Advertisment

পুজোর শপিং এবার ট্রামে চড়ে, ট্রামের মধ্যেই

অনলাইন, অফলাইন- আজকের পর সব এখন ওল্ড ট্রেন্ড। ইতিহাস আর বর্তমানকে এক সুতোয় বেঁধে ফিউচার গ্রুপের fbb লঞ্চ করল নতুন আদলের ট্রাম, যাতে থাকবে নতুন পোশাকের কালেকশন। দুর্গাপুজোর বাজারের মুকুটে নতুন পালক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

২৪ সেপ্টেম্বর স্বয়ং বুম্বা দা শপিং সারবেন এই গ্ল্যাম ট্রামে।

পোশাকি রঙ সাদা, কমলা। ঘড়ঘড় শব্দ সেই আটের দশকের মতই আছে। গতি ধীর। তবে চটকদারিটুকু চোখে পড়ার মতন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা, সঙ্গে ঝকঝকে আলো। টুংটাং ঘণ্টির চেনা শব্দ সঙ্গে নিয়ে সে এগিয়ে যাবে শহর কলকাতার মাঝরাস্তা দিয়ে।

Advertisment

এ ট্রাম নতুন। যাকে পরিণত করা হয়েছে শপিং ডেস্টিনেশন হিসাবে। তবে এ ডেস্টিনেশন নিজেই যে চলমান। রাস্তা থেকে উঁকি দিলে গুটি কয়েক জামারকাপড় চোখে পড়বে আপনার। হ্যাঁ, পুজোর রকমারি কালেকশন নিয়ে তিলোত্তমায় ঘুরে বেড়াবে এই নিউ ফ্যাশনের ট্রামটি। এর গালভরা নাম, গ্ল্যাম ট্রাম। নারী-পুরুষ, সবারই নতুন ট্রেন্ডের পোশাক মিলবে এই ভ্রাম্যমাণ শপিং ট্রামে। দোকানের চেয়ে দামের ফারাক হবে না বলে আগেভাগেই জানিয়েছে সংস্থা।

publive-image গালভরা নাম, গ্ল্যাম ট্রাম।

ঘড়িতে সন্ধে প্রায় ৬টা। নিয়ম মেনে শহরে সবেমাত্র নামছে অন্ধকার। মোবিল, নোংরা আবর্জনা, আধো আঁধারে পড়ে থাকা নোনাপুকুর ট্রাম ডিপো হঠাৎই ঝকঝক করতে দেখে এলাকার লোকজনের ভুরু কপালে। এখানে কোনো অনুষ্ঠান আবার সম্ভব নাকি! তাও আবার বিগবাজারের। ট্রাম ডিপোর গেটে বিশালাকারের কোম্পানির প্ল্যাকার্ড। গেট দিয়ে ঢোকার সময় কানে এল,“আরে ওই যে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে যে মেয়েটা বইটা করেছে না ও আসবে ”।

publive-image ট্রামের ভিতর থেকে নেমে আসেন অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ অভিনেত্রী মৌনি রায়।

ডিপোর মধ্যে কিছুটা অংশ বড়ো বড়ো প্ল্যাকার্ড দিয়ে ঢেকে দিয়েছে, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাটিতে আঁকা রয়েছে আলপনা। মাঝখানে র‌্যাম্প ওয়াকের জায়গা। ব্যস্ত শিডিউলের মধ্যে পুজোর আমেজ জাগিয়ে তুলতে গোটা চারেক ঢাকে পড়ছে কাঠি। অনুষ্ঠানের কিছু পরে কার্ড বোর্ডের পর্দা সরিয়ে, এগিয়ে এল নতুন ফ্যাশনের ট্রাম। ট্রামটি এসে দাঁড়ায় র‌্যাম্পের সামনে। ট্রামের ভিতর থেকে নেমে আসেন অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ অভিনেত্রী মৌনি রায়। অভিনেত্রীকে স্বাগত জানাতে  একের পর এক ফাটছে কাগজ বোম।

অনলাইন, অফলাইন আজকের পর সব এখন ওল্ড ট্রেন্ড। ইতিহাস আর বর্তমানকে এক সুতোয় বেঁধে ফিউচার গ্রুপের fbb লঞ্চ করল নতুন আদলের ট্রাম, যাতে থাকবে নতুন পোশাকের কালেকশন। মধ্য কলকাতার মধ্যে দিয়ে পুজোর আমেজকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াবে ‘গ্ল্যাম ট্রাম’। শ্যামবাজার থেকে উঠলেন শপিং করতে , পছন্দ হয়ে কেনা শেষ হতে না হতেই দেখবেন পৌছে গেছেন এসপ্ল্যানেড, এমনটাও কিন্তু ঘটতে পারে। এক কামরায় থাকবে মহিলাদের পোশাক, ভিন্ন কামরায় পুরুষদের । পুজোর আগে ৪৫ দিন ধরে শহরে ঘুরবে ট্রামটি। ২৪ সেপ্টেম্বর স্বয়ং বুম্বাদা শপিং সারবেন এই গ্ল্যাম ট্রামে। ট্রাম কোম্পানির সঙ্গে ফিউচার গ্রুপ গাঁটছড়া বেঁধেছে তাদের এই ৪৫ দিনের অভিযানের জন্য। ট্রামের পরিকাঠামো একই, তবে ফলস সিলিং, পোস্টার আর আলোর রোশনাই দেখলে মনে হতেই পারে নতুন ট্রাম।

publive-image গ্ল্যাম ট্রাম লঞ্চে মৌনি রায়

কলকাতা মানেই হাতে টানা রিকশা, ট্রাম , হাওড়া ব্রিজ, কুমারটুলি, ভিক্টোরিয়া। উবেরের উড়ন্ত গাড়ির সময়কালে ট্রামের ব্যবহার কতটা হবে তা জানে ভবিষ্যৎ। তবে fbb যে ভবিষ্যৎকে নতুন দিশা দিতে পারে, সে কথা মনে করছেন অনেকেই।  ফিউচার রিটেল লিমিটেডের এমডি রাকেশ বিয়ানি বলেন, “আগে পুজোর সময় মানুষ এলাকার নাম ধরে বলত ওমুক জায়গায় শপিং করতে যাচ্ছি এখন অনেকেই বলে থাকেন বিগবাজার যাচ্ছি। এই জায়গা বা বিশ্বাসটা তৈরি করতে অনেক কটা বছর কেটে গেছে। আজ ১০০ টা শহর জুড়ে রয়েছে বিগবাজারের শোরুম। অনেক ট্রেন্ডের সাক্ষী বিগ বাজার। ঠিক সেইরকমই ট্রামও শহর কলকাতার অনেক কথা জানে। তাই কলকাতাতেই এই উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে”।

পরিকল্পনার চমকদারিত্ব বিজ্ঞাপনের পক্ষে লাগসই হলেও বাস্তবত কতটা সফল হবে, তা নিয়ে এখনও ভবিষ্যদ্বাণী করা যাচ্ছে না। মাঝপথে স্টক শেষ হলে কী করবেন ক্রেতারা? ট্রাফিক জ্যামের সমস্যা এড়াতে পারবে কি এই ট্রাম? এসব প্রশ্ন থাকছেই। তবে আপাতত সংস্থা মজে আছে নতুন পরিকল্পনার সাফল্যের স্বপ্নে। ঘোষণা করা হয়েছে, এই সংস্থার পোশাক পরা ছবি তুলে তা সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করলে থাকবে পুরস্কারপ্রাপ্তির সম্ভাবনা।

bengali fashion Durga Puja 2019
Advertisment