কালীময় বাংলা। এখানে বিভিন্ন জায়গায় নানারূপে কালী আরাধনা চলে। মন্দিরে সারাবছর চলে দেবী কালীর নিত্যপুজো। এছাড়া বাৎসরিক পুজোপাঠ তো লেগেই থাকে। এর মধ্যে বহু জায়গাতেই ভক্তরা দাবি করেন, সেখানে দেবী জাগ্রত। নানা অলৌকিক কর্মকাণ্ড চলে সেই সব দেবস্থানে। তারমধ্যেই প্রশ্ন তোলার লোকের সংখ্যা নেহাত কম না। যদিও সেই সব প্রশ্ন ভক্তদের বিশ্বাস টলাতে পারে না। এই সব মন্দিরে ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। উৎসব-অনুষ্ঠানে তো বটেই। প্রায় প্রতিদিনই মন্দিরে ভিড় জমান বহু ভক্ত।
এমনই এক জাগ্রত মন্দির দেবী আনন্দময়ী কালীবাড়ি। এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে অলৌকিক ঘটনার নানা দাবি। যা রীতিমত অবাক করার মত। ভক্তদের দাবি, এই মন্দিরের বয়স ৩২৮ বছর। ইংরেজির ১৬৯৪ সাল (১১০১ বঙ্গাব্দ) সালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ওই জমির মালিক ঈশান চক্রবর্তীর জামাই ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়। সেই সময় কাশীধাম থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল কষ্টিপাথরের দেবী আনন্দময়ী কালীর মূর্তি।
এই মন্দির সম্পর্কে ভক্তদের দাবি, রাতে দরজা বন্ধ করার পরও ভিতর থেকে ভেসে আসে ধূপ-ধুনোর গন্ধ। এলোকেশী দেবীকে রাস্তায় ঘোরাফেরাও করতে দেখেছেন ভক্তরা। দেবী নাকি অসুস্থ এক ভক্তের কপালে হাত রেখে তাঁর অসুখও সারিয়ে দিয়েছিলেন। শুধু কি তাই? পুরকর্মীরা মন্দির-সংলগ্ন মাটিতে পড়ে যাওয়া বিশাল অশ্বত্থ গাছ কাটার সময় গাছটি নাকি নিজে থেকেই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। এক ভক্ত তো দেবীর কাছে প্রার্থনার পর পরিবারের নিখোঁজ সদস্যের খোঁজ মেলায় এই মন্দির সংস্কার করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- সাপ্তাহিক ছুটিতে বেড়ানোটা নেশা? অপেক্ষায়, কলকাতার কাছেই বিশাল জায়গাজুড়ে তৈরি শংকর মঠ
ভক্তদের কাছে এই কালীমন্দির 'হলুদ কালীবাড়ি' নামেই পরিচিত। সেখান থেকে নাম লোকমুখে, 'হলদে কালীবাড়ি' হয়ে গিয়েছে। এই নামকরণের পিছনে রয়েছে এক ইতিহাস। কথিত আছে, অতীতে এই কালীমন্দির থেকে হলুদ না-গেলে, গোটা এলাকায় কোনও বাড়িতেই গায়ে-হলুদের অনুষ্ঠান বা বিয়ে হত না। কীভাবে যাবেন এই মন্দিরে? এই মন্দির রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে। শিয়ালদহ উত্তর শাখার মেইন লাইনে নামতে হয় সোদপুর স্টেশনে। সেখান থেকে অটো অথবা টোটো চেপে আসা যায় পানিহাটির হলদে কালীবাড়িতে। সড়কপথে বিটি রোড ধরে সোদপুরে এসেও পৌঁছে যাওয়া যায় এই মন্দিরে। আবার কোন্নগর থেকে লঞ্চে চেপে পানিহাটি ফেরিঘাটে নেমেও হেঁটে এই মন্দিরে যাওয়া যায়।