দেখতে দেখতে কেটে গেল একটা গোটা বছর। আরও একটু বুড়িয়ে গেল পৃথিবী। ভালো, খারাপ নানা অভিজ্ঞতায় কখনও ভরল, কখনও পুড়ল আমাদের মন। ক্রমশ ফুরিয়ে আসা বছরটার শেষ দিনগুলোয় নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ঘন ঘন চলতে থাকে ফিরে দেখার পালা। তিলোত্তমা জুরে সেই ফিরে দেখা শুরু হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার সকালে কলকাতার নিকোপার্ক সাক্ষী থাকল বছর শেষের অন্যরকম উদযাপনে।
তিলজলার এক পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৮৫টি শিশুকে নিয়ে হুল্লোড়ে মাতল সারা শহর। বড়োদিনের কেক পেস্ট্রির ভাগ অসমান হলেও, উৎসবের আনন্দের যেন সমান ভাগ পায় সব্বাই, এমনটাই চেয়েছিল বেসরকারি সংস্থা 'ইজি নোট স্টেশনারি প্রাইভেট লিমিটেড'। তাই উৎসবের মরশুমে টুকরো কিছু খুশির মুহূর্ত উপহার দেওয়া হল শহরের প্রান্তিক কিছু কচিকাঁচাদের। শীতের জন্য আলাদা রঙিন পোশাক নেই ওদের, খেলার জন্য নেই বিনোদন পার্ক কিমবা মোবাইলের ভিডিও গেম। কিন্তু ভরপুর আছে জীবনের সব রূপ রস নিংড়ে নিয়ে প্রাণ খুলে বাঁচার ইচ্ছেটুকু। বছরভর নিভে যাওয়া আঁচে দিন গুজরান করা খুদেগুলোর জন্য শুক্রবারটা ছিল স্বপ্নের মত 'হঠাৎ অকারণে হেসে ওঠার দিন'। আয়োজক কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ওদের জন্য ছিল রকমারি উপহারও।
ওদের খুশিতে সামিল হতে নিকোপার্কে উপস্থিত ছিলেন বালির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীমতী বৈশালী ডালমিয়া, যুব তৃণমূলের রাজ্যস্তরের সভাপতি সায়নদেব চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। বৈশালী দেবী বললেন, "ইজি নোট স্টেশনারি প্রাইভেট লিমিটেড-এর খুবই অভিনব এই উদ্যোগ। সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশকে শুধু পড়াশোনার ব্যাপারে সাহায্য করাই নয়, পাশাপাশি অনেক রকম কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করছে এরা। এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়"।
সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শালিনী বিশ্বাস বললেন, "বড় দিনের আগে ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে পেরে আমরা খুব খুশি হয়েছি। সকালটা খুব উপভোগ করেছে ওরা। আমরা সব সময় চেষ্টা করি প্রান্তিক শিশুদের জীবনের গুণগত মান যাতে আরেকটু উন্নত করা যায়"।
ইজি নোট স্টেশনারি প্রাইভেট লিমিটেড-এর পথ চলা শুরু ২০০৮ সালে। আগে পরিচিত ছিল ছায়া ষ্টেশনারি প্রাইভেট লিমিটেড। সমাজের নিচু তলার শিশুদের স্কুল জীবনটায় বাধা যত কম আসে, সেই চেষ্টাই করে এই সংস্থা। পরিচ্ছন্ন এবং সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কম দামে ওদের কাছে পৌঁছে দেওয়াই সংস্থার মূল লক্ষ্য। বর্তমানে বিহার, উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা, আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গে এই সংস্থা কাজ করে চলেছে।