একেতেই শীতকাল তার মধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ, মানুষের মধ্যে ইমিউনিটি এমনই কম। ঠিক সেই সময়েই দাঁড়িয়ে যেটুকু খেয়াল করা যায়, ডায়াবেটিক এবং হাই ব্লাড প্রেসারের রোগীদের মধ্যে সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। যারা ডায়াবেটিক অথবা সুগারের রোগী, তাদের খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে প্রথম থেকেই সতর্কতা রাখতে হয়। কিন্তু কোভিড পরবর্তীতে খিদে কমে যাওয়া, বমি ভাব ইত্যাদি থেকেও কিন্তু প্রচন্ড সমস্যায় পড়তে পারেন মানুষ।
চিকিৎসকরা কী বলছেন এই প্রসঙ্গে?
ডাক্তার বন্সী সাবু এবং ডাক্তার অমিত গুপ্তা বলছেন, মানুষ এমনিও বেশ অনেকদিন ধরেই বাড়িতে এবং সেই সময়টি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, ডায়াবেটিক এবং হাই ব্লাড সুগার রোগীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে ভারতবর্ষ জুড়ে। কম করে ৭৪ কোটির ওপর ডায়াবেটিস রোগী রয়েছেন। তারা অতিরিক্ত জানিয়েছেন, যে ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা এর সঙ্গে বেড়ে গেলেও কিন্তু বেশ সমস্যা দেখা যায়।
তবে তারা আরও জানিয়েছেন, শুধু অতিমারি নয় শীতকালেও কিন্তু যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হয় তাদের। কীরকম সমস্যায় পড়েন তারা?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছে, তাপমাত্রা যত কমতে থাকে ততই কিন্তু শরীরে ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা বাড়তে থাকে। এবং বিশেষ করে এই সময় অত্যধিক কার্ব এবং সুগার জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছে বাড়তে থাকে। সুতরাং রোগের মাত্রাও বাড়তে থাকে। সঙ্গেই মানুষের বাইরে বেরতে কষ্ট হয়, নড়াচড়ায় ব্যাঘাত ঘটে। তীব্র গতিতে বাড়তে পারে সুগারের মাত্রা।
সঙ্গেই তারা জানাচ্ছেন, যত ঠান্ডা বাড়তে থাকে ততই কিন্তু মানুষের ফ্লুইড খাওয়ার পরিমাণ কমতে থাকে, জল পিপাসা হ্রাস পায়। তাই শরীর কিন্তু শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। ডায়াবেটিক রোগীদের পক্ষে শরীরে আদ্রতা বজায় রাখা খুব দরকার।
কীভাবে তারা নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন?
- বিশেষ করে শীতকালে কিন্তু যেকোনও ডায়াবেটিক এবং ব্লাড সুগার রোগীদের সতর্ক থাকা উচিত। বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। যেমন :
- প্রতিদিনের ব্লাড সুগার লেভেল পরীক্ষা করা খুব দরকার। বাড়িতে মেশিন কিনে রাখুন। তিন দফায় পরীক্ষা করা খুব দরকারী। তার সঙ্গেই গ্লুকমিটারের ব্যবহার করলে আপনার পক্ষেই ভাল। যদি গন্ডগোল বোঝেন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের দিকে নজর রাখা খুব দরকার। অর্থাৎ, বেশিরভাগ ডায়াবেটিক রোগীদের আলসার এবং ইনফেকশনের সমস্যা দেখা যায়। তাই এই সময়, পায়ে মোজা পড়তে হবে, নরম জুতো পড়া খুব দরকারী। বিশেষ করে পা ফুলছে কিনা সেই দিকে নজর দিন।
- শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে কিনা, সেইদিকে দেখুন। শরীরে হাইড্রেশন বজায় রাখা খুব দরকার। শীতকালে মানুষ বেশিরভাগ সময় ঘরেই থাকেন, তবে বেশি করে জল খান, শশা খাওয়ার অভ্যাস করুন। বাড়িতে সবসময় হিটার জ্বালিয়ে রাখবেন না। সাধারণ তাপমাত্রায় থাকা জরুরি।
- ব্যায়াম কিংবা যোগা করা খুব দরকারী। যত কষ্টই হোক না কেন, বাদ দিলে চলবে না। ত্রিশ মিনিট মত ফ্রি হ্যান্ড করা খুব দরকার। বাড়িতে বসেই ব্যায়াম করুন। বরং হাত পা সচল রাখতে ব্যায়াম করতেই হবে।
- মাথায় রাখবেন, শীতকালে শরীরের মেটাবোলিজম ভাল রাখা দরকারি। এইসময় চিনির থেকে বেশি জাগেরী ব্যবহার করুন। মধু খেলে অল্প মাত্রায় ভাল। শরীরের যত্ন নিন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন