বদলেছে মানুষের জীবনযাত্রা! নিজেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ছাড়াও বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, সঙ্গে স্যানিটাইজার মানুষের নিত্য জীবনের সঙ্গী। বাইরে থেকে এসে প্রায় এক পর্যায়ের লড়াই নিজেকে সুস্থ রাখতে। কিন্তু তারপরেও, বয়সের কাছে জিতে যাচ্ছে রোগ, অর্থাৎ বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অল্পবয়সীদের তুলনায় বেশ কম। করোনা আবহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সঠিক রাখা এক নিরন্তর প্রচেষ্টা।
বয়সের ভাঁজ তো বটেই তবে চিন্তার ঘেরাটোপে ডায়াবেটিস রোগীদের জুড়ি মেলা ভার। ডায়াবেটিস সমস্ত সমস্যার সূত্রপাত। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। হাই ব্লাড সুগারের হাত ধরেই একে একে নানান রোগের আগমন ঘটে মানবদেহে। এমনকি করোনাও! চিকিৎসকদের তথ্য অনুযায়ী, ডায়াবেটিস রোগীদের করোনা হওয়ার আশঙ্কা বেশি। লিভঅল্টলাইফের প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা বিবেক সুব্রহ্মণ্য়ম বলেন, কোভিড থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে ডায়াবেটিক রোগীদের অবশ্যই কিছু সতর্কতা এবং নিয়মাবলী অবলম্বন করতে হবে।
• শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম: ফুসফুসের ক্ষমতা উন্নত করতে এবং অক্সিজেনের মাত্রা উচ্চ এবং স্থিতিশীল রাখতে ব্যায়াম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে যোগব্যায়াম করতে পারেন।
• গার্গলিং এবং তেল মাসাজ: গার্গলিং জীবাণু মারতে সাহায্য করে এবং খালি পেটে বিভিন্ন রকম ভেষজ তেল দিয়ে মাসাজ মৌখিক গহ্বরকে স্যানিটাইজ করতে সাহায্য করে। অবশ্যই যত্ন নিতে সপ্তাহে তিন থেকে চার বার গার্গল করুন।
• নিয়মিত ওষুধ: ডায়াবেটিস রোগীরা, যাঁরা প্রতিদিনের ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁদের রক্তের শর্করা যাতে গ্রহণযোগ্য মাত্রা ছাড়িয়ে না যায় সেই দিকে তাদের নিয়মিতভাবে পরিচালনা করতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ যুক্ত রোগী আক্রান্ত হলে কোভিড পূর্বাভাসের অবনতি হতে পারে।
• চিনি নিয়ন্ত্রণ: রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে পুষ্টি একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। রক্তে গ্লুকোজ কমাতে এবং শক্তি বজায় রাখতে কম কার্ব এবং উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। প্রোটিন গ্রহণ কম থেকে মাঝারি পর্যায়ে রাখুন। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং অবশিষ্ট সময় খাবার থেকে বিরত থাকুন। এটি শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
• তাজা শাকসবজি এবং ফল খাওয়া অভ্যাস করুন: প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজগুলি পূরণ করার জন্য একটি ডায়েটের প্রধান অংশ হিসাবে বিভিন্ন ধরনের তাজা ফল এবং সবজি গ্রহণ করুন। আপেল, তরমুজ, আঙুর, আনারস, পেঁপে, কলা, সবুজ শাকসবজি, বেল মরিচ, স্কোয়াশ, টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন, সব ক্রুসিফেরাস সবজি ইত্যাদি।
• পরিপূরক: প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খাদ্যে জিংকের সাথে ভিটামিন সি, ডি এবং এ জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করুন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে একই ফুড হ্যাবিট চালিয়ে যাবেন না।
• দিনে দুবার রক্তচাপ পরিমাপ করুন: রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৯৫ শতাংশের কম অক্সিজেন স্যাচুরেশন সংক্রমণের প্রাথমিক সতর্কতা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
• লক্ষণগুলির প্রাথমিক স্বীকৃতি এবং সক্রিয় চিকিত্সা: হালকা জ্বর, গলা ব্যথা, ক্লান্তি, শ্বাস নিতে অসুবিধা ইত্যাদি লক্ষণগুলি লক্ষ্য করুন, অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
• ভাল জীবনযাপনের অভ্যাস: জলীয় থাকার জন্য প্রতি ঘন্টা চেষ্টা করুন এবং জল পান করুন। ঘুমের সময়সূচী প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা হওয়া উচিত। হতাশা এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে মেডিটেশন এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য সময় বের করার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন আপনি কি ডায়াবেটিক? তাহলে কোন কোন ফল খাবেন জেনে নিন
• দূরত্ব বজায় রাখুন: ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা থেকে নিজেকে বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য কোভিড নির্দেশিকা অনুসরণ করুন। এছাড়াও, যদি বাড়িতে কারওর শরীরে ভাইরাসের লক্ষণ থাকে তবে নিরাপদ থাকার জন্য আপনার দূরত্ব বজায় রাখুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন