আগরপাড়ার বহু প্রাচীন ও বিখ্যাত, জাগ্রত দেবী রক্ষাকালী। এখানে একদিনেই হয় দেবীর মূর্তি গড়া। পুজোও একদিনেই হয়। একদিনেই হয় বিসর্জন। এখানে দেবীর বেদীর কাছে এসে মানত করতে হয়। পূরণ হলে, সেই ভক্ত দণ্ডী কাটেন। দেবীর পুজোর দিন কয়েক হাজার ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দির চত্বরে।
নিয়ম অনুযায়ী দেবীর বিসর্জন হয় কাকডাকার আগে ভোরে। একবার এই নিয়মের অন্যথা হয়েছিল। দেবীর বিসর্জন দেওয়া হয়নি। ভক্তরা ভেবেছিলেন যে পরের দিন দেবীর বিসর্জন দেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় যে বিসর্জন না-দেওয়ার কারণে হঠাৎ করে দেবীর বেদী এবং মূর্তি নড়ে ওঠে। এখানে দেবীর বেদীর পাশেই রয়েছে বড় পুকুর।
আচমকা ভক্তরা দেখেন যে দেবী নিজে থেকেই বিসর্জিত হচ্ছে। পরদিন দেবী রক্ষাকালীর প্রধান পুরোহিত স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নে দেবী জানান যে প্রতিবছর তাঁর পুজো করতে হবে। দেবীকে নিয়ে যেতে হবে কুমোরপাড়া দিয়ে। পুজোর আগের দিন থেকে নির্জলা উপোস থাকতে হবে ভক্তদের। দেবীকে বিসর্জন দিতে হবে পুজোর দিন কাকডাকার আগে। দেবীর মূর্তিও গড়তে হবে পুজোর দিন।
এখানে দেবীর কোনও মন্দির নেই। দেবীর মাথার ওপর ছাউনিও দেওয়া যায় না। একবার মন্দির তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু, ঝড়ে মন্দিরটি ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে খোলা আকাশের নীচেই দেবীর পুজো করা হয়। দেবীর বেদীর পিছনের দিকে রয়েছে পাঁচিল। ভক্তদের দাবি, একবার কিছু চোর দেবীর গয়না চুরি করেছিল। পরে দেবীর রোষে সেই চোরদের হাত ভেঙে যায়। দেবী ওই চোরদের স্বপ্নাদেশও দেন। তার জেরে চোররা এসে দেবীর গয়না ফেরত দিয়ে যায়।
আরও পড়ুন- মনস্কামনা পূরণ থেকে গাড়ির পুজো বা বিয়ে, এই জাগ্রত মন্দিরেই বিশ্বাস ভক্তদের
দেবীর ভোগে থাকে পাঁচরকমের ভাজা, খিচু়ড়ি ও বলির মাংস। দেবীর পুজো কবে শুরু হল? এই প্রশ্নে ভক্তরা জানিয়েছেন, শুরু বহু বছর আগে হয়েছিল। কিন্তু, ঠিক কবে হয়েছিল, তা কারও জানা নেই। কারণ, বাসিন্দারা প্রত্যেকেই বংশ পরম্পরায় এই পুজো হতে দেখেছেন।