Jaynagar Dhanwantari Kali: কালী যেখানে ধন্বন্তরী! 'রোগহারিণী কালী'র কাহিনি জানেন?

Dhanteras Miracle of Bengal: ধনতেরাসে জেনে নিন জয়নগরের ধন্বন্তরী কালী মন্দিরের রোগ সারানোর অলৌকিক কাহিনি! ভক্তরা বলে থাকেন—দেবীর আশীর্বাদে মেলে রোগমুক্তি ও শান্তি।

Dhanteras Miracle of Bengal: ধনতেরাসে জেনে নিন জয়নগরের ধন্বন্তরী কালী মন্দিরের রোগ সারানোর অলৌকিক কাহিনি! ভক্তরা বলে থাকেন—দেবীর আশীর্বাদে মেলে রোগমুক্তি ও শান্তি।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Dhanteras Miracle of Bengal: ধনতেরাসের অলৌকিক কাহিনি!

Dhanteras Miracle of Bengal: ধনতেরাসের অলৌকিক কাহিনি!

Dhanteras Miracle of Bengal: ধনতেরাস মানেই লক্ষ্মী, ধন ও সমৃদ্ধির আহ্বান। কিন্তু বাংলার দক্ষিণ প্রান্তে, জয়নগর-মজিলপুরের এক কোণে, এই দিনটি এক অন্য অর্থ বহন করে—রোগ মুক্তি ও আরোগ্যের প্রতীক হিসেবে পূজিতা হন দেবী ধন্বন্তরী কালী।
 শ্রদ্ধালুদের কাছে তিনি পরিচিত 'রোগহারিণী মা' নামে। কথিত আছে, তাঁর আশীর্বাদে আজও অসাধ্য রোগ সেরে যায়, তাই ধনতেরাসের তিথিতে এই মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে।

Advertisment

প্রায় চার শতাব্দী আগে, অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে, যখন এই অঞ্চলের বুক চিরে আদি গঙ্গা বইত, তখন এখানকার এক শ্মশান ভূমিতে সাধনা করতেন স্বামী ভৈরবানন্দ। তপস্যার মধ্যে একদিন তিনি এক পুকুরে আবিষ্কার করেন একটি কালো পাথরের কালীমূর্তি—অপরূপ বালিকা রূপিণী মা কালী। স্বপ্নাদেশে দেবীর নির্দেশ পেয়ে তিনি সেই মূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন এবং পূজা শুরু করেন। ধীরে ধীরে এই স্থানটি রূপ নেয় এক সিদ্ধ সাধনক্ষেত্রে।

আরও পড়ুন- অ্যান্টনিই কি কলকাতার ফিরিঙ্গি কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা?

‘ধন্বন্তরী কালী’ নামের উৎস

বয়সে প্রবীণ ভৈরবানন্দ পরবর্তীকালে তাঁর শিষ্য রাজেন্দ্র চক্রবর্তীকে পূজার দায়িত্ব দেন। প্রচলিত কাহিনি অনুযায়ী, মা কালী রাজেন্দ্রবাবুকে স্বপ্নে এক বাত সারানোর ওষুধ দেন—যা পানের সঙ্গে গ্রহণ করলে বাতের রোগ সেরে যায়। এরপর থেকেই দেবী পরিচিত হন ‘ধন্বন্তরী কালী’ নামে—যিনি স্বয়ং আয়ুর্বেদের দেবতা ধন্বন্তরী রূপে ভক্তদের রোগমুক্তি দান করেন। এমনটাই বিশ্বাস ভক্তদের।

Advertisment

আরও পড়ুন- জাগ্রত দেবী! মন্দির নির্মাণে জড়িয়ে এই বেদনাময় কাহিনি

আজও এই মন্দিরে ওষুধ দেওয়ার প্রথা বজায় আছে। প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় হাজার হাজার ভক্ত এখানে আসেন, মা’র পুকুরে স্নান করেন, দেবীর প্রদত্ত ওষুধ পান করেন এবং আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। অনেকে বলেন, অম্বল, গ্যাস, বাত বা চর্মরোগে ভোগা মানুষজন এই ওষুধ খেয়ে আশ্চর্যভাবে আরোগ্য লাভ করেন। তাই মা কালী এখানে 'রোগহারিণী ধন্বন্তরী' নামে পরিচিত।

আরও পড়ুন- হইচই হচ্ছে, কিন্তু এগুলো জানলে ধনতেরাস সম্পর্কে নতুন করে ভাববেন!

প্রতিদিনই ভক্তদের ভিড় থাকে, তবে শনি ও মঙ্গলবার ভিড় সবচেয়ে বেশি হয়। অমাবস্যা, কালীপুজো ও ধনতেরাসের দিন এখানে জমে ওঠে উৎসব। বৈশাখ মাসে ১৫ দিনের এক বিশেষ মেলাও বসে—এই সময় দেবীকে ‘বিশেষ বেশ’ পরানো হয়, এবং মন্দির প্রাঙ্গণ আলোয় ভরে ওঠে।

আরও পড়ুন- ধনতেরাসে এর মধ্যে কোনও ১টা উপহার দিন, আত্মীয়-বন্ধুরা চিরকাল সুনাম করবে!

দেবীর মন্দিরের পাশেই রয়েছে এক প্রাচীন শিবমন্দির—যা এই স্থানটির তান্ত্রিক মাহাত্ম্যকে আরও গভীর করে তোলে। যাঁরা একবার এখানে এসেছেন, তাঁরা বলেন—মায়ের চরণে এক আশ্চর্য শান্তি পাওয়া যায়। ধনতেরাসে যখন সারা দেশে ধন-সম্পদের আরাধনা হয়, তখন এই বাংলার মাটিতে ভক্তরা ধন নয়, রোগমুক্ত শরীর এবং শান্ত মনে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। 

bengal dhanteras