানাচে। ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরের এমন অলৌকিক ঘটনাবলি নতুন ঘটছে, তেমনটা কিন্তু নয়। তবে প্রচার কম। কারণ, এই মন্দির এক গ্রামে। যে গ্রামের নাম বালিজুড়ি।
তবে, যাঁরা একবার এসেছেন, তাঁরা এই মন্দিরে নানা প্রার্থনা নিয়ে বারবার আসেন। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবীই তাঁদের প্রতিবছর অন্তত একবার করে মন্দিরে আসতে বাধ্য করেন। ভক্তদের অনেকে এখানকার দেবী প্রতিমাকে ঘরের মেয়ে বলেই মনে করেন। সেই মতো দান-ধ্যানও করেন। আর, করবেন না-ই বা কেন? ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে যান। এমনিতে অবশ্য এমন বিশ্বাস তৈরি হয়নি। ভক্তরা অনেকেই যে রাতবিরেতে নূপুর পায়ে দেবীর পদধ্বনি পর্যন্ত শুনেছেন। তারপর থেকেই বিশ্বাস জন্মেছে। এই মন্দিরের প্রতিমার নিরঞ্জন পর্বের বিশেষ গুরুত্ব আছে। দেবীকে এখানে নাচিয়ে নিরঞ্জনের জন্য ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। আর, সেই নাচানোর সময় অসংখ্য ভক্ত নিরঞ্জনের শোভাযাত্রায় এসে ভিড় করেন। প্রত্যেকেই চান দেবীকে নাচানোর সময় প্রতিমাকে একবারের জন্য হলেও ছুঁতে।
আরও পড়ুন- জাগ্রত মন্দির, যেখানে দেবী নিজেই নিজের ভোগের ব্যবস্থা করেন
কীভাবে যাবেন এই মন্দিরে? পশ্চিম বর্ধমানের ফরিদপুর-লাউদোহায় এই বালিজুড়ি গ্রাম। আসানসোল থেকে লাউদোহা যাওয়ার বাস আছে। বালিজুড়ি গ্রামকে অনেকে কালীময় গ্রাম বলেও ডাকেন। কারণ, এই বালিজুড়ি গ্রামে দেবী ক্ষেপা কালী ছাড়াও আরও চারটি কালী মন্দির রয়েছে। সব মন্দিরেই দেবী মূর্তির আদল এক। আর, সব মন্দিরেই পুজো প্রায় একইসঙ্গে চলে। তবে, সবার আগে পুজো হয় দেবী ক্ষেপী কালীর। গ্রামবাসীদের সবচেয়ে বড় উৎসবও হল কালীপুজো। তবে, তার মধ্যে ক্ষেপা কালী মন্দিরের প্রতিই ভক্তদের আবেগ বেশি। কারণ, ভক্তদের দাবি, এই মন্দিরের দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। ভক্তদের অনেকের কাছে তিনি পরিচিত দেবী এলোকেশী নামে।