Ram Durga: কথিত আছে রাবণকে বধ করতে দেবী দুর্গার অকাল বোধন করেছিলেন রামচন্দ্র। ছোট থেকেই সকলে এই কাহিনি শুনে আসছে। কিন্তু, এটাই কি শেষ কথা? এই প্রশ্নটা এই কারণেই উঠছে, কারণ রামচন্দ্র যে দুর্গাপুজো করেছিলেন, সেই পুজোর পুরোহিত কিন্তু ছিলেন তাঁর শত্রু তথা প্রতিপক্ষ রাবণ। যে রাবণকে বধ করার জন্যই রামচন্দ্র এই দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন।
শুধু তাই নয়। এই পুজোয় রামচন্দ্রের হয়ে রাবণ নিজেই নিজেকে বধের সংকল্প করেছিলেন। তিনি নাকি রামের হয়ে পুজো করতে গিয়ে বলেছিলেন, 'রাবণস্য বধার্থায়'- অর্থাৎ রাবণ বধের জন্য এই সংকল্প করছেন। ধর্মজ্ঞানে প্রবল রাবণকে বধ করা ছাড়া রামচন্দ্রের পক্ষে লঙ্কার দখল নেওয়া সম্ভব ছিল না। সেই রাবণই যেন কার্যত আত্মহত্যার মত নিজের মৃত্যু নিজেই প্রার্থনা করেছিলেন দেবী দুর্গার কাছে। আর, সেই প্রার্থনা তিনি করেছিলেন তাঁর শত্রু রামের হয়ে।
রামচন্দ্রের এই পুজোয় কে উপযুক্ত পুরোহিত হতে পারেন, তা ঠিক করে দিয়েছিলেন আবার প্রজাপতি ব্রহ্মা। তিনিই নাকি পরামর্শ দিয়েছিলেন রাবণকে শ্রীরামচন্দ্রের দুর্গাপুজোর পৌরোহিত্য করার। রাবণ দেবী দুর্গার ভক্ত ছিলেন। রাম-রাবণের যুদ্ধ চলার সময় লঙ্কার বড় বড় বীররা ধরাশায়ী হয়েছিলেন। সেই সময় রাবণ নিজেই দেবী দুর্গার শরণাপন্ন হন। তাতে দেবী কালীরূপে নাকি দেবী দুর্গা রাবণকে দর্শন দিয়েছিলেন। তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন। তাতে রাবণ নাকি অপরাজেয় হয়ে উঠেছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে রাবণকে বধ করতে দেবী দুর্গার শরণাপন্ন হওয়াই স্থির করেন শ্রীরামচন্দ্র। কিন্তু, তখন ছিল শরৎকাল। তাই দেবীর অকালবোধন করতে হয়েছিল। তবে দেবী দুর্গার পুজো সহজ নয়। তাই তা করার জন্য উপযুক্ত পুরোহিতের দরকার ছিল। সেই উপযুক্ত পুরোহিত হিসেবে প্রজাপতি ব্রহ্মা বেছে দিয়েছিলেন রাক্ষসরাজ রাবণকে। এরপরই নাকি রাবণকে তাঁর পুজোর পৌরোহিত্য করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন রামচন্দ্র।
আরও পড়ুন- পদার্থবিদ্যায় নোবেল, দুই বিজ্ঞানী কেন পাচ্ছেন পুরস্কার?
অবশ্য এই কাহিনি বাল্মীকি রামায়ণে নেই। পরবর্তী সময়ে রামায়ণের নানা সংস্করণে যুক্ত হয়েছে। বাল্মীকি রামায়ণে অবশ্য রামচন্দ্রের দুর্গাপুজোর কথাও নেই। তবে, সেটা পাওয়া যায় কৃত্তিবাস ওঝার রামায়ণে।