৩০০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত রটন্তী কালী মন্দির, জাগ্রত দেবী ভরসা ভক্তদের

এই রাতেই বগলাদেবী, ছিন্নমস্তা, শ্রীরাধার ইষ্টরূপ প্রকাশিত হয়েছিল।

এই রাতেই বগলাদেবী, ছিন্নমস্তা, শ্রীরাধার ইষ্টরূপ প্রকাশিত হয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Guskara Ratanti kali Temple

দেবী রটন্তী কালী

হিন্দু ধর্মে দেবী কালীর বিশেষ স্থান রয়েছে। সারা বছরই নানা নামে দেবীকে পুজো করা হয়। তবে, সেসব পুজো হয় অমাবস্যায়। একমাত্র রটন্তী কালী পুজো হয় চতুর্দশীতে। শাস্ত্রমতে এই রাতে বগলা দেবীর আবির্ভাব হয়েছিল। আবার এই রাতেই দেবী মহামায়া সহচরীদের খিদে মেটাতে নিজের মুণ্ডচ্ছেদ করে ত্রিধারায় রক্ত প্রবাহিত করেছিলেন। আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবী ছিন্নমস্তা রূপে। যে মহিমা প্রচারিত হয়েছিল বা চতুর্দিকে রটে গিয়েছিল। আর, এই রটে যাওয়া বা রটনা থেকেই এসেছে রটন্তী শব্দ।

Advertisment

বৈষ্ণব মতেও আবার রটন্তী কালীপুজোর বিশেষ স্থান আছে। কারণ, এই রাতেই শ্রীরাধা আদ্যাশক্তি রূপ ধারণ করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের প্রেমলীলায় মত্ত রাধার খোঁজে বাঁশি অনুসরণ করে ছুটে গিয়েছিলেন সখী, আত্মীয়, পরিবারের লোকজন। সেখানেই বনের মধ্যে তাঁরা রাধাকে দেখতে পেয়েছিলেন স্বয়ং ইষ্টরূপে। কথিত আছে, যাঁদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি রয়েছে। যাঁরা অবাঞ্ছিত কারণে দাম্পত্য সুখ থেকে বঞ্চিত। যাঁদের সদ্য প্রেমে বিচ্ছেদ হয়েছে। তাঁরা রটন্তী কালীর আরাধনার মাধ্যমে সফলতা লাভ করতে পারেন।

রাজ্যের অন্যতম শক্তিসাধনার ভূমি গুসকরায় রয়েছে রটন্তী কালীর মন্দির। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন সিদ্ধ তান্ত্রিক রতনেশ্বর। তা-ও প্রায় ৩০০ বছর আগে। মন্দিরের উত্তর দিকে তাঁর সমাধি রয়েছে। এই মন্দিরের গর্ভগৃহে পঞ্চমুণ্ডির আসনের ওপর উঁচু বেদিতে চতুর্ভুজা দেবী রটন্তী কালী শিবের বুকের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। প্রতিবছর মাঘ মাসের রটন্তী চতুর্দশীতে খড়-মাটি দিয়ে দেবীর বিগ্রহ নির্মাণ করা হয়। রটন্তী কালীপুজো থেকে শুরু করে সাত দিন ধরে দেবীর পুজো করা হয়। পুজোর পরই দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয় পাশের কুনু নদীতে।

আরও পড়ুন- দূর হয় বাতের ব্যথা, যেখানে তারকারাও ছুটে যান মনস্কামনা পূরণের জন্য

Advertisment

নদীর জলে দেবীর গা থেকে মাটি ধুয়ে যাওয়ার পর কাঠামোটি মন্দিরে আনা হয়। সেখানে মাটি দিয়ে দেবীর বিগ্রহ ও মহাদেবের মুখমণ্ডল তৈরির পর কাঠামোর বাকি অংশে কাপড় পরিয়ে বছরভর পুজো করা হয়। রটন্তী কালীপুজো ছাড়াও এই মন্দির প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। শ্যামাপুজোয় রীতিমতো ঘটা করে কালীর আরাধনা করা হয়। সেই সময় দুশো থেকে আড়াইশো ছাগ বলি হয় এই মন্দিরে।

Kali Puja Kali Temple pujo