সন্তানের জন্ম একজন মাকে পূর্ণতা দেয়। একটি নতুন প্রাণের সৃষ্টি সন্তান জন্মের সমস্ত কষ্ট ভুলিয়ে মায়ের শরীরে নিয়ে আসে কিছু পরিবর্তন। সন্তানের পেট ভরাতে মা স্তন্যপান করান। তবে অনেক সময়ে দেখা যায় শিশু ঠিকভাবে স্তনপান করতে পারে না বা ফ্ল্যাট নিপল অর্থাৎ স্তনবৃন্ত হওয়ার কারণে অনেকের এই নতুন অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়। তবে তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, কারণ এই সমস্যা সাময়িক। এমনটাই জানাচ্ছেন রোসওয়াক হসপিটাল-এর ল্যাক্টশিয়ান এক্সপার্ট চিকিৎসক হেলাই গুপ্তা।
তিনি বলছেন, সবার প্রথম নতুন মা-রা নিজেদের অভিনন্দন জানান এবং এই সমস্যা যে সাময়িক সেটা মানতে শিখুন। "এই সমস্যা অনেকের হয়, তবে এই সাময়িক সমস্যা সমাধানে কিছুটা ধৈর্যের প্রয়োজন। শিশুকে কীভাবে স্তন্যপান করাতে হয় স্বাভাবিকভাবেই একজন নতুন মায়ের পক্ষে তা জানা সম্ভব নয়। একজন ল্যাক্টশিয়ান যথাযথভাবে এই প্রক্রিয়া বোঝাতে পারেন। শিশুকে স্তনপান করানোর সময় কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে- এইসময়ে আরামদায়কভাবে বসুন, হাতের কাছে একগ্লাস জল রাখুন কারণ এটা খুব স্বাভাবিক যে শিশুকে স্তনপান করানোর সময় শরীর থেকে জল বেরিয়ে যাওয়ার কারণে আপনার তেষ্টা পেতে পারে। এছাড়া ঠিকভাবে ব্রেষ্ট মাসাজ করুন। যাতে আপনার সন্তান ভালোভাবে দুধ পান করতে পারে।"
ডাঃ গুপ্তার মত হল, যাদের ফ্ল্যাট নিপল্ তারা নিপল্ শিল্ড ব্যবহার করতে পারেন অথবা সাক্সেন ডিভাইস-এর সাহায্যে দুধ নিঃসৃত করতে পারেন। এছাড়াও ম্যানুয়াল ও ইলেকট্রনিক এই দু'ধরনের ব্রেষ্টপাম্প পাওয়া যায় সেটিও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এই সব যন্ত্র ব্যবহার করলে তাদের ভালোভাবে পরিষ্কার রাখাও উচিত। এর পাশাপাশি আপনার বাচ্চার ডায়পার-এর দিকেও লক্ষ্য রাখুন। কারণ সন্তানের পেট ঠিকমতো ভরছে কিনা, তা ওই ডায়পার দেখেই বোঝা যাবে। এমনটাই জানাচ্ছেন ডাঃ হেলাই। তবে বাচ্চার পেট ভরাতে গিয়ে যাতে নিজের ব্রেষ্ট বা নিপল্-এ যেন আঘাত না লাগে সেটা খেয়াল রাখা জরুরি।
<আরও পড়ুন: ইউরিক অ্যাসিড কি কমিয়ে দিচ্ছে শরীরের মেটাবলিজম?>
নিউট্রিশনিস্ট লভনিত বাত্রা তাঁর ইনস্টাগ্রাম-এ নতুন মা-রা কীভাবে তাদের ব্রেষ্টমিল্ক বাড়াতে পারেন সেই সম্বন্ধে কিছু টিপস্ শেয়ার করেছেন। চলুন দেখে নিই সেগুলি কি-
- দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার পাণীয় পান করতে হবে। জিরে বা জোয়ানগুঁড়ি মেশানো জলও আপনি পান করতে পারেন।
- প্রতিদিন অন্তত ১০০ গ্রাম প্রোটিন খেতে হবে।
- খাবারে তালিকায় ল্যাকটোজেন আছে এরকম খাদ্যবস্তু রাখুন। যেমন প্রতিদিন এক চা চামচ ভেজানো মেথি শোওয়ার আগে খান।
- ডায়েটে ওট বা ডালিয়া জাতীয় খাবার অর্থাৎ ফাইবার সম্বৃদ্ধ খাবার রাখুন।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে হাফ চামচ শতভরী বা শতমূল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খান। এই আয়ুর্বেদিক ভেষজ জীবনী শক্তি বাড়ায়, এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। সেইসঙ্গে শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে এটি কাজে দেয়।
আপনি নিজে যদি সুস্থ থাকেন তবেই আপনার সন্তান ভালো থাকবে। তাই আজ থেকে এই নিয়মগুলি মেনে চলুন আর সমস্ত চাপ কাটিয়ে দিয়ে নতুন মাতৃত্বের স্বাদ অনুভব করুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন