বাংলার বিভিন্ন কোণে ছড়িয়ে রয়েছে বহু সাধন ক্ষেত্র। কোথাও সাধকদের সিদ্ধিতে সেই ক্ষেত্রের নাম ছড়িয়ে পড়েছে দূর-দূরান্তে। কোথাও আবার, ঈশ্বর তাঁর অপার করুণায় ভক্তদের কামনা-বাসনা পূরণ করেছেন। তাতেও সেই সাধনক্ষেত্রের খ্যাতি বেড়েছে। বহু দূর এলাকা থেকে সেই খ্যাতি শুনে নিজের কামনা-বাসনা পূরণ করতে ছুটে এসেছে ভক্ত। পেয়েছেন ঈশ্বরের আশীর্বাদ।
এমনই এক সাধনক্ষেত্র রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মজিলপুরে। জয়নগর-মজিলপুর স্টেশনে নেমে কয়েক পা এগোলেই পড়বে পিচরাস্তা। সেই পিচরাস্তা ধরে কয়েক পা পরেই ধন্বন্তরী দেবীর মন্দির। স্টেশন থেকে ভ্যানেও মন্দিরে যাওয়া যায়। কথিত আছে ৪০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরে দেবীর স্বপ্নাদেশ থেকে পাওয়া ওষুধ দেওয়া হয়। যা খেয়ে সুস্থ হয়ে যান ভক্তরা।
গ্যাস এবং অম্বলের রোগ ঘরে ঘরে। সেই সব রোগ থেকে বহু ভয়ানক রোগের জন্ম হয়। এই সমস্ত রোগ দেবীর স্বপ্নাদেশ পাওয়া ওষুধ খেলে সেরে যায়। সেই কারণেই দেবীর নাম ধন্বন্তরী। যেন তিনি স্বর্গের বৈদ্যরাজ ধন্বন্তরীর মতই রোগ সারিয়ে দিচ্ছেন। সেকথা মাথায় রেখেই ভক্তরা দেবীকে ডাকেন ধন্বন্তরী নামে।
আরও পড়ুন- বয়স কত, জানেন না কেউই, রহস্য আর অলৌকিকত্ব জড়িয়ে বাংলার এই মন্দিরে
দেবীর এই রোগ সারানোর ওষুধ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় করেন ধন্বন্তরী মন্দিরে। সপ্তাহে প্রতিদিনই মন্দিরে ভিড় হয়। তার মধ্যে শনি-মঙ্গলবারে ভিড় একটু বেশি হয়। এছাড়া অমাবস্যা, কালীপুজোয় ভিড় চরম আকার ধারণ করে। বৈশাখ মাসে টানা ১৫দিন মন্দির প্রাঙ্গণে মেলা বসে। এই ১৫ দিনই বিশেষ উৎসবের অঙ্গ হিসেবে দেবীর বেশ বদল হয়।
দেবীর মূর্তিটি নিমকাঠের। দেবীর রং কালো। বসন পরিহিতা। দেবী অলঙ্কারে সজ্জিতা। অন্যানা কালীমূর্তির মতই দেবীর একহাতে রয়েছে খাঁড়া। অন্যহাতে রয়েছে নরমুণ্ড। পাশাপাশি একহাতে তিনি বরাভয় প্রদান করছেন। দেবীর পদতলে রয়েছেন শিব। বংশপরম্পরায় চক্রবর্তী পরিবার এই মন্দিরের সেবায়েত। তাঁদের পূর্বপুরুষ রাজেন্দ্রলাল চক্রবর্তীর সময় থেকে দেবীর আরাধনা হয়ে আসছে মজিলপুরের এই চক্রবর্তী বাড়িতে।