জাগ্রত মন্দির, যেখানে দেবীর আশীর্বাদ পেতে নিয়মিত যাতায়াত করেন বিশিষ্টরাও

সাধকরা এই মন্দিরকে বিশেষ গুরুত্ব দেন।

সাধকরা এই মন্দিরকে বিশেষ গুরুত্ব দেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Chhinnamasta Temple

দেবীর দশ মহাবিদ্যার অন্যতম ছিন্নমস্তা। দেবীর রূপ অনুযায়ী একহাতে রয়েছে নিজেরই মুণ্ড। অপর হাতে অস্ত্র। তন্ত্রমতে দেবী ছিন্নমস্তা আত্মবলিদান এবং কুণ্ডলিনী জাগরণের দেবী। সেই দেবীরই মন্দির রয়েছে ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে। রামগড় ক্যান্টনমেন্ট থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে এক টিলার ওপরে। সাধকদের কাছে এই মন্দির সতীপীঠ অথবা মহাশক্তিপীঠ।

Advertisment

ঝাড়খণ্ডের যে জায়গায় এই মন্দির রয়েছে, তার নাম রাজারাপ্পা। এই মন্দিরে প্রবেশ করতে গেলে পার হতে হয় দামোদর ও ভৈরবী নদী। দেবী ছিন্নমস্তা কামদেব এবং রতিকে জয় করেছিলেন। সেই কারণে দেবীমূর্তির পদতলে থাকেন কামদেব এবং রতি। শক্তি সাধকদের কাছে, অসমের কামাক্ষ্যা মন্দিরের পরই দেবী ছিন্নমস্তার এই মন্দিরের স্থান। ছিন্নমস্তার মূর্তির পাশে থাকে ডাকিনী এবং যোগিনীর মূর্তি। তাঁরা ছিন্নমস্তার গলার দু'পাশ থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত পান করেন। আর, দেবীর নিজের ছিন্নমুণ্ডও তাঁর নিজের গলার মধ্যস্থান থেকে বেরিয়ে আসা রক্তধারা পান করে।

শাস্ত্রমতে অসুরদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় দেবীর সহচরী ডাকিনী ও যোগিনী তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়লে, দেবী এইভাবে নিজের রক্ত দিয়ে তাঁদের তৃষ্ণা মিটিয়েছিলেন। সাধকদের কাছে অবশ্য দেবীর ছিন্ন দেহ থেকে বেরিয়ে আসা তিনটি রক্তধারা ইড়া, পিঙ্গলা ও সুষুম্না নাড়ির প্রতীক। যাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন দেবী।

Advertisment

আরও পড়ুন- শিয়াখালার জাগ্রত দেবী উত্তরবাহিনী বিশালাক্ষী, মনস্কামনা পূরণের পাশাপাশি শিক্ষায় দেন সিদ্ধি

পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও অনবরত ভক্তরা আসেন এই মন্দির দেখতে। শুধু তাই নয়, বিদেশ থেকেও আসেন বহু ভক্ত। বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি দেবীর আশীর্বাদ লাভের জন্য নিয়মিত এই মন্দিরে যাতায়াত করেন। ছিন্নমস্তা মন্দিরের পাশেই রয়েছে দুটি উষ্ণ জলধারা। কথিত আছে, এই দুটি জলধারার জল অত্যন্ত শুদ্ধ। ভক্তদের দাবি, এই উষ্ণ জলধারায় বহু রোগ দূর হয়ে যায়। পুরাণ অনুযায়ী, এই মন্দিরটি রক্ষা করেন স্বয়ং রুদ্রদেব। তিনি হলেন এই মন্দিরের ভৈরব।

এই রুদ্রদেব আসলে মহাদেবেরই এক রূপ। হিন্দু এবং বৌদ্ধ তন্ত্রমতে দেবী ছিন্নমস্তাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বৌদ্ধশাস্ত্রে দেবী ছিন্নমস্তাকে বলা হয়েছে ছিন্নমুণ্ডা। বৌদ্ধদের প্রান্তসিনী, শক্তিসাংগামার মত বিভিন্ন তন্ত্রে দেবী ছিন্নমস্তার উল্লেখ আছে। মন্দিরে দেবীর শিলারূপ রয়েছে। মূল মন্দিরকে ঘিরে দশ মহাবিদ্যার অন্যান্য রূপও রয়েছে রাজারাপ্পায়। এছাড়াও রয়েছে হনুমান, সূর্যদেবের মূর্তি।

Durgapuja pujo Temple