/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/23/durga-puja-food-2025-09-23-20-15-14.jpg)
Durga Pujo Food: দুর্গাপুজোর খাবার।
Feminist Pujo Celebration: বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এটা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান না। এটি এক অর্থে বাংলার সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস এবং সামাজিক চেতনার প্রতিফলন। তাই বাঙালির কাছে দুর্গাপূজা বিশেষ। একদিকে মণ্ডপে দেবীর আগমন, অন্যদিকে খাবারের বিশাল ভাণ্ডার—সব মিলিয়ে এটা বাঙালির কাছে উৎসব। শুধু পূজা নয়। বাংলার সর্বজনীন উদযাপন।
দেবী দুর্গা শক্তির প্রতীক
দেবী দুর্গা হলেন শক্তির প্রতীক। পুরাণ মতে, তিনি মহিষাসুরকে বধ করে শুভের জয় নিশ্চিত করেছিলেন। কিন্তু দুর্গাপূজার আরেকটি বিশেষ দিক হল, এটি এক নারীবাদী উৎসব। দেবী কেবল একজন মা নন, তিনি সংগ্রামী, যোদ্ধা এবং সর্বশক্তিময়ী নারীর প্রতীক। এ কারণেই বর্তমান প্রজন্ম দুর্গাপূজাকে নারীবাদী উৎসব 'Feminist Celebration' হিসেবেও দাবি করেন।
আরও পড়ুন- নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে সোনার দাম কত, জানুন আপনার শহরের রেট
দুর্গাপূজা ধর্মীয় পরিবেশ থেকে অন্য পরিচিতি তৈরি করে তার বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে। এই বৈশিষ্ট্য হল এর রান্নার সংস্কৃতি। অন্য অনেক হিন্দু উৎসবে যেমন কঠোর নিরামিষভোজনের রীতি আছে, দুর্গাপূজায় কিন্তু তেমনটা নেই। বরং, এই উৎসবে ভোজনই প্রধান আকর্ষণ। অষ্টমীতেই যেমন, সকাল থেকে উপবাস, আর বেলার দিকে প্রসাদ বলতে খিচুড়ি। মুগডাল, ঘি, সবজি দিয়ে রান্না করা এই খিচুড়ির স্বাদ অতুলনীয়। এর সঙ্গে লুচি, ছোলার ডাল আর আলুর দম যেন এক অমোঘ মিশ্রণ।
আরও পড়ুন- নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে মা ব্রহ্মচারিণীর পূজা, মেলে জ্ঞান ও সমৃদ্ধি
নবমীর দিনেই আসে মাংসের পালা। আগে বহু জায়গায় পাঁঠাবলি দেওয়া হত, তবে আজ তা প্রতীকী রূপেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু রান্নার দিক থেকে আমিষ যেন আজও দুর্গাপূজার অন্যতম ঐতিহ্য। বিজয়া দশমীর দিন দেবী বিদায় নেন। সেদিন বাঙালির বাড়ি ভরে ওঠে মিষ্টির সমারোহে—রসগোল্লা, সন্দেশ, রাজভোগ, পাটিসাপটা—তালিকাটা বিরাট।
আরও পড়ুন- নবরাত্রিতে কোন রঙের পোশাক পরলে ভাগ্য হবে উজ্জ্বল?
দুর্গাপূজা মানেই মণ্ডপ ভ্রমণ, নতুন পোশাক, ধূপধুনো আর ঢাকের বাজনা। প্রতিদিন সকালে চণ্ডীপাঠ, সন্ধ্যায় আরতি আর শঙ্খধ্বনি যেন চারপাশ ভরিয়ে তোলে ভক্তির আবহে। অষ্টমীতে কুমারী পূজা আর নবমীতে শ্লোকপাঠ—সব মিলিয়ে দুর্গাপূজা কেবল ভোগের নয়, ভক্তিরও প্রতীক। দুর্গাপূজা নারীশক্তির উদযাপন। দেবী দুর্গা কেবল মন্দ শক্তির বিনাশই করেন না, তিনি নারীর স্বাধীনতা, শক্তি ও সৃষ্টিশীলতার প্রতীক। এই উৎসবে নারীরা কেবল দর্শক নন, তাঁরা নিজেরাই পূজা সংগঠনের নেতৃত্ব দেন, ঢাক বাজান, এমনকী আরতিরও আয়োজন করেন। ফলে দুর্গাপূজা আজকের দিনে নারীর আত্মপ্রকাশের এক মঞ্চও বটে।
শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, আজ প্রবাসী বাঙালিরাও দুর্গাপূজা উদযাপন করেন সমান উৎসাহে। লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, টরন্টো কিংবা সিঙ্গাপুর—সবখানেই দুর্গাপূজা এখন বিশ্বব্যাপী বাংলার উৎসবের পরিচয়। ২০২৫ সালের দুর্গাপূজা তাই কেবল আচার-অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় রীতিনীতিতে সীমাবদ্ধ নয়।
আরও পড়ুন- দুর্গাপূজায় করা হয় চণ্ডীপাঠ, কিন্তু চণ্ডী এবং দেবী দুর্গা কি একই দেবী?
এই উৎসব একদিকে বাংলার রসনার তৃপ্তি। অন্যদিকে নারীশক্তির বিশ্বজনীন উদযাপন। দেবী দুর্গার আগমনে যেমন ভক্তি মেলে, তেমনই ভোজে মেলে আনন্দ। দুর্গাপূজা তাই বাঙালির প্রাণের উৎসব—যেখানে দৈবী শক্তি, ভক্তি, ভোগ আর আনন্দ একসূত্রে গাঁথা রয়েছে।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us