শরীরে ডায়াবেটিসের উপক্রম মানেই নানান রোগের সূত্রপাত। এর হাত ধরে একে একে বাসা বাঁধে নানান দুরারোগ্য ব্যধি। আর সময় যখন অতিমারির, তখন তো আর কোনও কথাই নেই। বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, সবথেকে বেশি করোনাতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ডায়াবেটিস রোগীদের।
ডায়াবেটিস শুধু রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে না, তার সঙ্গে ইনসুলিনের মাত্রাও কমিয়ে দেয়। যার ফলে রক্তপ্রবাহে অনেক সময় সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি, পুষ্টি জোগান দিতে এবং সুস্থ থাকতে গেলে প্রচুর কঠোর পরিশ্রম করতে হয় ডায়াবেটিক রোগীদের। তথ্য অনুযায়ী, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যেই ভাইরাসের সংক্রমণের সুযোগ অবশ্যই বেশি এবং তাতে প্রাণঘাতী ঝুঁকিও থাকছে অনেকেরই। তাই সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। আবার অনেক রোগীদের মধ্যে কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরেও নতুন করে ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা গেছে।
ইউরোপীয় জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, উচ্চতর প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া এবং এমনকি হাইপারকোয়গুলেবল অবস্থার মতো বেশ কয়েকটি কারণ রোগের তীব্রতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এখানেই শেষ নয়! ডায়াবেটিসে আগে থেকে বিদ্যমান কোমরবিডিটি যেমন হাইপারটেনশন, করোনারি আর্টারি ডিজিজ এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ প্রাগনোসিসকে আরও খারাপ করে। এমনকি ডায়াবেটিসের চিকিৎসার সময়ও হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে এবং ক্লিনিকাল ফলাফলকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
তাহলে, নিজেকে সুস্থ রাখবেন কীভাবে? স্বযত্ন একমাত্র উপায় এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে ভাল থাকতে!
• ব্যালেন্স ডায়েট বজায় রাখুন: খাবার প্রয়োজন অনুযায়ী খান। সঠিক পরিমাণে প্রোটিন-ভাল ফ্যাট, ভিটামিন অন্তর্ভুক্ত করেছেন কিনা খেয়াল রাখুন। কার্বোহাইড্রেট, ক্যালরি এবং চিনিযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন। তাজা ফল, সবজি, ডাল এবং শাকসবজি অবশ্যই খান। দুধ এবং চিকেন সপ্তাহে দুবার খেতে পারেন।
• নিয়মিত শরীরচর্চা করুন: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যায়াম কিংবা মর্নিং ওয়াক করতে ভুলবেন না। সঙ্গে অ্যারোবিক্স, পুশ আপস, স্কোয়াড করতে পারেন। সোজা কথায় এক জায়গায় বসে না থেকে শরীর চালনা করুন।
• নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খান: ডায়েটিশিয়ানের সাহায্যে খাবারের পরিকল্পনা করতে পারেন। প্রতিদিন সময়মতো খাবার খান। পরিমাণে কম কিন্তু বারে বেশি ভাবে খাবার খাওয়া অভ্যাস করুন। কী কী খাদ্য সামগ্রী আপনাকে খেতে হবে তার তালিকা তৈরি করুন। কোন খাবার থেকে কতটা পুষ্টি পাচ্ছেন তার পরেই আপনাকে অবশ্যই খাবার বা জলখাবার ঠিক করতে হবে। লবণ এবং ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন। ইনসুলিন প্রতিরোধের মোকাবেলায় সালাদ বা স্যুপ খেতে পারেন।
আরও পড়ুন কোভিডের পর চুল পড়ছে অত্যাধিক মাত্রায়? রইল কিছু টিপস
• নিত্যদিনের ওষুধ সেবন করুন: ওষুধ ছাড়া কিন্তু ডায়াবেটিক রোগীদের নিস্তার নেই। কোনও কারণেই তা যেন স্কিপ না হয়! এবং তার থেকেও বড় কথা, অসুস্থ রোগীদের এড়িয়ে চলুন! নিজের হাইজিন মেনে চলুন। মাস্ক পরতে ভুলবেন না। শরীরে কোনও সমস্যা হলে চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলুন।
তার সঙ্গে, আরও যে দুটি বিষয় সম্পর্কে ধ্যান রাখবেন! বিশ্রাম নেওয়ার বিষয়ে কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে। ঘুম কমপক্ষে আট ঘণ্টা হওয়া দরকার। এবং নিজেকে চাপমুক্ত রাখুন। বেশি ভাবনা চিন্তা একদম বন্ধ করে দিন। খুশিতে থাকুন, আনন্দে থাকুন! আর অবশ্যই যত্নে থাকুন!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন