ধনতেরস কী
ধনতেরস শব্দটি ধন ও তেরস শব্দ নিয়ে তৈরি। এই তিথিতে কিছু কিনলে তা ১৩ গুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেকে একে ধনদা ত্রয়োদশীও বলেন। কারণ, সমুদ্র মন্থনের সময় দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে অমৃতের পাত্র হাতে বৈদ্যরাজ ভগবান ধন্বন্তরী উঠে এসেছিলেন। ভগবতী লক্ষ্মী ধনের দেবী। আর এই তিথিতে ভগবান ধন্বন্তরীর জন্মজয়ন্তী। এই তিথিতে ধনের দেবী লক্ষ্মী, ধনপতি কুবের, বৈদ্যরাজ ধন্বন্তরীর উপাসনা করলে অর্থ, স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। কথিত আছে কার্তিক মাসে কৃষ্ণা ত্রয়োদশীর এই তিথিতে স্বামীর চারপাশে প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং অলঙ্কার ছড়িয়ে সর্পবেশী যমরাজকেও দিগভ্রান্ত করেছিলেন এক রাজবধূ।
ধনতেরসে শুভক্ষণ
ধনতেরসে ভগবতী লক্ষ্মী, ধনপতি কুবের এবং বৈদ্যরাজ ধন্বন্তরীর পুজো করা হয়।
পুজোর শুভক্ষণ- সন্ধ্যা ৫টা ৪৭ মিনিট থেকে রাত ৭টা ৪৭ মিনিট।
কেনাকাটার শুভক্ষণ- ১০ নভেম্বর (শুক্রবার) দুপুর ২টো ৩৫ মিনিট থেকে ১১ নভেম্বর (শনিবার) দুপুর ১টা ৫৭ মিনিট।
শহরভিত্তিক কেনাকাটার শুভক্ষণ
কলকাতা- সন্ধ্যা ৫টা ১৩ মিনিট থেকে রাত ৭টা ১১ মিনিট।
দিল্লি- সন্ধ্যা ৫টা ৪৭ মিনিট থেকে রাত ৭টা ৪৩ মিনিট।
চেন্নাই- সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত্রি ৭টা ৪৩ মিনিট।
হায়দরাবাদ- সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা ০১ মিনিট।
গুরুগ্রাম- সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিট থেকে রাত্রি ৭টা ৪৪ মিনিট।
মুম্বই- সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিট থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিট।
বেঙ্গালুরু- সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে রাত ৮টা ১৩ মিনিট।
আমেদাবাদ- সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ১৩ মিনিট।
নয়ডা- সন্ধ্যা ৫টা ৪৭ মিনিট থেকে রাত ৭টা ৪২ মিনিট।
ধনতেরসে কারা কী কিনবেন?
ধনতেরসে সোনা, রুপো, বাসন, গাড়ি, কুবের যন্ত্র কেনার চল আছে। সঠিক জিনিস কিনলে নাকি মালামাল হওয়া যায়। তাই কেউ কেনেন সোনা, রুপো। কেউ পিতল বা অন্য কিছু। কিন্তু, যে কেউ যে কোনও কিছু কিনলেই লাভবান হতে পারবেন, এমনটা নয়। নিয়ম হল, রাশি অনুযায়ী জিনিস কিনতে হয়। জ্যোতিষীরা বলছেন, ধনতেরস থেকে দীপাবলি, এই সময়ে মেষ, বৃষ, মিথুন, কর্কট, সিংহ কন্যা- ৬টি রাশির জাতকরা বিভিন্ন যোগের কারণে রাশি মিলিয়ে জিনিস কিনলেই পাবেন সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি। এছাড়া, অন্য রাশির জাতকদেরও অগ্রগতির জন্য বিশেষ দ্রব্য কিনতে হবে।
মেষ- সোনার গয়না।
বৃষ- জামাকাপড়, রুপোর গয়না।
মিথুন- মূল্যবান পাথর।
কর্কট- সাদা (চিনি, চাল) রঙের জিনিস, রুপোর বাসন, রুপোর গয়না।
সিংহ- ইলেকট্রনিক্স জিনিস।
কন্যা- আসবাব, সবুজ জিনিসপত্র, রত্ন।
তুলা- সুগন্ধি দ্রব্য।
মকর- সিল্কের পোশাক।
কুম্ভ- ইলেকট্রিকের জিনিস।
মিন- হলুদ রঙের জিনিস।
কী কিনবেন, কেন কিনবেন
ধনতেরসে ঝাঁটা কিনলে লক্ষ্মীলাভ হয়। পুরোনো ঋণ দ্রুত শোধ হয়।
ধনে কিনে রোপন করলে জীবনে অর্থাভাব হয় না।
গোমতী চক্র কিনলে লক্ষ্মী প্রসন্ন হন।
লক্ষ্মী-গণেশ ও কুবেরের মাটির মূর্তি কিনলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি, অর্থের প্রাচুর্য আসে।
গোটা হলুদ, পান, সুপারি, ধান, পাঁচটি হলুদ কড়ি কিনে লক্ষ্মীর চরণে নিবেদন করলে ধন লাভ হয়, কেরিয়ার-ব্যবসায় উন্নতি হয়।
নুনের ঢ্যালা কিনলে আর্থিক সংকট, বাস্তু দোষ, রাহুর অশুভ প্রভাব দূর হয়।
আরও পড়ুন- কুষ্ঠ থেকে বাঁচতে এই মন্দিরের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নবাব মীরজাফর, দেবী এখানে বিমলা
কী কিনবেন না, কেন কিনবেন না
প্লাস্টিকের জিনিস, অ্যালুমিনিয়মের বাসন, ছুরি, কাচি কিনলে পরিবারে দারিদ্র্য নেমে আসে।
লোহা, ধারাল দ্রব্য কিনলে দুর্ভাগ্য নিত্যসঙ্গী হয়।
কাচের জিনিস, কৃত্রিম গয়না কিনলে উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি হয়।
কালো পোশাক, মাটির বাসন কিনলে পরিবারিক উন্নতি, সুখ-শান্তি নষ্ট হয়।
বাড়ি থেকে কাউকে নুন দিলে, টাকা ধার দিলে, টাকা ধার নিলে লক্ষ্মী চলে যায়।