এই বাংলায় ছড়িয়ে আছে অজস্র মন্দির। তার মধ্যে অনেক মন্দিরই বেশ জাগ্রত। যেখানে গিয়ে প্রার্থনা জানানোয় মনস্কামনা পূরণ হয়। বহু সময়ই এমন কথা শোনা যায়। কোনও ভক্তের মনস্কামনা পূরণ হলে, সেই কথা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে। সময়ের স্রোতে সেই সব মন্দিরে সংস্কারের দরকার হয়। ভক্তরা তাঁদের সাধ্যমত অর্থ দিয়ে মন্দিরগুলোর সংস্কার করিয়ে নেন। তেমনই এক মন্দির রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানার ভবানীপুর ১ নম্বর অঞ্চলে পশ্চিম দরখোলা গ্রামে।
এখানে রয়েছে একটি ৪০০ বছরের পুরোনো শীতলা মন্দির। কথিত আছে ৪০০ বছর আগে এই গ্রামে এক মহামীর দেখা দিয়েছিল। গোটা গ্রামের প্রায় প্রতিঘরে যখন বসন্ত রোগে মৃত্যুমিছিল, সেই সময় পাঁচটি নরখুলির বা পঞ্চমুণ্ডর আসনের ওপর কেউ এই শীতলা দেবীর পাথরের মূর্তি অভিষিক্ত করে রেখে গিয়েছিলেন। এই স্থানে দেবীমূর্তিকে এভাবে দেখতে পেয়ে পুজো শুরু করেন গ্রামবাসীরা। তারপর থেকে পশ্চিম দরখোলা গ্রামে গত ৪০০ বছরে আর কোনও রোগভোগ ছড়ায়নি।
শুধু কি তাই? এই মন্দিরে রয়েছে দেবী মনসা এবং ভগবান পঞ্চানন্দের মূর্তিও। ভক্তদের দাবি, এখানে মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা জানালে তা অবশ্যই পূরণ হয়। আর, এখানকার বেলগাছ লম্বায় সাধারণ বেলগাছের চেয়ে অনেকটা উঁচু। সারাবছর এই বেলগাছে সবুজ পাতা ভরে থাকে। আচমকা কোথা থেকে যে এই বেলগাছ তৈরি হয়ে গেল, তা গ্রামবাসীদের কাছে আজও রহস্যের। এই বেলগাছের বেশ মোটা কাণ্ড। আলাদা করে বেলপাতা এই গাছ থেকে পারা যায় না। তবে, যে পাতাগুলো ঝরে পড়ে, তা দিয়েই মন্দিরের নিত্য পুজোর কাজকর্ম মিটে যায়। মন্দিরের বিশেষ উৎসবেও এই বেলগাছের পাতার সাহায্যেই হয় পুজোপাঠ।
আরও পড়ুন- শাস্ত্রমতে শনিদেবকে যত এই ফুল দেবেন, ততই ধন দেবেন গ্রহরাজ
জাগ্রত এই মন্দিরের নাম লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। পশ্চিম দরখোলা তো আছেই। আশপাশের গ্রাম এমনকী, দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা মনস্কামনা পূরণের জন্য, রোগ-ব্যধি দূর করতে এই মন্দিরে ভিড় করেন। বিশেষ উৎসবের দিন মন্দিরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে।