দেখলে ভাববেন, নানা কথা বুঝিয়ে আপনাকে আসলে অতিপরিচিত দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দিরে নিয়ে আসা হয়েছে। আশেপাশের পরিবেশ দেখে সেই ভুল ভাঙলেও মনে হবে, আপনি বোধহয় পৌঁছে গিয়েছেন ব্যারাকপুরে। যেখানে রানি রাসমণির মেয়ে জগদম্বা হুবহু দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দিরের আদলে অন্নপূর্ণা মন্দির তৈরি করেছেন। কিন্তু, না। এই মন্দির দক্ষিণেশ্বরেও নয়। ব্যারাকপুরে না। এই মন্দির ওই দুই অঞ্চল থেকে বেশ কিছুটা দূরে বনগাঁর গাড়াপোতা অঞ্চলের। নাম সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির। বনগাঁ শহর থেকেও যার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার।
ভক্তদের বিশ্বাস এই মন্দিরের দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। দেবীর কাছে কোনও প্রার্থনা করা হলে, তা অচিরেই পূর্ণ হয়। মন্দিরের পরিবেশটাও বেশ সুন্দর। একেবারে গ্রামের পরিবেশ। পাশেই খেত। যেখানে চাষ হয় বছরভর। সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের প্রায় মুখোমুখি রয়েছে শিব মন্দির। এই শিব মন্দির আবার তৈরি হয়েছে তারকেশ্বরের শিব মন্দিরের আদলে। নাম সিদ্ধেশ্বর শিব মন্দির। শিব মন্দিরের ঠিক পাশ দিয়ে কোনও একসময় বয়ে গিয়েছিল ইছামতী। এখন ইছামতী গতিপথ পরিবর্তন করায় তৈরি বাওর এখানে রয়ে গিয়েছে।
এখানে প্রতিদিন দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। দূর থেকে ভক্তরা কেউ এলে তাঁরাও প্রসাদ পেয়ে থাকেন। সেজন্য অবশ্য কোনও কুপনের ব্যবস্থা নেই। এই মন্দিরে আসতে গেলে ধরতে হবে বনগাঁ লোকাল। বনগাঁ স্টেশনে নেমে সেখান থেকে টোটোয় চেপে আসতে হবে মতিগঞ্জ মোড়। অটো বা বাসে চেপে নামতে হবে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির স্টপেজে। জায়গাটা বাগদা-বনগাঁ রোডের দিকে।
আরও পড়ুন- জাগ্রত দেবী অভীষ্টদায়িনী, তন্ত্রে অভিষিক্তা অকালিপুরের গুহ্যকালী
মন্দির কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, আগে এই মন্দির এত সুন্দর ছিল না। প্রাচীন ও জাগ্রত হলেও এটা ছিল ছোট একটি মন্দির। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দা ও ভক্তরা চাঁদা তুলে এই মন্দিরকে দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দিরের রূপ দিয়েছেন। মন্দিরের ভিতরটাও অপরূপ সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। শুধু কালী মন্দিরই নয়। এখানকার শিব মন্দিরটিকেও একই কায়দায় সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।