বিগত দুই বছরে বিয়ে নিয়ে দোটানার শেষ নেই। আজ ৫০ জন লোক তো কাল ১০০ জন, অতিথি আপ্যায়ন থেকে ডেকরেশনের খামতি, বিয়ের বাজারে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। অনেকেই সেই যে বিয়ে পিছিয়েছেন চার হাত এক হওয়ার সুযোগ হয়নি এমনও নিদর্শন মেলে। একটা বিয়ের সঙ্গেই সম্পর্কিত বাজার, খাওয়াদাওয়া, গান বাজনা সহজ ভাষায় বিবাহ আসর জড়িয়ে থাকে। সেইসব মানুষদেরও দুই বছরে বেজায় নাজেহাল অবস্থা।
বিয়ে থেমে যাবে তাও আবার মহামারীর কারণে এটি একেবারেই ভাবা দায়! তবে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কাছে এটি যন্ত্রণা সম। বিশেষ করে যারা ব্যান্ড বাজার সঙ্গে যুক্ত কিংবা শোলার দোকানে কাজ করেন অথবা ক্যাটারিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তাদের কিন্তু অবস্থা বেশ খারাপ। কিছুদিন ধরেই ভাইরাসের কমতি বুঝতে পেরেই মানুষ ফের বিয়ের আয়োজনে ব্যস্ত ছিলেন - হাসি ফুটেছিল কষ্টে থাকা মানুষগুলোর। তবে ওমিক্রন যেন ভাল থাকতে দিল না। দিল্লি সহ ভারতের অনেক রাজ্যেও হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নয়া দিল্লিতে বিয়ের আসরে আমন্ত্রিত ব্যক্তির সংখ্যা কমিয়ে ২০ ধার্য করা হয়েছে। অন্যান্য শহরগুলিতেও ভাইরাসের প্রকোপ আন্দাজ হওয়ার পরেই সবরকম আয়োজন ক্রমশই ক্যান্সেল করছে মানুষ। বাড়ি বুকিং থেকে ক্যাটারিং এমনকি ব্যান্ড পার্টির দলকেও নাকোচ করে দেওয়া হচ্ছে।
ব্যান্ড বাজা দলের এক সদস্য জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মানুষ যারা তাদের বুকিং নিয়েছিলেন তারা ক্যান্সেল করার সঙ্গে সঙ্গেই টাকা ফেরত চাইছেন। ফলেই অন্যান্য সদস্যরা রেগে আগুন। দিল্লি ছাড়াও অন্যান্য, হরিয়ানা মুম্বাই কোথাওই বিয়ে নিয়ে কোনওরকম সতর্কতা জারি করা হয় নি। তবে টাকা ফেরত দেওয়া এত সহজ! এমনকি তাদের বক্তব্য অ্যাডভান্স-এর টাকা আর কতই বা হয় - ফের যেন সমস্যার সম্মুখীন তারা সকলেই।
জনৈক এক ব্যক্তি অমিত খেদিয়া জানিয়েছেন, বিয়ের সমস্ত প্ল্যান প্রায় ভেস্তে যাওয়ার মুখে। এমনকি টাকা রিফান্ড নিয়েও বেজায় মুশকিলে তারা। পাঁচতারা একটি হোটেলেই কথা ছিল বিয়ে হওয়ার তবে এখন কী করবেন সেই নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে এই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। বিয়ের দিনকে মাথায় রেখেই সমস্ত প্ল্যানিং এবং কাজকর্ম আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে এসে এমন ধাক্কা সামলানো সত্যিই বড় ব্যাপার।
এক ব্যক্তি সূত্রে খবর, মন্দিরে গিয়ে যে বিয়ে দেবেন তারও উপায় নেই! দিনদিন সর্বত্রই হলুদ সতর্কতা জারি করে প্রবেশ বন্ধ করলে দেওয়া হবে। তাই সেই সুবিধাও মিলবে না। বাড়িতে করলেও থাকছে অনেক সমস্যা - আদৌ এত প্রস্তুতি কীভাবে মানুষ ম্যানেজ করবে সেই নিয়েও চিন্তার শেষ নেই। তবে এই ব্যবসার সঙ্গেই যারা জড়িয়ে আছেন তাদের একদল জানিয়েছে পাঁচতারা হোটেল কিংবা ক্যাটারিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের টেস্ট করানো অবধারিত প্রয়োজন। নয়তো তাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। যতটা সম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং স্যানিটাইজ করা এগুলি দরকার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন