রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত জেলা মুর্শিদাবাদ। এখানেই রয়েছে ৪০০ বছরের পুরোনো এক শিবমন্দির। যে মন্দিরকে জাগ্রত বলে দাবি করেন হোসনে আরা বেগমের মত স্থানীয় মুসলিম বাসিন্দারাই। চারপাশে মুসলিম এলাকা। আর মুসলিম বাসিন্দারাই এই মন্দির তত্ত্বাবধান করেন। স্থানীয় মুসলিম জমিদার হাজি আরাম হোসেন, তাঁর জমির ওপরে তৈরি হয়েছে এই মন্দির। ওই জমিদার নিজে এই মন্দির তত্ত্বাবধান করতেন। তিনি মারা যাওয়ার পরে তাঁর ছেলেরা এই মন্দিরের দেখভাল করতেন।
এই মন্দির এখন স্থানীয় মুসলিম ব্লক সভাপতি দেখভাল করেন। কোনও সরকারি সাহায্য নয়। যা করেন নিজেদের পকেট থেকেই। এমনকী, পুজোতেও অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় মুসলিম বাসিন্দারাই। এমনকী এই মন্দিরে আসা ভক্তদেরও তাঁরাই দেখভাল করেন। তাঁরা চাইছেন, সরকার যাতে এই মন্দিরটিকে সাহায্য করে। যাতে এই মন্দির আরও ভালোভাবে পরিচালনা করা যায়। আরও বড় আকার দেওয়া যায় মন্দিরটিকে।
মুর্শিদাবাদের ভরতপুর বিধানসভা অঞ্চলে এই মন্দির। কাছাকাছি রেলস্টেশন বলতে সালার। সেখানে নেমে টোটো চেপে তিন কিলোমিটার গেলেই উজানিয়া-শিশুয়ায় পড়বে এই শিশুয়েশ্বর শিব মন্দির। এখানে শিবলিঙ্গ বৃদ্ধিচক্র শিশুয়েশ্বর শিব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কথিত আছে, আগে এখানে জঙ্গল ছিল। দূরে এক গ্রামের বাসিন্দা নফর পালের গোরু নিজে থেকেই এখানে এসে দুধ দিয়ে যেত। খোঁজ নিয়ে নফর পাল দেখতে পান, একটি ঢিপির ওপর পাথরে রোজ দুধ দিয়ে যায় ওই গোরু। কয়েকদিন লক্ষ্য করার পর তিনি দেখতে পান, পাথরটি ক্রমশ বাড়ছে।
আরও পড়ুন- নন্দীগ্রামের জাগ্রত মহারুদ্র সিদ্ধনাথ শিবঠাকুর জিউ মন্দির, মেলে শান্তি, পূরণ হয় মনস্কামনা
খবর যায় বর্ধমানের মহারাজার কাছে। তিনি এসে মন্দিরটি তৈরি করেন। কাটোয়া থেকে পুরোহিত এনে তিনি এই ম কিন্তু, সেই সময় বিপত্তি দেখা দেয় শিবলিঙ্গ ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায়। ভক্তদের দাবি, এরপর তাঁদের পূর্বপুরুষরা এই শিবলিঙ্গের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন, যাতে তা না বৃদ্ধি পায়। সেই প্রার্থনার পরদিনই নাকি দেখা যায়, শিবলিঙ্গটি তিনখণ্ড হয়ে গিয়েছে। মূলখণ্ডটির পাশে মন্দিরের মধ্যেই একটি খণ্ড রয়েছে। আর, বাকি একটা খণ্ড এখানে সেই সময় উজানে গঙ্গার জল আসত, তাতে ভেসে গিয়েছে। গঙ্গার জল উজানে আসত বলে এই স্থানের নাম উজানিয়া। ভক্তদের ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শিবলিঙ্গ এখানে অত্যন্ত জাগ্রত। এসে প্রার্থনা করলে, তা পূরণ হয়।