মাথা ঘোরানোর কোনও সময় অসময় নেই। হঠাৎ করেই যে কারুর শারীরিক এই সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় শুয়ে শুয়েও মাথা ঘোরানোর অনুভব করেন অনেকেই। একরকম নাগরদোলার মত অনুভব হয় বেশ কিছু মানুষেরই। আবার অনেক সময় শোয়া থেকে হঠাৎ করে উঠে দাড়ালে মাথা ঘোরানো খুব স্বাভাবিক বিষয়। আদৌ এর সঠিক কারণ কি? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
ফর্টিস নেটওয়ার্ক হাসপাতালের হিরানন্দানি হাসপাতালের সিনিয়র নিউরোলজিস্ট ডা পবন ওঝা বলেন, এটি ভার্টিগোর লক্ষণ হতে পারে। মূর্ছা যাওয়া, শরীরের দুর্বলতা, ভারসাম্য হারানোর মত অনেক রকম শরীরের সমস্যা দেখা যায়। এই অনুভূতিগুলি কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং চলাফেরার সঙ্গে আরও খারাপ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ভার্টিগোর লক্ষণের মধ্যে কানের তুলনায় মাথায় সংযুক্ত সবকিছুই যখন বেশিমাত্রায় অনুভূত হয় তখন শারীরিক অবস্থান সঠিক রাখার জন্য মস্তিষ্ক নিজের সমন্বিত পদ্ধতিতেই কাজ করে। এতে শরীরের ভারসাম্য এদিক ওদিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এটি কি বিরাট মাপের কোনও সমস্যা? এই প্রসঙ্গেই মতামত বেশ ভিন্ন। এক একজন মানুষ বিশেষে এর ধরন এবং প্রভাব আলদা। তবে অতিরিক্ত মাথা ঘোরানোর লক্ষণ কিন্তু ভাল নয়। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা যেমন অতিরিক্ত জ্বর, বুকে সাময়িক ব্যথা, অনিয়মিত হার্টবিট, আবার অনেকের ক্ষেত্রে বমি ভাব এমনকি ঘাড়-মাথা শক্ত হয়ে যাওয়ার লক্ষ্যণীয়। মূলত কানের ভেতরের তরল পদার্থের ক্ষরণ ক্রমশ কমে যায় এবং সূত্রপাত এর থেকেও হতে পারে। মস্তিষ্কে এর থেকে ভুল সংকেত প্রবাহিত হয়। যার ফলে কোষের স্বাভাবিক ভাঙন ঘটে। অনেক সময় মাথায় আঘাত থেকেও এরম হতেই পারে। ষাট বয়সর্ধ মানুষজনের এই বিষয়ে বেশি সতর্ক হওয়া উচিত। ধূমপান মদ্যপান কম করা উচিত। অনেক সময় মাথা ঘোরানোর কারণ স্ট্রোক হতে পারে। মস্তিষ্কের স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ হাত বা পায়ে দুর্বলতা বা অসাড়তা, মুখ বেকে যাওয়া ইত্যাদি।
কীভাবে একটু হলেও সুস্থ থাকবেন?
• সোডিয়াম যুক্ত খাবার গ্রহণ কম করুন
• ক্যাফিন, চকোলেট, অ্যালকোহল এবং তামাক এড়িয়ে চলুন
• স্ট্রোক জাতীয় সমস্যা হলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন
• মস্তিষ্কের টিউমার বা মস্তিষ্ক এবং ঘাড়ে আঘাত ইত্যাদি ক্ষেত্রে সার্জিক্যাল চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে এবং এর ফলেও মাথা ঘোরানো স্বাভাবিক ব্যাপার।
• হাঁটার সময় বা যখনই মাথা ঘোরাবে তখন স্থির বস্তুর দিকে মনোনিবেশ করুন।
• শক্ত তল এবং নিম্ন হিলযুক্ত জুতা পরুন।
• হাঁটার সময় পিচ্ছিল বা অসম পৃষ্ঠতল এড়িয়ে চলুন।
অযথা ঘাবড়াবেন না, প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন