scorecardresearch

খাস কলকাতায় মহাজাগ্রত দেবী, ভক্তকে খালিহাতে ফেরান না শ্যামসুন্দরী

বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি নিয়মিত এই মন্দিরে যাতায়াত করেন।

Shyamsundari_Kali

এখানে দেবী যেন জীবন্ত। কথিত আছে, ভক্তকে খালি হাতে ফেরান না শ্যামসুন্দরী। তিনি নড়াচড়া করেন। ভক্তকে স্বপ্নাদেশ দেন। যখন যেটা মনে হয়, সেটাই করেন। ভক্তরা ধন্দে পড়ে যান, দেবী শ্যামসুন্দরীকে তাঁরা মহাজাগ্রত, নাকি জীবন্ত বলবেন? কোথায় এই মন্দির? খাস কলকাতায়। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে খুব কাছে এই মন্দির। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বাসে, হেঁটে বা অটোয় সুকিয়া স্ট্রিট। সেখানে রামমোহন হলের পিছনের বাড়িতে এই মন্দির। মহালয়ার পুণ্যলগ্নে দেবীর আবির্ভাব তিথি। ওই দিন দেবী প্রথম দর্শন দিয়েছিলেন।

ঠিক কতটা জাগ্রত দেবী শ্যামসুন্দরী? একটা কাহিনি এই মন্দির ঘিরে প্রচলিত আছে। তা হল, একবার দেবীর পুজোর জন্য পুরোহিত বাজার করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি লক্ষ্য করেছিলেন যে এক পাঁচ বছরের বালিকা গায়ে কালো রং, চোখে লাল রং মেখে দেবী কালীর মত সেজে সবার কাছে ভিক্ষা চাইছে। দেবী শ্যামসুন্দরীর পুরোহিতের কাছেও সেই বালিকা ভিক্ষে চেয়েছিল। বলেছিল যে, একটা টাকা দিতে। কারণ, সে দু’দিন ধরে কিছু খায়নি। কিন্তু, পুরোহিতের এসব ভালো লাগেনি। তিনি ওই বালিকাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলেন। পালটা বলেছিলেন, যা কাজ করে খা। জবাবে বালিকাটি বলেছিল, কাজ না-পেয়েই সে ভিক্ষে চাইছে।

এরপর ওই বালিকা চলে গিয়েছিল। আর, পুরোহিতও দেবীর পুজোর জন্য ফল, মিষ্টি, চাল, ডাল বাজার করে ফিরে এসেছিলেন। দেবীর ভোগের ব্যবস্থা হয়েছিল। প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়েছিল সেই দিন। কারণ, দিনটি ছিল মহালয়ার পুণ্যলগ্ন। এই মন্দিরের নিয়ম হল প্রতিটি অমাবস্যায় অন্ধকারে দেবীর পুজো হয়। শুধুমাত্র দ্বীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালীপুজোর রাতে দেবীর পুজো হয় আলো জ্বালিয়ে। সেই রাতেও অন্ধকারে দেবীর পুজো শুরু হয়েছিল। পুজো চলাকালীন পুরোহিত লক্ষ্য করেছিলেন যে মহাদেব শায়িত রয়েছেন। কিন্তু, তাঁর ওপর দেবী কালী নেই।

পুরোহিত প্রথমে ভেবেছিলেন, দেবীর রং কালো। তাই অন্ধকারে দেখা যাচ্ছে না। এরপরই পুরোহিত ঘিয়ের প্রদীপ দেবীর সামনে নিয়ে গিয়েছিলেন। পুরোহিত দেখতে পেয়েছিলেন, দেবী কালী সত্যিই নেই। মহাদেবও মৃত মানুষের মত শুয়ে আছেন। এই অস্বাভাবিক ব্যাপার দেখে পুরোহিত ভয় পেয়ে দু’পা পিছনে সরে এসেছিলেন। তাঁর গা ভয়ে শিউড়ে উঠেছিল। সেই সময়ই ছম ছম করে আওয়াজ হয়েছিল। পুরোহিত শব্দ শুনে বুঝতে পেরেছিলেন, কেউ যেন তাঁর পিছন থেকে হেঁটে আসছেন। সেই সময় একটি পা যেন মহাদেবের বুকে ধপ করে পড়েছিল। সেই অন্ধকারের মধ্যেই দেবীর মুখ খুলে জিহ্বা বেরিয়ে এসেছিল। দেবী মানুষের কণ্ঠে বলেছিলেন- দে, চাল-কলা খেতে দে। দিবি না আমায়?

আরও পড়ুন- কেন পালন করবেন অক্ষয় তৃতীয়া, জানেন এই বিশেষ দিনের মাহাত্ম্য?

এই দেখে পুরোহিত ভয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। অজ্ঞান অবস্থাতেই তিনি দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। দেবী জানিয়েছিলেন, তিনি শুধু ধনীর মা নন। তিনি গরিবেরও মা। তাই দেবীর জন্য যে যতই বিশেষ পুজো করুক না-কেন, কোনও ভক্ত একমুঠো আতপ চাল ও একটি পাকাকলা দিয়ে নিবেদন করলে, সেটাতেই দেবী সন্তুষ্ট থাকবেন। এরপর থেকেই দেখা গিয়েছে, যে ভক্তই দেবীকে চালকলা নিবেদন করেছেন, দেবী তাঁর মনস্কামনা পূরণ করেছেন। শুধু তাই নয়, দেবী শ্যামসুন্দরীর কিছু প্রয়োজন হলে, তিনি আশপাশের বিক্রেতাদের স্বপ্নাদেশ দেন। সেই বিক্রেতারা স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেই সব জিনিসপত্র দেবীকে এসে নিবেদন করে যান। কঠিন ব্যাধি থেকে জটিল সমস্যা। ভক্তদের দাবি, সব কিছুই দেবী শ্যামসুন্দরী কৃপা করে অবলীলায় মেটান।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Lifestyle news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Famous shyamasundari kali in sukiya street