scorecardresearch

যে মন্দির থেকে মহারাজা কংসনারায়ণ বাংলায় দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন

মোগল সম্রাট আকবরের আমলে সুবা বাংলা ও বিহারের দেওয়ান পদে ছিলেন কংসনারায়ণ।

Taherpur_Temple

হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব হল শারদীয় দুর্গাপূজা। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পুজো হয়ে থাকে। কিন্তু, অনেকেই জানেন না, কীভাবে কোথায় বাংলায় দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল। রাজশাহির বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে সর্বপ্রথম এই পুজোর আয়োজন করেছিলেন মহারাজা কংসনারায়ণ। সেই কালের সাক্ষী রাজশাহির বারোনই নদী। এই নদী তাহেরপুরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে।

বর্তমানে এই তাহেরপুর রাজশাহির বাগমারা উপজেলার একটি পৌরসভা। অথচ, কোনও একসময় এই তাহেরপুর ছিল রাজশাহি-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের রাজধানী। রাজশাহি থেকে তাহেরপুরের দূরত্ব ছিল প্রায় ৩৮ কিলোমিটার। রাজশাহি থেকে বাস বা সিএনজি অটোয় চেপে তাহেরপুরে আসা যায়। যাওয়া যায় মহারাজা কংসনারায়ণের মন্দিরে। বর্তমানে এই মন্দির শ্রীশ্রী গোবিন্দ ও দুর্গামাতা মন্দির নামে পরিচিত।

এই মন্দির চত্বরেই রয়েছে রাজা কংসনারায়ণ প্রতিষ্ঠিত শিবমন্দির, রাধাগোবিন্দ মন্দির, কালীমন্দির। আর রয়েছে বঙ্গে দুর্গাপুজোর প্রচলনের সাক্ষী রাজা কংসনারায়ণ প্রতিষ্ঠিত দুর্গামন্দির। ইতিহাস বলছে, ১৪৮০ খ্রিস্টাব্দে ও ৮৮৭ বঙ্গাব্দে রাজা কংসনারায়ণ মানবকল্যাণে এখানে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন। সেই সময় তিনি এই পুজোর জন্য যে অর্থব্যয় করেছিলেন, বর্তমানে তার খরচমূল্য নয় লক্ষ টাকা।

আরও পড়ুন- মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীরা সুস্থ হন যে মন্দিরে, একাধিক আত্মীয়কে এনেছিলেন সারদামণিও

তাহেরপুর রাজবংশ বাংলাদেশের প্রাচীন রাজবংশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই রাজবংশের আদিপুরুষ ছিলেন মৌনভট্ট। আর, বংশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সামন্ত রাজা ছিলেন ইতিহাসখ্যাত কংসনারায়ণ রায়। এই রাজবংশ সুলতানি আমলে চট্টগ্রামে মগ দমনে বীরের ভূমিকা পালন করে। পাঠান আমলে এই বংশের রাজা কংসনারায়ণ রায় কিছুদিন ফৌজদারের ভূমিকাও পালন করেন। মোগল আমলে এসে কিছুকাল বাংলা-বিহারের অস্থায়ী দেওয়ানের দায়িত্বও পালন করেন।

এই সময় তিনি রাজা উপাধি পান। বাংলা মোগলদের কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে সম্রাট আকবর রাজা কংসনারায়ণকে সুবে বাংলার দেওয়ান নিযুক্ত করেন। কিন্তু, যথেষ্ট বয়স হওয়ায় তিনি দেওয়ানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে তাহেরপুরে ফিরে ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। সেই সময় তিনি এক মহাযজ্ঞ করতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত পণ্ডিত রমেশ শাস্ত্রী-সহ অন্যান্য ব্রাহ্মণদের পরামর্শে তিনি বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। ষোড়শ শতকের শেষভাগে তাঁর এই দুর্গাপুজোই ধীরে ধীরে গোটা বাংলায় শারদীয়া দুর্গোৎসব নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Lifestyle news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Durga puja was practiced in this temple at taherpur in rajshahi