Advertisment

এখানে মহাদেবের ওপর বসে থাকেন দুই কালী, জাগ্রত মন্দিরে উপচে পড়ে ভিড়

মনস্কামনা পূরণের পর শনি অথবা মঙ্গলবারে দেবীর পুজো দিতে আসেন ভক্তরা। তাতেও বিপুল জনসমাগম হয় এই মন্দিরে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Nadia_Kali

জাগ্রত কালী মন্দির। একই মন্দিরে পাশাপাশি রক্ষাকালী ও দক্ষিণকালী। তাঁরা দু'জনেই আবার বসে থাকেন শিবের ওপর। এখানকার কালী প্রতিমা সেই কারণেই অন্যান্য জায়গার প্রতিমার চেয়ে আলাদা। নদিয়ার ভীমপুরের ময়দানপুরের কালীবাড়ির কালীপ্রতিমা শুধু অবশ্য এই কারণেই নয়, ভক্তদের কাছে অন্য কারণেও জনপ্রিয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এখানে এলে যাবতীয় মনস্কামনা পূরণ হয়। নতুন কোনও মন্দির নয়। এই কালীপুজো চলছে ৩০২ বছর ধরে। ভক্তদের দাবি, সময়ের সঙ্গে যুগের আধুনিকতা বাড়লেও এই মন্দিরের মাহাত্ম্য বেড়েছে বই কমেনি।

Advertisment

একটা সময় যে মাহাত্ম্যের কথা এলাকাবাসী জানতেন, আজ তা দূর-দূরান্তের ভক্তদের এই মন্দিরে টেনে আনে। এখানকার নিয়ম মন্দিরে এসে মানত করতে হয়। পূরণ হলে দিতে হয় দেবীর পুজো। সেই পুজো দিতেও অসংখ্য ভক্ত আসেন এই মন্দিরে। তাঁদের ভিড়ে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার রীতিমতো গমগম করে এই মন্দির। আর, কালীপুজোর দিনগুলোয় এই মন্দির যেন বিরাট এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। এত বিপুলসংখ্যক ভক্ত এখানে ভিড় করেন!

শুধু লাগাতার কামনাপূর্তিই নয়। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা নিয়েও রয়েছে এক অলৌকিক ইতিহাস। কথিত আছে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন লক্ষ্মী দাস নামে এই ময়দানপুরের এক মহিলা। দেবী তাঁকে স্বপ্নে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়ির কাছেই মনসা গাছ রয়েছে। সেই গাছের মাটির তলায় তাঁরা আছেন। তাঁদের মাটি থেকে তুলে পুজো করতে হবে। পরদিন থেকেই করতে হবে পুজো। দেবীর সেই স্বপ্নাদেশের পরদিন ছিল শ্যামাপুজোর তারিখ।

কথিত আছে, স্বপ্ন যিনি দেখেছিলেন, সেই লক্ষ্মী দাস ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সবাইকে এই কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কেউ তাঁকে বিশ্বাস করেননি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁর জোরাজুরিতে শুরু হয় মাটি খোঁড়া। বেশ কিছুটা মাটি খোঁড়ার পর উদ্ধার হয় জোড়া কালীমূর্তি। এরপর যেখান থেকে কালীমূর্তি দুটি উদ্ধার হয়, সেই মনসা গাছের পাশেই তৈরি করা হয় দেবীর বেদী। সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। কথিত আছে স্বপ্নাদেশপ্রাপ্ত লক্ষ্মী দাস অন্য কোনও পুরোহিত নয়। নিজে এই পুজো শুরু করেন। প্রথমে গ্রামের অনেকে তা মানতে না-পারলেও পরে তাঁরা এটা মেনে নেন। সেই সময় প্রতিমার বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন- রের কাছেই শতবর্ষ প্রাচীন শনি মন্দির, মনস্কামনা পূরণ করতে যান ভক্তরা

এরপরই দেবীর স্বপ্নাদেশে ওই বেদীর স্থানে নির্মাণ করা হয় মন্দির। পঞ্চম দোলে স্থায়ীভাবে দেবীর বিগ্রহ তৈরি করে প্রতিষ্ঠার পর পুজো শুরু হয়। সেসব আজ থেকে ৩০২ বছর আগের ঘটনা। বর্তমানে লক্ষ্মী দাসের পরিবারের লোকজন বংশপরম্পরায় এই পুজো করে চলেছেন। দেবীকে এখানে নিত্য পুজো করা হয়। এই মন্দিরে দুই কালী প্রতিমার পাশে দেবী লক্ষ্মীর মূর্তিও রয়েছে। দেবী লক্ষ্মীকেও এখানে নিত্য পুজো করা হয়।

Kali Puja Kali Temple pujo
Advertisment