Advertisment

দুর্গাবন্দনা শেষ হতেই দেবী হুগলির শিয়াখালায়, আজ জাগ্রত উত্তরবাহিনীর পুজো

দেবী মনস্কামনা পূরণ করেন। তাই দূর-দূরান্ত থেকে এই মন্দিরে ছুটে আসেন ভক্তরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
devi uttarbahini raw

দুর্গাপুজো শেষের পরই এবার দেবী ধরা দিতে চলেছেন উত্তরবাহিনী রূপে। বুধবারই শেষ হয়েছে দুর্গাপুজো। রাজ্যের সব মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন অবশ্য এখনও হয়নি। কিন্তু, পঞ্জিকা অনুযায়ী, দুর্গা পুজো শেষ হয়ে গিয়েছে। সেইমতো চলছে প্রতিমা নিরঞ্জন। তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার হুগলির শিয়াখালায় দেবী উত্তরবাহিনীর পূজা। কে এই দেবী উত্তরবাহিনী?

Advertisment

তিনি আসলে দেবী চণ্ডীর এক লৌকিক রূপ। তাঁর মন্দিরটি বর্ধমানের মহারাজা প্রায় ৫০০ বছর আগে বানিয়ে দিয়েছিলেন। হুগলি জেলায় শিয়াখালার এটিই প্রাচীনতম মন্দির। শিয়াখালা খুব একটা নামী জায়গা না-হলেও দেবী উত্তরবাহিনীর খ্যাতি কিন্তু ভারতজোড়া। প্রায় সাত ফুট উঁচু দেবীমূর্তি। বাংলার কোনও লৌকিক দেবতার এত বড় মূর্তি বিরলই বলা যায়। তবে, উচ্চতার জন্যই শুধু নয়।

ভক্তদের বিশ্বাস দেবী উত্তরবাহিনীর পুজোয় উপস্থিত থেকে তাঁর কাছে মানত করলে, সেই প্রার্থনা অবশ্যই পূরণ হয়। আর, সেজন্যই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা দেবী উত্তরবাহিনীর পুজো উপলক্ষে শিয়াখালায় ছুটে আসেন। এই খ্যাতি অবশ্য নতুন নয়। মঙ্গল কাব্যেও কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম লিখেছেন, 'বর্ধমানে বন্দী গাবো সর্বমঙ্গলা, উত্তরবাহিনী বন্দো গ্রাম শিয়াখালা।'

পাঁচিলঘেরা দেবী উত্তরবাহিনীর মন্দির প্রাঙ্গণ। তার মাঝখানে নাটমন্দির। সামনে সিঁড়ি উঠে গেছে। দেবীর মন্দির রয়েছে গর্ভগৃহে। পাথরের তৈরি দেবীর অপরূপ মূর্তি। শায়িত ভোলানাথের ওপর দন্ডায়মানা, অগ্নিবর্ণা, দ্বিভুজা বিশালাক্ষী দেবী। তিনি ত্রিনয়না, গলায় মুণ্ডমালা। দেবীর ডানহাতে খড়্গ, বামহাতের তালুতে রক্তের পাত্র। রক্তাম্বর পরিহিতা, মুকুট শোভিতা, অসুর নাশিনী দেবী। তাঁর বিরাট কেশ। দেবী অপরূপা, রণরঙ্গিনী। তাঁর দক্ষিণ চরণ ভোলানাথের বুকের ওপর। আর বামচরণ বটুক ভৈরবের মাথায় রাখা। শিবের বুকের ওপর ঝুলছে এক অসুরের কাটামুণ্ড।

আরও পড়ুন- দুর্গার বিসর্জনের পরই হয় আরেক পুজো, কে দেবী অপরাজিতা, কী তাঁর মাহাত্ম্য

দেবী উত্তরবাহিনী ভক্তদের কাছে বিশালাক্ষী নামেও পরিচিত। প্রতি আশ্বিনে শুক্লপক্ষের একাদশীতে দেবীর মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত পুরাতন ঘট বিসর্জন দিয়ে নতুন ঘট স্থাপিত হয়। একে বলে বিশালাক্ষীর জাত। রাজেন্দ্রনাথ বংশীয় শান্ডিল্য গোত্রীয় ভট্টনারায়ণ বংশের পুরোহিতরাই প্রতিষ্ঠিত পুরাতন ঘট বিসর্জন দিয়ে নতুন ঘট স্থাপন করেন। এই উৎসব প্রায় চারশো বছরের প্রাচীন।

এই উৎসব উপলক্ষে বিশালাক্ষী দেবীর বিশেষ পূজা ও বলি-সহ 'বন্ধানী' অনুষ্ঠান পর্ব চলে। এই উৎসবের দিন অগণিত দর্শনার্থী ভিড় করেন উত্তরবাহিনী মন্দিরে। এখানে দর্শনার্থীদের দেবীর প্রসাদ বিতরণ করা হয়। ভক্তিমূলক গানের আসরও আয়োজন করা হয় এই বিশেষ দিনে।

Hooghly Durga Puja durga
Advertisment