বাংলার ইতিহাস শুধু রাজ-রাজাদের কাহিনি নয়। এই ইতিহাসে আছে ধর্মকথাও। মিশে আছে বাংলার শাশ্বত ধর্মীয় ঐতিহ্য। যার অনেককিছুই বিদেশি শাসকদের ইচ্ছাকৃত অবহেলায়, উপনিবেশ পরবর্তী সময়ের যন্ত্রণায় ব্যাপক প্রচারের আলো থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তারপরও অবশ্য সেই সব ধর্মীয় স্থান আজও তার মাহাত্ম্য ধরে রেখেছে অমলিনভাবে। এমনই এক ধর্মীয় ইতিহাসে, অলৌকিক ঘটনাবলীতে সিক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দির দোহালিয়া কালীমন্দির।
এখানে রয়েছে দেবী দক্ষিণাকালীর মন্দির। জাগ্রত দেবী ব্যাঘ্ররূপিণী। কথিত আছে, এই দেবীর আরাধনা করলে অন্ধত্ব নাশ নয়। এমন বহু কাহিনিও প্রচলিত রয়েছে এই মন্দিরকে ঘিরে। মন্দিরের পাশেই আছে সন্ন্যাসীতলা। যে সন্ন্যাসীতলায় রয়েছে এক নাগা সন্ন্যাসীর সমাধি। কথিত আছে, দেবী ওই নাগা সন্ন্যাসীর সেবা করেছিলেন। তাঁর জীবন রক্ষা করেছিলেন। তাঁকে অন্ধ করে দিয়েও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন চক্ষু। শুধু তাই নয়, এই মন্দির ঘিরে রয়েছে একের পর এক সিদ্ধপুরুষের সমাধি। যাঁদের দেবী দেখা দিয়েছিলেন। আর, তাঁদের মাধ্যমে পূরণ করেছেন বহু লোকের মনোবাঞ্ছা।
এই মন্দির সংলগ্ন একটি পুকুর আছে। যে পুকুরে স্নান করে, তবে মন্দিরে পুজো দিতে হয়। একবার এই পুকুরের জন্য অন্য কাজে ব্যবহার হয়েছিল, তাতে নাকি পুকুরের পাড় ফেটে গিয়েছিল। তারপর থেকে আর, ভক্তরা এই পুকুরের জল অন্য কাজে ব্যবহার করেন না। পুকুরের পাড়ের মাটিও যেমনকার তেমনি আছে। কোনও সমস্যা হয়নি। এমন হাজারো অলৌকিক কাহিনি আছে এই মন্দিরকে ঘিরে।
আরও পড়ুন- যে মন্দিরে আজও প্রতিরাতে আসেন ভগবান রাধাকৃষ্ণ, রেখে যান তাঁদের উপস্থিতির ছাপ
আশপাশের বহু বাসিন্দাই জানিয়েছেন, তাঁরা দেবীকে নানা রূপে স্বচক্ষে দেখেছেন। তার মধ্যে এক ব্যক্তি তো নিজের মেয়ে রূপে পর্যন্ত দেবীর দেখা পেয়েছেন। তাঁর পরিবারের দাবি, একবার মেয়ে নোংরা থেকে কিছু কুড়িয়ে খাচ্ছিল। তাই দেখে ওই ব্যক্তি রেগে গিয়ে মেয়েকে লাঠিপেটা করতে যান। তখনই জলজ্যান্ত মেয়েটি চোখের সামনে থেকে উধাও হয়ে যায়। এমন বহু অলৌকিক ঘটনারই সাক্ষী হয়েছেন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। আর, অন্ধত্ব দূর করার জন্য ঘনিষ্ঠদের থেকে জানার পর দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা ছুটে আসেন এই মন্দিরে।