ঘুম থেকে ওঠার সময় মাথা দপদপ করেছে। খানিক কাজের পরই ঝিমুনি গ্রাস করছে দিনের বাকি সময়। খেতে মন চাইছে না। বমি বমি ভাব। শুয়ে থাকাই শ্রেয় মনে হচ্ছে। পায়খানাতেও সমস্যা মনে হচ্ছে। শরীরের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনি ডিহাইড্রেশনের শিকার হয়েছেন। এই সময় সাধারণত আমরা বেশি করে জল খাওয়ার পরামর্স দিয়ে থাকি। জলের উপকারিতা অন্য কোনো উপাদান থেকে পাওয়া যায়না। কিন্তু জল সব সময় সঠিক পরিমাণে খাওয়া হয়না। কার শরীরে কতটা জলের প্রয়োজন তা আমরা জানি না। বেশি করে জল খেলেও সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে কথা বললেন শিশুরোগ ডাক্তার সৌম্যব্রত আচার্য।
ডাক্তার সৌম্যব্রত বলেন, জল বেশি করে অবশ্যই খেতে হবে। কিন্তু তার আগে শিশুর ওজন দেখে নিতে হবে। সেই মত ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে দিনে কতটা জল খাওয়ার প্রয়োজন, সেবিষয়ে অবগত হতে হবে। কোনও বাচ্চার তিন লিটার বা কোনও বাচ্চার চার লিটার জলের প্রয়োজন হয়। অতিরিক্ত জল থেলে লিভারেও চাপ পরতে পারে। তবে সাধারণত দিনে চার লিটার জল খেতে পারে ১০ থেকে ১৫ বছরের ছেলে মেয়েরা।
এখন ঘরবন্দী, খেলাধূলা ঘরের মধ্যেই, বা কারর জীবনযাপন থেকে মুছে গিয়েছে দৌড়ঝাপ। সেক্ষেত্রে জল কম খাওয়া হয়। তখনই ডিহাইড্রেশনের শিকার হতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে জল কম খেলেও, তরল পদার্থ খাওয়ার চেষ্টা করুন। মরশুমের রসালো ফল খাওয়ানো উচিত বাচ্চাদের। এছাড়া, ব্রেকফাস্টের তালিকায় এক গ্লাস ফলের রস রাখতে পারেন। বিকেলে এক গ্লাস দুধ। এতে পুষ্টির সঙ্গে শরীরে জলীয় পদার্থের ভাগ বাড়বে। তবে দই ও দুধ খেতে যারা পছন্দ করেন না, তারা খেতে পারে বাটার মিল্ক। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় তরল, ক্যালরিও পেল, পুষ্টিও রয়েছে। অন্যদিকে, ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে ও পেট পরিষ্কার রাখে।
এছাড়া দিনে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুম দরকার। রাত জাগলে ডিহাইড্রেশনের সম্ভাবনা প্রবল। অনেক সময় দেখা যায়, রাতে ২.৩০- ৩ টের সময় ঘুমিয়ে সকাল ১০টায় ঘুম থেকে উঠছে বাচ্চা। সেক্ষেত্রেও ডিহাইড্রেশনের প্রবণতা বেশি। এতে খাওয়ারের সময়ের পরিবর্তন হয়ে যায়। ফলে জল খেয়ে খানিক সময় পর খাওয়া, এই রুটিনটা পালন করা সম্ভব হয়না।
বাচ্চার কতটা ঘাম হচ্ছে, সেদিকটা খেয়াল রাখতে হবে। অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীরে সোডিয়ামের ভাগ কমে যায়। সেক্ষেত্রে বাচ্চাকে ওয়ারেস, গ্লুকন্ডি অথবা নুন চিনির জল খাওতে হবে। পাশাপাশি ডাবের জল, গ্রিন টি, বাড়িতে বানানো তাজা ফল বা সবজির স্যুপও বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন।