মহালয়া কী?
মহালয়া হল পিতৃপক্ষের শেষ দিন। এই দিন প্রয়াত পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পণ করার রীতি প্রচলিত। অমাবস্যা তিথির মধ্যে তর্পণ করা হয়। অমাবস্যা শেষ হলে শুরু হয় প্রতিপদ তিথি। প্রতিপদ তিথি থেকেই শুরু হয় দেবীপক্ষ।
এবারের অমাবস্যা তিথি
এবার অমাবস্যা তিথি শুরু হয়েছে শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন (১৩ অক্টোবর) রাত ৯টা ২৬ মিনিট ১০ সেকেন্ডে। ছাড়বে, শনিবার ২৬ আশ্বিন (১৪ অক্টোবর) রাত ১০টা ৪৯ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডে।
পিতৃপক্ষ কী?
শাস্ত্রমতে সূর্য কন্যারাশিতে প্রবেশ করলে পিতৃপক্ষের সূচনা হয়। মহাভারত অনুসারে, কুন্তীপুত্র কর্ণ স্বর্গে যাওয়ার পর তাঁকে শুধু মণিমাণিক্য খেতে দেওয়া হচ্ছিল। অন্ন-জলের ব্যবস্থা ছিল না। ইন্দ্রের কাছে কর্ণ এর কারণ জানতে চেয়েছিলেন। ইন্দ্র জানিয়েছিলেন, কর্ণ জীবিত অবস্থায় কখনও পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে জল দেননি। সেই জন্য, এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। কর্ণ জানান, তিনি পিতৃপুরুষের কথা জানতেন না। যখন জানলেন, কিছু করার ছিল না। কর্ণের কথার সত্যতা বুঝতে পেরে ইন্দ্র তাঁকে এক পক্ষকালের জন্য মর্ত্যে গিয়ে পিতৃপুরুষকে অন্ন-জল দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। ইন্দ্রের কথা মেনে কর্ণ মর্ত্যে এসে একপক্ষকাল পিতৃপুরুষকে অন্ন-জল দিয়েছিলেন। সেই পক্ষই পরিচিত হয় পিতৃপক্ষ নামে।
আরও পড়ুন- বাংলার জাগ্রত সতীপীঠ! ভক্তদের ভরসাস্থল, স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্রও
মহালয়ায় কেন তর্পণ করা হয়?
পিতৃপক্ষের সূচনা হলে, পূর্বপুরুষরা পিতৃলোক ত্যাগ করে উত্তরপুরুষের গৃহে অবস্থান করেন। শাস্ত্রমতে পিতৃপক্ষের শেষে সূর্য বৃশ্চিক রাশিতে প্রবেশ করে। সেই সময় পিতৃপুরুষরা ফের স্বর্গলোকে ফিরে যান। ত্রেতা যুগে লঙ্কাবিজয়ের উদ্দেশ্যে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন। সেসময় দুর্গাপূজা হত বসন্তকালে। কিন্তু, রামচন্দ্রের পুজোর সময় শরৎকাল হওয়ায়, তাঁকে দেবীর অকাল বোধন করতে হয়। হিন্দু ধর্মে কোনও শুভ কাজ করতে হলে প্রয়াত পূর্বজ এবং জীবজগতের উদ্দেশ্যে তর্পণ করতে হয়। শ্রীরামচন্দ্রও মহালয়া তিথিতে পূর্বজদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেছিলেন। সেই থেকে মহালয়া তিথিতে তর্পণের প্রথা চলে আসছে।