বাংলার সতীপীঠগুলোর প্রতি ভক্তদের আকর্ষণের শেষ নেই। কারণ, একের পর এক অলৌকিক কাহিনি জড়িয়ে আছে এই সব সতীপীঠের সঙ্গে। ভক্তদের দানের কারণে, বহু সতীপীঠেরই মন্দির এখন ঝাঁ চকচকে। তার মধ্যেই এমনও অনেক সতীপীঠ এই বাংলাতেই রয়েছে, যেখানে পুরোনো পরিবেশ বহাল। গ্রাম্য পরিবেশে গ্রাম্য সংস্কৃতি এই সব সতীপীঠের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। অবশ্য এই তালিকা খুব একটা বড় নয়।
এর মধ্যে বর্ধমানের নিরোল গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণডিহি গ্রামে আছে এক সতীপীঠ। উত্তরে ঈশাণী নদী আর কিছুদূরে শ্মশান, এই শক্তিপীঠকে নিরিবিলি পরিবেশ দিয়েছে। এখানে আজও গাছে গাছে হরেক পাখি দেখা যায়। রাতের বেলা শোনা যায় পেঁচার ডাক। আর প্রতিটি প্রহরে এখানে আজও শেয়াল ডাকার শব্দ শোনা যয়া। এই সতীপীঠের নাম অট্টহাস। কথিত আছে এখান দেবীর ওষ্ঠ বা অধর পড়েছিল। তাই এই পীঠের নাম অট্টহাস।
আরও পড়ুন- জনশ্রুতিতে ভরা সতীপীঠ, আজও যেখানে পুজো না-দিয়ে শুভকাজ সারেন না শহরবাসী
মন্দিরের ভিতরের শিলাখণ্ডটি অনেকটা ওষ্ঠের মত দেখতে। এই শিলার রং আবার টুকটুকে লাল। এখানে দেবীকে ডাকা হয় ফুল্লরা বলে। ভৈরব হলেন বিশ্বেশ। এখানে দেবীকে অধরেশ্বরী নামেও পূজা করা হয়। দোলের সময় এখানে বিশাল মেলা বসে। বহু ভক্তের ইচ্ছাপূরণ হয়েছে এই সতীপীঠে পুজো দিয়ে। এখানে থাকার অতিথি নিবাস আছে। মন্দির থেকেই ভক্তদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।
কীভাবে যাবেন এই মন্দিরে? কাটোয়া থেকে কেতুগ্রাম হয়ে ফুটিসাঁকো যাওয়ার রাস্তা ধরে গেলে এই মন্দিরে পৌঁছে যাওয়া যায়। কাটোয়া থেকে এর দূরত্ব ২৩ কিলোমিটার। বাসে করে নিরোলে নামলে মন্দির যাওয়ার অটো অথবা টোটো পাওয়া যায়। আবার ট্রেনে গঙ্গাটিকুরি বা আমোদপুর স্টেশনে নামলেও নিরোল বাসস্ট্যান্ডে যাওয়া যায়। সেখান থেকে অটো বা টোটোয় চেপে মন্দিরে যাওয়া যেতে পারে। গঙ্গাটিকুরি থেকে নিরোল বাসস্ট্যান্ডের দূরত্ব সাত কিলোমিটার। রামপুরহাট প্যাসেঞ্জারে চেপে আমোদপুর নামলেও সেখান থেকে এই মন্দিরে যাওয়া যায়।