জাগ্রত সাধন কালীর কৃপার প্রতীক্ষায় থাকেন ভক্তরা। সেই প্রতীক্ষার যে বিশেষ লাভ হয়, তার বড় প্রমাণ এই মন্দির। ভক্তদের দানের অর্থে এই মন্দির ক্রমশ বড় আকার নিয়ে চলেছে। ঘটছে এর সৌন্দর্যায়ন। দেবীর মাটির মূর্তি। প্রতিবছর এই মূর্তি এবং মন্দিরে রং করা হয়।
মজার বিষয় হল, এই মন্দিরের বয়স শতবর্ষ অতিক্রম করেছে। মন্দিরের মূর্তির বয়সও তাই। কিন্তু, শতবর্ষ প্রাচীন মাটির মূর্তির কোথাও একচুলও নষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। অথচ, প্রতিদিন এই একই মূর্তিতে পুজোপাঠ চলে। এখানে প্রতিমার নিরঞ্জন হয় না। এই জাগ্রত কালীমূর্তি এবং মন্দিরটি রয়েছে কালনায়। তা-ও ঠিক সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের বিপরীতে। কথিত আছে ১৯২০ সালে ভূতনাথ অধিকারী এই মন্দির স্থাপন করেছিলেন।
কথিত আছে ভূতনাথ অধিকারী ছিলেন পরম কালীভক্ত। তিনি তন্ত্রের বিভিন্ন সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। তিনি মাতৃরূপ দর্শনের জন্য দিনরাত বিভোর হয়ে থাকতেন। সেই সময় সিদ্ধেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন জমিতে ছিল শ্মশান। সেই শ্মশানেই মাতৃসাধনায় ব্রতী হন ভূতনাথ। একে একে তন্ত্রসাধনার বিভিন্ন স্তর তিনি উত্তীর্ণ হন। সিদ্ধিলাভ করেন শব সাধনাতেও।
প্রথমে তিনি মন্দির তৈরি করেননি। পরে, দেবীর স্বপ্নাদেশ পান। এই স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরই মন্দির তৈরিতে ব্রতী হন ভূতনাথ অধিকারী। শ্মশানে বসে দেবী আরাধনায় মগ্ন থাকাকালীন ভূতনাথ দেবীদর্শন পেয়েছিলেন। সেই কারণে দেবীর নামকরণ হয় শ্মশানকালী। আবার, ভূতনাথ যেহেতু সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন, সেই কারণে দেবীর নামকরণ ভক্তদের মুখে প্রচার হয়ে যায় সাধনকালী বলে।
আরও পড়ুন- মধ্যরাতে নূপুর পায়ে ঘুরে বেড়ান, আশা পূরণ করেন জাগ্রত আশাদেবী কালী
ভক্তদের বিশ্বাস, দেবীর কৃপায় তাঁদের কোনও জটিল ও কঠিন অসুখ হয় না।কোথাও কোনও বিপদ পড়লে, দেবীর কাছে প্রার্থনা করলেই বিপদ কেটে যায়। কাজের জগতে ব্যবসা থেকে চাকরি- সবেতেই দেবীর অনুগ্রহে ঘটে উন্নতি। আর্থিক ক্ষেত্রে যেমন অগ্রগতি ঘটে। তেমনই পদের ক্ষেত্রেও ঘটে অগ্রগতি। আর, সেই কারণে সাধনকালী মন্দিরে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি বছরভর যাতায়াত করেন।