দেশের ধনী মন্দিরগুলোর মধ্যে একেবারে সামনের সারিতেই আছে তিরুপতির বালাজি মন্দির। এখানে ভক্তরা নিজেদের চুল দান করেন। সেই চুল আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে বিক্রি হয়। তা থেকে আয় হয় তিরুপতি মন্দিরের। সাধারণত, দৈনিক ২০ হাজার ভক্ত নিজের চুল দান করেন এই মন্দিরে। পুরুষ ভক্তদের পাশাপাশি, মহিলারাও দান করেন চুল। ভক্তদের চুল কাটার জন্য তিরুপতি মন্দিরে রয়েছেন ৫০০-র বেশি নাপিত।
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, এখানে ভগবান বালাজি তপস্যা করেছিলেন। সেই সময় তাঁর শরীরের ওপর পিঁপড়েরা পাহাড় তৈরি করেছিল। প্রতিদিন একটি গোরু ওই পাহাড়ে এসে পিঁপড়ের ঢিপির নীচে থাকা বালাজিকে দুধ পান করাত। ওই গোরু ছিল স্থানীয় রাজার। বিষয়টা ওই রাজার কর্মচারীর নজরে পড়ে যায়। রাজকর্মচারী গোরুটিকে মারার চেষ্টা করেন। গোরুকে বাঁচাতে গিয়ে আঘাত নিজের ওপর নেন বালাজি।
তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। মাথার চুল পড়ে যায়। এতে দুঃখ পান বালাজির মা নীলা দেবী। ছেলের মাথা আবার চুলে পরিপূর্ণ করাতে তিনি নিজের চুল কেটে ফেলেন। সেই চুল রাখা হয় বালাজির মাথায়। এতে বালাজির যাবতীয় ক্ষত সেরে যায়। তিনি মায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, 'চুল শরীরকে সৌন্দর্য দেয়। তবুও নিজের কথা না-ভেবে আপনি আমার জন্য সেই চুলও ত্যাগ করলেন। এবার থেকে যাঁরাই আমার জন্য চুল ত্যাগ করবে, তাঁদের সকলের মনের ইচ্ছা পূরণ হয়ে যাবে।'
আরও পড়ুন- হিন্দুতীর্থের চার ধামের অন্যতম, জেনে নিন রামেশ্বরম সম্পর্কে
অন্য প্রচলিত কাহিনি হল, নিজের বিয়ের জন্য ভগবান বালাজি কুবেরের থেকে ১১,৪০০,০০০ স্বর্ণমুদ্রা ধার করেছিলেন। সেই ধার শোধ করতে ভক্তরা মন্দিরের হুন্ডি বা দানপাত্রে অর্থ দান করেন। সঙ্গে, চুলও দান করেন। যে চুল বিক্রি করে পাওয়া অর্থ বালাজির ধার শোধের কাজেই লাগানো হয়। ভক্তদের ধারণা, যাঁরা এখানে চুল দান করেন, তাঁদের পাপ এবং সমস্ত খারাপের অবসান ঘটে। ওই ভক্তের প্রতি ভগবান সর্বদা কৃপাদৃষ্টি বজায় রাখেন। ভক্ত যতটা চুল দান করেন, ভগবান তার ১০ গুণ ধনসম্পত্তি ভক্তকে পাইয়ে দেন।