শরীরে রোগ হওয়ার কোনও বয়স নেই। আর তা যদি হয় মাইগ্রেন ও স্পন্ডিলাইটিস তাহলে আর দেখে কে? মহামারীর আবহে সারাদিন বাড়িতে বসেই দিন কাটছে। কম্পিউটার আর মুঠোফোনেই সীমাবদ্ধ জীবনযাত্রা। একনাগাড়ে ঘাড়-মাথা নিচু করে বসে থাকতে থাকতেই এই সমস্যার সূত্রপাত। যেকোনও বয়সেই হতে পারে এই সমস্যা। অনেকের আবার জেনেটিক্স থেকেও আসতে পারে। অসহ্য যন্ত্রণা সঙ্গে মাথা ভার এবং জ্বালা অনুভূত হওয়া এর লক্ষনের মধ্যেই পড়ে। সবথেকে অবাক করার বিষয় হল, আবহাওয়ার পরিবর্তন থেকেও মাইগ্রেন ক্রমশই বাড়তে পারে। ঠান্ডা-গরম লেগেও কিন্তু এটি মারাত্মক আকার নিতে পারে। তবে এর থেকে রেহাইয়ের উপায়?
অনেকেই হোমিওপ্যাথি ওষুধ এমনকি চিকিৎসা শাস্ত্রের সাহায্য নেন বটে, তবে এটি খুবই সাময়িক আরাম দেয়। বেশিরভাগ সময় চিকিৎসকরা বলেন ব্যায়ামের মাধ্যমেও এর উপশম সম্ভব। অবশ্যই তা সঠিক, কিন্তু ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি এর থেকে আরাম দিতে কার্যকরী! সেগুলি কী কী?
মাইগ্রেনে আরাম দেবে যেগুলি
- তালুপ্রেসার: হাতের তালুতে আঙ্গুল দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ মাসাজ করুন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে সহজেই মাইগ্রেন থেকে আরাম পাওয়া যায়। একে আকুপ্রেসার বলা হয়ে থাকে।
- আদা: মাইগ্রেন কমাতে আদা বেশ কার্যকরী, আদা কুচি এমনকি আদা ঈষৎ উষ্ণ জলে মিশিয়ে সেটাও খাওয়া যায়, দুই-ই আরাম দিতে সক্ষম ।
- ল্যাভেন্ডার অয়েল: ল্যাভেন্ডার অয়েলের মধ্যে ব্যথা কম করার মাইক্রবস বর্তমান থাকে, তাই ব্যথার স্থানে ১০ মিনিট মতো মাসাজ করলে সেই থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
- কোল্ড কম্প্রেস: ব্যথার স্থানে, ঠান্ডা জল বা বরফ দিয়ে সেঁক দিলে, আরাম পাওয়া সম্ভব । প্রায় ১৫ মিনিট মতো শীতল সেঁক বেশ আরাম দেয়।
- ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার: খাবারে ম্যাগনেসিয়াম যেকোনও রকম ব্যথা তথা মাইগ্রেন, বাত এসবে বেশ কার্যকরী। ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বাড়িয়ে ব্যথা কম করে। মূলত ডিম, কাজু, দুধ, পিনাট বাটার ইত্যাদি খেলেই উপকার পাবেন।
এত গেল মাইগ্রেন, স্পন্ডিলাইটিসের ব্যথাও কিন্তু মানুষকে ভীষণ কষ্ট দেয়। তাই এর থেকে রেহাই খোঁজেন অনেকেই। যে নিয়মগুলি মানলে আরাম পাবেন
ব্যায়াম অবশ্যই করা উচিত। যেগুলি নিয়মিত অভ্যাস করবেন তার মধ্যে,
১) মাথার পেছনে হাত দিয়ে চেপে রাখুন। আস্তে আস্তে সামনের দিকে ঠেলুন। ১০ গুনুন, ছেড়ে দিন পুনরায় আবার করুন।
২) থুতনি দিয়ে গলার কাছে বেশ কিছুক্ষণ ধরে রাখুন, ১০ গুনে আবার মুখ তুলে নিন।
৩) মাথার এক পাশে হাত দিয়ে অন্যদিকে কাত করে ১০ গুনতে হবে, ফের অন্যদিকে একই পদ্ধতিতে আবার করুন।
৪) অনুলোম বিলোম করতে পারেন।
৫) কপালভাতি আরাম দেবে। এছাড়াও,
নিম জলের সেঁক দিয়ে এই ব্যথার উপশম পাওয়া যায়। নিমের মধ্যে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বেশি থাকায় এটি দারুণ কাজ দেয়।
আরও পড়ুন যোগসাধনা নিয়মিত রাখবে হরমোনাল স্বাস্থ্যকে, জেনে নিন
সারাদিনে বেশ কিছুক্ষণ হাটতে হবে। বেশ কিছু ফ্রি হ্যান্ডস, পুশআপ করা উচিত। এক জায়গায় বসে থাকলে ব্যথা ফিরে আসার এবং বাড়ার লক্ষণ বেশি। শারীরিক সচলতা বজায় রাখুন।
ঘুমানোর সময় যদি সম্ভব হয়, বালিশ ছাড়াই শোয়া অভ্যাস করুন। ঘাড় এবং মাথা যেন দেহের সঙ্গে সমান লেভেলে থাকে। পাশ ফিরে শোয়া সবথেকে ভাল। ঘুম থেকে ওঠার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না, আসতে ধীরে উঠুন।
গরম জলে স্নান করা উচিত। জল একটু হালকা হলেও গরম করে নেবেন। চেষ্টা করবেন শাওয়ারের জল এড়িয়ে যেতে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন