Advertisment

সতীপীঠের দেবী বর্গভীমা, দুর্গাপুজোয় দেবী রূপ ধরেন রাজরাজেশ্বরীর, বদলায় পুজোর আচার

প্রথা অনুযায়ী, রাজবাড়ি থেকে একটি তলোয়ারও আসে রাজার প্রতীক হিসেবে। সেটি ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী- এই পাঁচ দিনই দেবীর ডানদিকে থাকে। দশমী পুজো শেষ হওয়ার পর সেই তলোয়ার আবার রাজবাড়িতে ফেরত যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bargavima_Temple

দেবী বর্গভীমা মন্দির

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর তমলুক শহর। আর এখানেই রয়েছে দেবী বর্গভীমার মন্দির। কথিত আছে দেবী সতীর বাম পায়ের গোড়ালি পড়েছিল এখানে। সেই কারণে সতীর ৫১ পীঠের একপীঠ তমলুকের এই বর্গভীমা মন্দির। তমলুকের রাজা তাম্রধ্বজ এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে জানা যায়। তিনি পরবর্তীকালে সেবায়েতদের হাতে এই মন্দিরের যাবতীয় দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন।

Advertisment

দেবী এখানে সারাবছর উগ্রতারা রূপে পূজিতা হন। দুর্গাপুজোর দিন অবশ্য তিনি দেবী দুর্গা রূপেই পুজো পান। প্রতিবছর শারদীয়ায় তন্ত্রমতে দেবী বর্গভীমাকে রাজরাজেশ্বরী দেবী দুর্গারূপে পুজো করা হয়। ষষ্ঠীর দিন তমলুক রাজবাড়ির কুলোপুরোহিত রাজবাড়ি থেকে পুজোর দ্রব্য নিয়ে আসেন। সেই দ্রব্য মন্দিরের পুরোহিত প্রথমে গ্রহণ করেন। তারপরই দেবীর অধিবাসের ব্যবস্থা করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত রাজবাড়ি থেকে অধিবাসের দ্রব্য না-আসে, ততক্ষণ দেবীর অধিবাসের কাজ শুরুই হয় না।

publive-image
দেবী বর্গভীমা মন্দির

প্রথা অনুযায়ী, রাজবাড়ি থেকে একটি তলোয়ারও আসে রাজার প্রতীক হিসেবে। সেটি ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী- এই পাঁচ দিনই দেবীর ডানদিকে থাকে। দশমী পুজো শেষ হওয়ার পর সেই তলোয়ার আবার রাজবাড়িতে ফেরত যায়। পুজোর চারদিনই দেবীকে সাজানো হয় রাজরাজেশ্বরী বেশে। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী- পুজোর চারটি দিনই দেবী বর্গভীমা পূজিতা হন দেবী দুর্গা রূপে। পুজোর চার দিনই দুর্গাপুজোর রীতি মেনেই হয় বর্গভীমা মন্দিরের পুজো।

আরও পড়ুন- শুধু শৈবপীঠই নয়, সতীপীঠও বক্রেশ্বর, দুর্গাপুজোয় থাকবে এই সব বিশেষ আয়োজন

রীতি মেনে সপ্তমীর দিন থেকেই বর্গভীমা মন্দিরে শুরু হয় দেবী দুর্গার পুজো। অষ্টমীর দিন অষ্টমী পুজো থেকে সন্ধিপুজো, সবই চলে রীতি মেনে। দুর্গাপুজোর এই চার দিন দেবীর জন্য নির্দিষ্ট ভোগের সঙ্গে থাকে বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা। পাশাপাশি, সপ্তমীর সন্ধিপুজো ও নবমীতে দেবীর কাছে পাঁঠাবলি দেওয়া হয়। চিরাচরিত প্রথা মেনে এই বলির পাঁঠা নিয়ে আসা হয় তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি থেকে। অষ্টমীর দিন দেবীর পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার জন্য বহু মানুষ এই মন্দিরে আসেন।

এছাড়াও মনস্কামনা পূরণের জন্য অনেকে দেবীর কাছে পাঁঠাবলির মানত করেন। নবমীর দিন সেই সমস্ত মানত করা পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। প্রতিবছর এই দুর্গাপুজোর চার দিন সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমীর সন্ধ্যাবেলায় দেবী বর্গভীমার বিশেষ প্রসাদ তুলে দেওয়া হয় দর্শনার্থীদের হাতে। দশমীর দিন দেবীকে সিঁদুর দিয়ে সাজানো হয়। পান-সুপারি দিয়ে করা হয় বরণ। শারদীয়ায় দেবীর এই রাজরাজেশ্বরী রূপ দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী ছুটে আসেন বর্গভীমা মন্দিরে।

Temple durga Tamluk
Advertisment