"স্বপন যদি মধুর এমন, হোক সে মিছে কল্পনা, জাগিও না, আমায় জাগিও না"... এমন সময়ে তারস্বরে চেঁচিয়ে উঠল আপানার অ্যালার্ম ঘড়িটি। ৫ টা ১০। সদ্য প্যাচপ্যাচে গরম পেরিয়ে একটু বৃষ্টি নেমেছে শহরে। এমন আলসে আবহাওয়ায় ভোর বেলা ঘুম থেকে ওঠা খুব কষ্টসাধ্য। কিন্তু অফিসের বসেদের সে কথা বোঝাবে কে? অগত্যা সেই সাত সকালে উঠে নাকে মুখে গুঁজে আপনাকে বেরোতেই হবে। চিন্তা করবেন না। আপনার জন্য থাকল ঘুম ভাঙানোর কিছু উপায়।
প্রাচীনকালে মুনি ঋষিদের অবশ্য ব্রহ্ম মুহূর্তে ওঠার অভ্যেস ছিল। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও দেরিতে ঘুম ভাঙার সমস্যার একটি সমাধানের কথা বলা হয়েছে | সূর্যাস্তের ৪৫ মিনিট আগে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করার কথা বলা হয়েছে সেখানে | এই সময়টিকে বলা হয় ব্রহ্ম মূহুর্ত | ব্রহ্ম মূহুর্তে নিয়মিত ওঠার অভ্যাস তৈরি করতে পারা আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মতে স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল | এই সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারলে সূর্যের তরঙ্গের সঙ্গে মানবদেহের তরঙ্গ মিলে যেতে পারে | এই জন্য সারদিনই শরীর স্বাস্থ্যসতেজ ও চনমনে থাকে |
ঘন ঘন চুল রং করেন? কী বিপদ ডেকে আনছেন জানুন
রাতে হাল্কা খাবার খেয়ে ঘুমোতে যান : রাতের খাবার হাল্কা হলে তা হজম হতে সুবিধা হয় | হজম হবার অসুবিধা হলে বা ভারী খাবার খেলে শরীর ভারী হয়ে যায় | ফলত সকালে ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না | অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার বা মিষ্টি খাওয়া যতটা সম্ভব বর্জন করুন | রাতের খাবার যত হাল্কা হবে শরীর তত হাল্কা বোধ হবে এবং বিছানা ছেড়ে উঠতে সুবিধা হবে |
ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস জল খান : রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অন্তত এক গ্লাস জল খেলে মূত্রাশয়ে চাপ পড়বে | সকাল সকাল তাই আপনার বাথরুমে যাওয়ার দরকার হবে | সাথে ঘুমও বিদেয় হবে | কিন্তু তাই বলে ঘুমোনোর আগে অতিরিক্ত জল খাওয়া উচিত্ নয় | বিশেষত ডায়বেটিস থাকলে বেশি জল খেয়ে ঘুমোতে যাবেন না।
অ্যালার্ম দেওয়া ঘড়িটিকে নিজের থেকে দূরে রাখুন : আমরা অনেকেই অ্যালার্ম সেট করে শুলেও হাতের কাছে থাকা ফোন বা ঘড়ির অ্যালার্ম বাজলেই তা বন্ধ করে আবার পাড়ি দিই ঘুমের দেশে | অ্যালার্ম দেওয়া ঘড়ি বা ফোনটিকে যদি আমর যেখানে ঘুমোচ্ছি তার থেকে খানিকটা দূরে রাখা যায় তাহলে অ্যালার্ম বন্ধ করতে তো বিছানা ছেড়ে উঠতেই হবে ! আর কিছু উপায় থাকবে না তখন | বিছানা থেকে একবার উঠে অ্যালার্ম বন্ধ করে আবার বিছানায় ফিরে ঘুমোনো সম্ভব হয় না | ফলত ঘুমঘোর কেটে যাবে |
নাক ডাকা মানেই কি ভালো ঘুম? জেনে নিন সত্যিটা
ঠান্ডা জলে স্নান করুন : ঘুম থেকে উঠে পড়লেও ঘুমের ঘোর না কাটার জন্য আমরা অনেকে আবারও ঘুমিয়ে পড়ি | ঘুমের ঘোর কাটানোর জন্য ঘুম ভাঙলেই ঠান্ডা জলে স্নান করে নেওয়া যায় | সকালে ঠান্ডা জলে স্নান করলে সারাদিন সতেজ বোধ হয় , মনোসংযোগ করার ক্ষমতাও বাড়ে | তবে ঠাণ্ডার ধাত থাকলে এটা চেষ্টা করবেন না।
ঘুম ভাঙলেই বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ুন : ঘুম ভেঙে গেলেও আলস্যের জন্য আমরা বিছানায় শুয়ে থাকি | ঘুমের ঘোর ঘুম ভাঙার পরেও থাকে বলে বিছানায় থাকলে আবারও ঘুমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে | তাই ঘুম ভাঙলে সাথে সাথেই বিছানার হাতছানি এড়িয়ে উঠে পড়তে হবে | গড়িমসি করবেন না।